উত্তর দিনাজপুর: কালিয়াগঞ্জের (Kaliagunje) ঘটনায় কালিয়াগঞ্জ থানার আইসি দীপাঞ্জন দাসকে(Dipanjan Das) সরিয়ে দেওয়া হল। তার জায়গায় কালিয়াগঞ্জর আইসি হচ্ছেন সুবল ঘোষ (Subal Ghosh)। ইনি শিলিগুড়ি জিআরপির ইনসপেক্টর পদে কর্মরত ছিলেন। তার জায়গায় এলেন কালিয়াগঞ্জর আইসি দীপাঞ্জন দাস।
কালিয়াগঞ্জে এক নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার অভিযোগ ওঠে। গত শুক্রবার কালিয়াগঞ্জে এক ছাত্রীর দেহ উদ্ধার হয়েছিল। নৃশংস এই ঘটনা চাউর হতেই গোটা রাজ্য রাজ্যনীতি উত্তাল হয়। ২১ এপ্রিল ছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার করতে গিয়ে জনতার রোষে পড়েছিল পুলিশ। উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জে কিশোরীকে ধর্ষণ করে হত্যার অভিযোগে গত মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) রাজবংশী তফশিলি এবং আদিবাসী সমন্বয় কমিটির পক্ষ থেকে কালিয়াগঞ্জ থানায় স্মারকলিপি জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মিছিল করে থানার আসার সময় পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পুলিশের বাধার কারণে তারা তখন ইট-পাটকেল ছুড়তে আরম্ভ করে। পুলিশ জলকামান (Water Cannon), কাঁদানে গ্যাসের সেল (Tear Gas Cell) ফাটিয়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে চাইলেও আন্দোলনকারীদের পিছু হটাতে সক্ষম হয়নি। বরং পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। থানায় ঢুকে পুলিশকে মারধর করার পাশাপাশি আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় পুলিশের গাড়িতে।
আরও পড়ুন: Justice Abhijit Ganguly | Supreme Court | সব নয়, দুটি মামলা থেকে সরানো হল বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কালিয়াগঞ্জ থানা রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। পুলিশকে লাঠিপেটা করার ভিডিয়ো (Video) পর্যন্ত হাতে এসেছে। এরপর, পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ধরপাকড় শুরু করে। মোট ৩২ জনকে গ্রেফতার (Arrest) করা হয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় একাধিক মামলা দায়ের হওয়ার পুলিশ ৩২ জনকে বুধবার রায়গঞ্জ আদালতে পেশ করেছিল। তারপরই আদালত ২৩ জনকে ১৪ দিনের জেল কাস্টডিতে পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং ৯ জনকে পুলিশ কাস্টডিতে পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন বাংলার রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস (Governor CV Anand Bose) রাজ্যের মুখ্যসচিব (Chief Secretary) এবং রাজ্য পুলিশের ডিজির (DG) সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। রাজ্যপাল দু’জনের কাছে বিস্তারিত তথ্য জানতে চান। রাজভবন সূত্রের খবর, রাজ্যপাল উত্তর দিনাজপুর জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গেও কথা বলেছেন। বুধবার দিল্লি থেকে ফিরে তিনি মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্যকে ফোন করেন। পরিস্থতি কেন আয়ত্তের বাইরে চলে গেল, কোন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার থানায় হিংসাত্মক হামলা চলল, রাজ্যপাল তা বিস্তারিত জানতে চান। সূত্রের খবর, পুলিশের ভূমিকায় তিনি অসন্তোষও প্রকাশ করেন। বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও (CM Mamata Banerjee) কালিয়াগঞ্জের ঘটনায় পুলিশের ভুমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। যেভাবে পুলিশ কর্মীরা ওই নাবালিকার মৃতদেহ টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়েছে সেদিন, সে বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষুব্ধ।