কীভ: ইউক্রেনের চারটি অধিকৃত প্রদেশকে পুরোপুরি নিজেদের দখলে আনতে সংযুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাশিয়া,তার জন্য গত শুক্রবার থেকেই গণভোটের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। রাশিয়ার এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে চারিদিকে তীব্র নিন্দার ঝড় যেমন বইছে, তেমনই ইউক্রেন এবং পশ্চিমী দেশগুলির এই গণভোটকে ধোকাবাজি হিসেবে আখ্যা দিয়ে একে স্বীকৃতি না দেওয়ার আর্জি জানাচ্ছে।
ইউক্রেনের সরাসরি অভিযোগ,গণভোটের নামে চার অধিকৃত প্রদেশ লুহানস্ক,দনেৎস্ক,খেরসন এবং জাপোরিঝঝিয়াতে বসবাসকারী বাসিন্দাদের উপর জোরজবরদস্তি করছে রাশিয়া। ভোট না মেটা পর্যন্ত বাড়ি থেকে কাউকে বেরতেই দেওয়া হচ্ছে না। বাড়ি বাড়ি সশস্ত্র সেনাদল গিয়ে কর্মীদের হুমকি দিচ্ছে গণভোটে অংশ না নিলে বরখাস্ত করা হবে।
রাশিয়া-অধিকৃত অঞ্চলের ইউক্রেনীয় নাগরিকদের উদ্দেশে জেলেনেস্কির বার্তা, “যেভাবেই হোক রাশিয়ার সেনা অভিযানের হাত থেকে নিজেকে লুকিয়ে রাখুন। খসড়া নির্দেশ এড়িয়ে চলুন।” রাশিয়ার সশস্ত্র সেনার কবলে পড়া ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে তিনি কূট-অন্তর্ঘাত, হস্তক্ষেপ এবং গোপন তথ্য ইউক্রেনের হাতে তুলে দেওয়ার বার্তাও দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, পূর্ব ও দক্ষিণপূর্ব মিলিয়ে যে চারটি প্রদেশে গণভোট হওয়ার কথা, তা রাশিয়ার হাতে আসা মানে ইউক্রেনের ১৫ শতাংশ অঞ্চলের রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্তি। শুক্রবার ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলদিমির জেলেনেস্কি তাঁর নৈশকালীন বার্তায় বলেন, ক্রিমিয়া এবং রাশিয়া-অধিকৃত ইউক্রেনের অঞ্চলে সে দেশের সেনা মোতায়েন সহ এই গণভোটের দ্ব্যর্থহীনভাবে নিন্দা করবে সারা বিশ্ব। তিনি বলেন, “এটা শুধু আন্তর্জাতিক আইন এবং ইউক্রেনের আইনের বিরুদ্ধে অপরাধ নয়, বরং এটা একটি নির্দিষ্ট জনগণ, নির্দিষ্ট একটি দেশের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড।”
চলতি মাসের শুরুর দিকে রাশিয়াকে পাল্টা আক্রমণ করে উত্তর-পূর্বাঞ্চল পুনরায় নিজের দখলে নেয় ইউক্রেন, তারপরই রাশিয়া এই গণভোটের কৌশল শুরু করে। সম্প্রতি রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন এক সামরিক খসড়ায় জানিয়েছেন, ইউক্রেনে লড়াই করার জন্য তিন লক্ষ সেনা পাঠানো হয়েছে। বলাবাহুল্য, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া যে আগ্রাসন শুরু করেছিল, তা অব্যাহত রাখতেই হাতছাড়া হওয়া অঞ্চল ফের দখলে আনতে মরিয়া পুতিনের দেশ। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া এই গণভোট প্রক্রিয়া শেষ হবে আগামী মঙ্গলবার।