কলকাতা: উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হলেই পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘন্ট ঘোষণা করতে পারে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। পঞ্চায়েত ভোটের আগেই জেলায় জেলায় সংগঠনকে আরও মজবুত করার লক্ষ্যে ঘুঁটি সাজাতে শুরু করেছে তৃণমূল। নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, পঞ্চায়েত ভোটের টিকিট তিনি নিজেই দেবেন। জেলায় জেলায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, নিয়োগ দুর্নীতি, গরু পাচার নিয়ে এমনিতেই জেরবার শাসকদল। তার উপর পঞ্চায়েতে দুর্নীতি, ১০০দিনের কাজ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা নিয়েও যথেষ্ঠ বিব্রত তৃণমূল। এই অবস্থায় জেলার নেতাদের পঞ্চায়েতে টিকিট বিলির দায়িত্ব ছাড়তে নারাজ নেত্রী। এপ্রিল মাসের গোড়া থেকেই তিনি জেলা সফর শুরু করবেন। একই সঙ্গে পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে ঝাঁপাবেন দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee | কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে টানা দু’দিন ধরনায় বসছেন মমতা
তৃণমূল সূত্রে খবর,পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতিতে কোনও রকমের ফাঁক রাখতে চাইছেন না দলনেত্রী। শুক্রবার কালীঘাটের দলীয় বৈঠকে নেত্রী ঘোষণা করেছেন, প্রতি সপ্তাহের শুক্রবার জেলা ভিত্তিক বৈঠকে বসা হবে। কলকাতায় ওই বৈঠকে প্রয়োজনমতো বিভিন্ন জেলা নেতৃত্বকে ডেকে নেওয়া হবে। কোনও কোনও বৈঠকে নেত্রী নিজেও উপস্থিত থাকবেন।
শুক্রবারের সাপ্তাহিক বৈঠকে জেলার বুথস্তরের সংগঠন নিয়ে পর্যালোচনা করা হবে। কোথায় খামতি থাকছে দলের কিংবা সেই এলাকায় বিরোধীরা কতটা শক্তিশালী, এসব জানতে চাইবেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রে খবর, কোন কোন জেলায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সমস্যা সৃষ্টি করছে, সেই জেলাগুলিকে চিহ্নিত করে তার জন্য আলাদা করে রিপোর্ট তৈরি করা হবে। সেই সব জেলার দায়িত্বে থাকবেন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরো এপ্রিল মাস জুড়েই জেলায় জেলায় পঞ্চায়েত ভোটের প্রচার করবেন দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড। একনজরে দেখে নেওয়া যাক কোথায় কবে সভা করছেন অভিষেক।
তারিখ জেলা
৮ এপ্রিল আলিপুরদুয়ার
১২ এপ্রিল বাঁকুড়া
১৭ এপ্রিল পূর্ব-বর্ধমান
২০ এপ্রিল উত্তর দিনাজপুর
২৯ এপ্রিল আরামবাগ
লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ারে বিজেপি বেশ ভালো ফল করেছিল। স্থানীয় সাংসদ জন বার্লা একাধিকবার পৃথক রাজ্যের দাবিতে সরব হয়েছেন। বাংলা ভাগের ইস্যুতে এর আগেও বহুবার তপ্ত হতে দেখা গিয়েছে উত্তরবঙ্গকে। এর আগে আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারে সভা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী একাধিকবার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি বাংলা ভাগ করতে দেবেন না। পঞ্চায়েত ভোটের আগে আলিপুরদুয়ারে সংগঠন তৈরিতে বেশি গুরুত্ব দিতে চাইছে ঘাস-ফুল শিবির।
এদিকে কোচবিহারেও গোষ্ঠাকোন্দল নিয়ে তৃণমূল বেশ বিব্রত। পঞ্চায়েত ভোটের আগে অন্যান্য জেলার জন্য পর্যবেক্ষকের নাম ঘোষণা করা হলেও, কোচবিহারের জন্য কোনও পর্যবেক্ষক রাখা হয়নি। দলের অন্দরের খবর, উদয়ন গুহ, পার্থপ্রতিম রায় এবং রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এবং জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিককে সমন্বয়ে করে জেলা দেখভাল করতে বলা হয়েছে কালীঘাটের বৈঠকে। তা নিয়ে জেলায় নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে নতুন করে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। সব মিলিয়ে উত্তরবঙ্গ নিয়ে বিশেষ চিন্তিত তৃণমূল নেতৃত্ব।