অতিমারির দুঃসময় কাটিয়ে এবার পুরনো মেজাজে বাঙালির সবথেকে বড় উৎসব। আর তার সমাপ্তি ঘটছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য্যায়ের সাধের কার্নিভাল (Carnival) দিয়ে। এ বছর ইউনেস্কোর মান্যতায় দুর্গোৎসব (Durga Puja) হয়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক যা বাড়তি আনন্দের। শনিবার (৮ অক্টোবর) রেড রোডের কার্নিভালে অংশ নিয়েছে বাংলার ৯৪টি পুজো কমিটি। তাদের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা তো রয়েছেই, সঙ্গে জমজমাট সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কখনও রবীন্দ্রসঙ্গীত, কখনও লোকগানের সুরে-ছন্দে পা মেলালেন শিল্পীরা। করোনার গ্রাসে দু’ বছর কার্নিভাল বন্ধ থাকার ক্ষতিটা যেন শনিবার বিকেলে সুদে-আসলে উসুল হয়ে গেল।
আরও পড়ুন: রেড রোডে বেপরোয়া ট্যাক্সির ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত ট্যাবলো
এই কার্নিভাল দেখতে উপস্থিত হয়েছেন প্রধান অতিথি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়াও মঞ্চে দেখা গেল অন্যান্য হেভিওয়েট মন্ত্রী এবং আমলাদের। রয়েছেন বিদেশের অতিথি অভ্যাগতরা। উপস্থিত হয়েছে ইউনেস্কোর প্রতিনিধি দলও। দুর্গাপুজো কত বড় উৎসব সেই সামগ্রিক চিত্রটা তাঁদের সবার কাছেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রীর লেখা এবং সুর করা গান উৎসবকে অন্য মাত্রা দিল। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও কখনও মঞ্চ থেকে নেমে আদিবাসী মহিলাদের সঙ্গে নাচে পা মেলান, আবার কখনও কোনও পুজো কমিটির ট্যাবলো যাওয়ার সময় কাঁসর বাজান। এক সময়ে তাকে বাচ্চাদের হাতে চকোলেট এবং গোলাপ ফুলও তুলে দিতে দেখা গেল। সব মিলিয়ে তিনি চিলেন দারুণ খুশির মুডে। খুশি বিদেশি প্রতিনিধিরাও।
রেড রোডের কার্নিভালের জন্য নির্মিত হয়েছে চারটি মঞ্চ। একটিতে রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যেরা। আর একটি মঞ্চে রয়েছেন রাজ্যপাল। তৃতীয় মঞ্চ অভিনেতা-অভিনেত্রীদের জন্য। আর একটি বরাদ্দ বিদেশের অতিথিদের জন্য। সাধারণ দর্শকদের বসার আলাদা ব্যবস্থা। বাংলার সেরা ১০০টি প্রায় পুজোকে একসঙ্গে চাক্ষুষ করার এর থেকে বড় সুযোগ আর নেই। যাঁরা পুজোর চারদিন ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছেন, তাঁদের পক্ষেও সমস্ত মণ্ডপ এবং প্রতিমা দেখে ফেলা অসম্ভব। আর কিছু মানুষ আছেন যাঁরা রাস্তায় নেমে ঠাকুর দেখার পরিশ্রমটাই করতে নারাজ। এই দুই ধরনের মানুষরাই শনিবার রেড রোডে ভিড় জমিয়েছেন। ঠাকুর দেখা তো আছেই, বাড়তি পাওনা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আবহাওয়া অফিস বৃষ্টির পূর্বাভাস দিলেও সে সব নিয়ে কেউ মাথা ঘামাচ্ছেন না। আপাতত কার্নিভালের সবটুকু চেটেপুটে নেওয়া। তারপর অপেক্ষা একটি বছরের।