কলকাতা: স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি-র নিয়োগ মামলায় নয়া মোড়। কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) যাদের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল, সুপ্রিম কোর্ট সেই নির্দেশের উপর আগেই স্থগিতাদেশ জারি করে। যে বাগ কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিববিআই তদনদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন, তা খতিয়ে দেখার জন্য সুপ্রিম কোর্ট আদালতবান্ধব নিয়োগ করল বুধবার। গৌরব আগরওয়াল নামে এক আইনজীবীকে আদালতবান্ধব করা হয়েছে।
শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, ওই আদালতবান্ধব বাগ কমিটির রিপোর্ট খতিয়ে দেখে আদালতে সামারি পেশ করবেন। তা সব আইনজীবীকে দেওয়া হবে। শীর্ষ আদালত মনে করে, বাগ কমিটির ওই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসা উচিত। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশেই নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্যই অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রণজিৎ কুমার বাগের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়।
আরও পড়ুন: Partha Chatterjee | আংটি কাণ্ডে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের সুপারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
আদালত সূত্রের খবর, বাগ কমিটির রিপোর্টে স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সহ একাধিক অফিসারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশে নিয়োগ প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য শান্তিপ্রসাদ সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটিও গঠন করা হয়। বাগ কমিটির রিপোর্টে বলা হয়, ওই উপদেষ্টা কমিটি সম্পুর্ণ অবৈধ। ওই কমিটি যাবতীয় দুর্নীতির কেন্দ্রবিন্দু।
বাগ কমিটি সুপারিশ করে, সংশ্লিষ্ট শিক্ষাকর্তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। তার ভিত্তিতেই নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সিবিআই তদন্ত শুরু হয়। তার জেরেই, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী সহ একাধিক শিক্ষাকর্তা এখন জেল খাটছেন।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি-র যে প্রার্থীদের চাকরি চলে গিয়েছিল বেআইনিভাবে নিয়োগের ফলে, সেই প্রার্থীরা সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন। মামলাকারীদের পক্ষে প্রবীণ আইনজীবী মুকুল রোহতগি বলেন, আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি-র চাকরিপ্রাপ্তরা কাজে যোগ দিতে পারছেন না। চাকরিহারাদের পরিবারগুলি অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। চাকরিহারাদের সিবিআই এবং ইডির ভয় দেখানো হচ্ছে।
গ্রুপ ডি-র মামলাকারীদের আইনজীবী জানান, বাগ কমিটির রিপোর্ট সম্পর্কে তাঁরা কিছুই জানেন না। বিবাদী পক্ষের আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য জানান, বাগ কমিটির রিপোর্ট কেউই হাতে পাননি। তবে ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে সেই কমিটির কিছু সুপারিশের উল্লেখ রয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানায় বাগ কমিটির রিপোর্ট যাতে সব কমিটিই পায় তা দেখা হবে। এর পরই আদালত আইনজীবী গৌরব আগরওয়ালের সাহায্য চায়। তাঁর সম্মতিক্রমে গৌরবকে আদালতবান্ধব করা হয়। আদালত এদিন এই মামলায় আগের অন্তর্বর্তী স্তগিতাদেশ বহাল রাখে। গ্রুপ ডি মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী সোমবার। বাকি মামলাগুলির শুনানি হবে বুধবার।