ইস্তানবুল: ‘মনে হচ্ছিল কোনও দোলনায় প্রচণ্ডভাবে দুলছি। বাড়িতে তখন আমরা ৯ জন। আমার দুই ছেলের এখনও কোনও খোঁজ নেই। ওই ভাঙা বাড়ির নীচে তাদের খোঁজ চলছে। এখানে বসে ওদের অপেক্ষায় আছি।’ ভূমিকম্পে একটা হাত ভেঙেছে। মুখে অসংখ্য ক্ষত। ধ্বংসস্তূপের পাশেই অ্যাম্বুল্যান্সে বসিয়ে চিকিৎসা চলছে। কথা বলার মতো অবস্থায় না থাকলেও দুই ছেলের জন্য ভাঙা ভাঙা শব্দে কথাগুলি বলছিলেন মহিলা। দক্ষিণ-পূর্ব দিয়রবকির এলাকার সাত তলা বাড়ির একটি ফ্লোরে থাকতেন তিনি। গোটা বাড়িটি এখন রাস্তার উপর শুয়ে আছে।
এর্দেম নামে ব্যক্তি বললেন, গত ৪০ বছরে আমি এরকম কিছু দেখিনি। ভয়াবহ, অবিশ্বাস্য। এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না, সব কেমন করে ধুলোর মতো ধসে পড়ল। একবার নয়, অন্তত তিনবার গোটা শহরটা মনে হল ঝাঁকুনি দিয়ে উঠল।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: ডিলিট পেলেন মমতা, এবার সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়
সোমবার ভোরে তুরস্ক ও সিরিয়া সীমান্তে প্রবল ভূমিকম্পে ৬৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে। বেশ কয়েকটা শহর একেবারে ধুলোয় মিশে গিয়েছে বলা যায়। এই পরিস্থিতিতে আমেরিকা তুরস্ক ও সিরিয়ার দিকে সাহায্যের হাত বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান জানান, তুরস্ক প্রশাসনের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি। সমস্ত রকম সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
রিখটার স্কেলে ভূকম্পের তীব্রতা ছিল ৭.৮। দক্ষিণ তুরস্কের প্রাদেশিক গভর্নর সোমবার জানিয়েছেন, ভয়ঙ্কর কাঁপুনিতে নড়ে ওঠে গোটা এলাকা। হুড়মুড়িয়ে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে ঘরবাড়ি। আজ, সোমবার ভোর সওয়া ৪টে নাগাদ ভূমিকম্প হয়। ভূস্তরের ১৭.৯ কিমি গভীরে ছিল ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল।
প্রথম ভূমিকম্পের মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে ফের আফটার শকে কেঁপে ওঠে। যার তীব্রতা ৬.৭। অধিকৃত সিরিয়ার সীমান্ত অঞ্চলে এই ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল। বেশ কয়েকটি শহরের বহুতলগুলি ঝুরঝুর করে ধসে পড়ে মাটিতে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তখন রাতের গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলেন নাগরিকরা। তাই প্রবল ভূমিকম্পে কেউ পালানোর বা নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার সুযোগটুকু পাননি।