কলকাতা: আগামিকাল, মঙ্গলবার নন্দীগ্রামে (Nandigram) শুভেন্দু অধিকারীকে (Suvendu Adhikari) শহীদ দিবস (Shahid Diwas) পালনের অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Culcutta High Court)। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার (Justice Rajasekhar Mantha) নির্দেশ, সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ ভাবে কর্মসূচি পালন করতে পারবেন বিরোধী দলনেতা ( Leader of the Opposition) শুভেন্দু অধিকারী। সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে বিজেপির নেতা-কর্মীদের অনুষ্ঠানস্থল ছেড়ে দিতে হবে। বেলা ১১টা থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত শাসকদল ওই জায়গায় কর্মসূচি পালন করবে।
প্রসঙ্গত, ১৪ মার্চ নন্দীগ্রামে শুভেন্দুকে শহীদ দিবস পালনের অনুমতি দেয়নি জেলা পুলিশ। এর বিরুদ্ধে আদালতে যান বিরোধী দলনেতা। সোমবার সেই মামলার শুনানিতে শুভেন্দুকে কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেন বিচারপতি।
প্রতি বছর শাসকদল তৃণমূল ১৪ মার্চ নন্দীগ্রামে শহীদ দিবস পালন করে। ২০২০ সালে শুভেন্দু তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে তিনি আলাদা করে নন্দীগ্রামে শহীদ দিবস পালন করেন বিজেপির ব্যানারে। তাকে ঘিরে গত দুই বছর ধরে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে টানাপড়েন চলছে।
আরও পড়ুন: ED Advocate Nitesh Rana | গরু পাচার, মেহুল-নীরব-মাল্য মামলার ইডি আইনজীবীর আচমকা ইস্তফা
নন্দীগ্রামে এই মুহূর্তে তৃণমূল (TMC) এবং বিজেপির (BJP) মধ্যে চরম ব্যস্ততা চলছে শহীদ দিবস পালন ঘিরে। দুই দলই ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির নামে কর্মসূচি করতে চলেছে। শাসকদলের কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকবেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, অখিল গিরি, সৌমেন মহাপাত্র, রাজ্য যুব তৃণমূল সভানেত্রী সায়নী ঘোষ প্রমুখ। নন্দীগ্রাম জমি আন্দোলনে নিহতের পরিবারবর্গেরও হাজির থাকার কথা। মঙ্গলবার থেকেই শুরু হচ্ছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। তাই শাসকদল ছোট করে শহীদ দিবস পালন করবে বলে জানিয়েছে।
জমি আন্দোলনে নন্দীগ্রামে যাঁরা শহীদ হন, তাঁদের স্মরণ করা হয় শহীদ দিবসে। ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ নন্দীগ্রামে পুলিশের গুলিতে ১৩ জনের মৃত্যু হয়। তারপর থেকে প্রতি বছর শাসকদল নন্দীগ্রামে শহীদ দিবস পালন করে থাকে। ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর প্রথম কয়েকবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) নন্দীগ্রামে শহীদ দিবসে শামিল হয়েছিলেন। যদিও মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর মমতা ঘোষণা করেছিলেন, তিনি প্রতি বছর এইদিনে নন্দীগ্রামে আসবেন। এখন আর তাঁকে শহীদ দিবসের অনুষ্ঠানে নন্দীগ্রামে দেখা যায় না। তা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে ক্ষোভও রয়েছে। যদিও দলনেত্রী নিজে জড়িত বলে কেউ মুখ খোলার সাহস পান না। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী প্রকাশ্যেই অভিযোগ করেন, মুখ্যমন্ত্রী এখন নন্দীগ্রামকে ভুলে গিয়েছেন। ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রামে তৃণমূলের প্রার্থী হওয়ার পর মমতা বলেছিলেন, নন্দীগ্রাম আমার মা। আমি নন্দীগ্রামকে কখনও ভুলব না। শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর তিনি বিজেপির ব্যানারে শহীদ দিবস পালন করেন।