নয়াদিল্লি: যৌন হেনস্তা প্রতিরোধে কমিটি গঠন হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রশানকে সকল মন্ত্রক, দফতর, সরকারি সংস্থা, কর্তৃপক্ষ, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা এবং প্রতিষ্ঠানে যৌন হেনস্তা রোধ কমিটি আছে কিনা তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ সর্বোচ্চ আদালতের। ২০১৩ সালে যৌন হেনস্তা রোধে আইন প্রণীত হয়। সেই আইনের পর ১০ বছর কেটে গেলেও বহু জায়গায় এখনও এই কমিটির অস্তিত্ব নেই। অনেক জায়গায় কমিটি নামকা ওয়াস্তে টিকে রয়েছে। তার কোনও কার্যকারিতা নেই। আইন প্রণয়নে অনীহা রয়েছে বলে মনে করে শীর্ষ আদালত। তাই এই নির্দেশ।
বিচারপতি এ এস বোপান্না এবং হিমা কোহলির বেঞ্চ বলেছে, মহিলা কর্মচারীদের কাছে কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ যদি আগের মতো প্রতিকূল, অসংবেদনশীল ও নির্দয় থেকে যায়, তাহলে ওই আইন একটি ফাঁকা বুলিতেই থেকে যাবে। কর্মস্থলের কর্তৃপক্ষ যদি মহিলাদের জন্য নিরাপদ, ভীতিহীন কাজের পরিবেশ তৈরি করতে না পারে, তাহলে তাঁরা বাড়ির বাইরে বেরতেই আতঙ্কিত হবেন। আর তাতে সম্মানজনকভাবে বেঁচে থাকাই দায় হয়ে পড়বে। নিজেদের প্রতিভা, দক্ষতা সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে যাবে। তাই কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারগুলিকে এ বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের। এই আইনের নেপথ্যে যে মহৎ উদ্দেশ্য তা যেন সত্যে রূপ পায় তা দেখার জন্য ৬১ পাতার রায়ে বলেছে বেঞ্চ।
আরও পড়ুন: Turkey Election 2023 | তুরস্কে আজ ভোট, এর্দোগানের ‘মৃত্যুঘণ্টা’ কি বাজবে?
সরকার হোক বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, যতক্ষণ না এই আইনের কঠোর প্রয়োগ হচ্ছে, ততক্ষণ মহিলারা কর্মক্ষেত্রে নিরাপদ থাকতে পারবেন না। কোনওদিন তাঁরা আত্মসম্মান বজায় রেখে কাজের পরিবেশ পাবেন না। বেঞ্চ মনে করে, সকল সরকারি, বেসরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানকে যৌন হেনস্তা প্রতিরোধ আইন অক্ষরে অক্ষরে এবং সহৃদয়তার সঙ্গে প্রয়োগ করতে হবে। এই ধরনের নিন্দনীয় কাজের শিকার হওয়া কোনও মহিলার কেবলমাত্র সম্মানহানি তাই নয়, তাঁর মানসিক ও শারীরিক ক্ষতিও হয়।
কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্তার শিকার হওয়া মহিলারা অভিযোগ জানাতেও ভয় পান। অনেক সময় তাঁরা সেই চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। তার কারণ তাঁরা জানেনই না, কার বা কাদের কাছে নালিশ জানালে সুবিচার পাবেন তিনি। বিচারপতি কোহলি উল্লেখ করেন, আইন প্রণয়নের পর দীর্ঘদিন কেটে গেলেও আজও তা কার্যকরী হয়নি অনেক ক্ষেত্রে। তিনি বলেন, এটা প্রকাশ্যে এসেছে যখন একটি সর্বভারতীয় সংবাদপত্র এ ধরনের উপেক্ষার কথা তুলে ধরেছে। দেশের ৩০টি জাতীয় ক্রীড়া ফেডারেশনে অনুসন্ধান চালিয়ে তারা দেখেছে, অন্তত ১৬টিতে এ ধরনের অভ্যন্তরীণ অভিযোগ সংক্রান্ত কমিটি গঠন করাই হয়নি।