কলকাতা: এই প্রথম দু’দিনের রাজ্য সফরে আসছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু (Droupadi Murmu)। নবান্ন সূত্রে খবর, ২৭ মার্চ সকালে রাষ্ট্রপতি কলকাতায় এসে পৌঁছাবেন। ওই দিন বিকেলেই রাজ্য সরকারের তরফে তাঁকে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়ার কথা রয়েছে। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এই সংবর্ধনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
ওইদিন সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আগে রাষ্ট্রপতি ভবনে যাওয়ার কথা রয়েছে দ্রৌপদী মুর্মুর।। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর বাসস্থান নেতাজি ভবনেও দর্শনে যাবেন তিনি। সেখান থেকে তিনি যাবেন জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে, সেখানে ঘুরে দেখবেন তিনি। এরপর তাঁর একটি ব্যাঙ্কের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। পরদিন ২৮ মার্চ সকালে তিনি বেলুড়মঠেও যাবেন তিনি। তারপর তাঁর যাওয়ার কথা রয়েছে শান্তিনিকেতন। সেখানে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তিনি যোগ দেবেন বলে জানা গিযেছে। শান্তিনিকেতন থেকেই তাঁর দিল্লি ফিরে যাওয়ার কথা রযেছে।
আরও পড়ুন: Anubrata-ED | হাজিরা এড়িয়ে ঠিক করলেন কেষ্টকন্যা? আরও এক ডজন ‘সখা’কে তলবের ইঙ্গিত
প্রসঙ্গত, দ্রৌপদী মুর্মু দেশের প্রথম আদিবাসী রাষ্ট্রপতি। ঘটনাচক্রে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তাঁর বিরুদ্ধে যে বিরোধী প্রার্থী ছিলেন সেই উদ্যোগে প্রথম সারিতেই ছিলেন মমতা। সেই বিরোধী প্রার্থী ছিলেন দেশের প্রাক্তন মন্ত্রী যশোবন্ত সিন্হা। তিনি তখন ছিলেন তৃণমূলের সদস্য। তবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে নাম ঘোষণার পরে যশোবন্ত তৃণমূল থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। প্রত্যাশিতভাবেই তিনি বিজেপি তথা এনডিএ প্রার্থীর কাছে হেরে যান। সেই সময রাজনৈতিক মহল মনে করেছিল, দ্রৌপদীকে রাষ্ট্রপতি করে দেশের আদিবাসী সমাজের ভোট নিজেদের দিকে টানতে চেযেছিল বিজেপি। তাদের সেই মাস্ট্রারস্ট্রোক বিরোধী শিবিরকে বেকায়দায় ফেলে দিয়েছিল।
দ্রৌপদীর নাম ঘোষণা হওয়ার পর মমতা বলেছিলেন, আগে বিজেপি তথা এনডিএ দ্রৌপদীর নাম নিয়ে তাঁদের সঙ্গে বা তাঁর সঙ্গে আলোচনা করলে তিনি আদিবাসী প্রার্থীকেই সমর্থন করতেন। অনেকেই মনে করছেন, সেই কারণেই মমতা স্বয়ং উদ্যোগী হয়ে দ্রৌপদীকে নাগরিক সংবর্ধনা দিতে উদ্যোগী হয়েছেন। তাঁরা আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের কথাও মাথায় রাখছেন। সাগরদিঘি-উত্তর পর্বে মুসলিম ভোট নিয়ে উদ্বিগ্ন মমতা। সেই প্রেক্ষিতে দ্রৌপদীর নাগরিক সংবর্ধনার মাধ্যমে আদিবাসীদের তাঁর বার্তা দেওয়ার জল্পনা খুব অমূলক না-ও হতে পারে। তবে পাশাপাশিই অনেকে বলছেন, দেশের প্রথম আদিবাসী রাষ্ট্রপতি রাজ্যে এলে তাঁকে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়াটা রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রী সহবত এবং দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। মমতা সেই সৌজন্য, শ্রদ্ধা এবং সহবত থেকেই ওই সংবর্ধনার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছেন।