কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের ইস্তফার পর আগামিকাল, শনিবার বসছে পার্লামেন্টের বিশেষ অধিবেশন। আগামী ২০ জুলাই প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে। প্রেসিডেন্টের ইস্তফার কথা সরকারিভাবে ঘোষণা করেছেন পার্লামেন্টের স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেবর্ধনে। স্পিকার জনতার কাছে আবেদন জানিয়েছেন দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য। তিনি জানিয়েছেন, আগামী ৭ দিনের মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে। তার মধ্যে দেশের এমপিদের নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আবেদন করেছেন।
পার্লামেন্টের বিশেষ অধিবেশনে ২২৫ জন সদস্য নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবেন।
কিন্তু, কে হতে চলেছেন পরবর্তী প্রেসিডেন্ট? এই ইঁদুরদৌড়ে রয়েছেন— ৬ বারের প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিঙ্ঘে, অন্যদিকে প্রধান বিরোধী দলনেতা সাজিথ প্রেমদাস। তৃতীয় ব্যক্তিটি হলেন ডুলাস আলাহাপ্পেরুমা। এই দৌড়ের একেবারে ‘কালো ঘোড়া’ তিনি। দেশের সংবিধান অনুযায়ী পার্লামেন্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেলেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে পারবেন। যদিও এবারের ক্ষেত্রে বিষয়টি অনেক আলাদা। কারণ, পার্লামেন্টের ভিতরে ছাড়াও জনগণের আস্থা অর্জনকারী ব্যক্তিই ওই পদে বসতে পারবেন বলে মনে করা হচ্ছে। লক্ষ লক্ষ লঙ্কাবাসীর গণ-আন্দোলন ‘আরাগালয়া’, যার অর্থ সংগ্রাম, সেই লড়াইয়ের সাফল্য নির্ভর করছে প্রেসিডেন্ট ভোটের উপর। কারণ এই গণ-অভ্যুত্থানের ফলেই দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে রাজাপক্ষেকে।
গত মে মাসে রনিল বিক্রমসিঙ্ঘে ষষ্ঠবারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। কিন্তু পার্লামেন্টে তাঁর সদস্য মাত্র একজন। দেশের শাসকদল শ্রীলঙ্কা পদুজানা পেরামুনা (SLPP) তাঁকে সমর্থন দেবে। প্রেসিডেন্টের ভাই বাসিল রাজাপক্ষে এখন এই দলের নেতা। কিন্তু, সমস্যা হচ্ছে গণ-আন্দোলনকারী জনতার কাছে বিক্রমসিঙ্ঘের কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। চলতি সপ্তাহেই ৭৩ বছর বয়সি এই নেতার বাড়ি ও কার্যালয়ের দখল নিয়েছিল বিক্ষোভকারীরা।
আরও পড়ুন: Rishi Sunak: ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের দৌড়ে আরও একধাপ এগোলেন ঋষি সুনক
৫৫ বছর বয়সি সাজিথ হলেন প্রধান বিরোধী দল সামাগি জন বালাওয়েগায়া (SJB) পার্টির নেতা। কিন্তু তাঁদের দলের মাত্র ৫০ জন এমপি রয়েছেন। তাঁকে জিততে হলে সর্বসম্মত প্রার্থী হিসেবে সমর্থন পেতে হবে। লন্ডন স্কুল অব স্টাডিজে পড়া প্রেমদাস পরে রাজনীতিতে আসেন। ১৯৯৩ সালে এলটিটিই’র আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় তাঁর বাবা তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রণসিঙ্ঘে প্রেমদাসের। সাজিথ পার্লামেন্টে পা রাখেন ২০০০ সালে। তিনি দেশের উপ স্বাস্থমন্ত্রী হন। ২০১৮ সালে তাঁকে আবাসন ও সংস্কৃতি মন্ত্রীও করা হয়।
এসএলপিপি’র ডুলাস আলাহাপ্পেরুমাও এই তালিকায় রয়েছেন। দলের অনেকেই তাঁকে প্রেসিডেন্ট করার চেষ্টা করছেন। ৬৩ বছর বয়সি ডুলাস আলাহাপ্পেরুমা আগে সাংবাদিক ছিলেন। তাঁর শাসকদলের হাতে ১১৭টি ভোট। ফলে সেই সমর্থন পেলে তিনিও হয়ে যেতে পারেন দেশের প্রেসিডেন্ট।