নয়াদিল্লি: আদালতের নির্দেশে কিংবা শুনানিকালে মহিলাদের সম্পর্কে কী কী শব্দ, প্রবাদ বা প্রবচন ব্যবহার করা চলবে না, তার একটি নির্দেশিকা দিল সুপ্রিম কোর্ট। ‘হ্যান্ডবুক অন কমব্যাটিং জেন্ডার স্টিরিওটাইপস’ অর্থাৎ মহিলাদের সম্পর্কে চিরাচরিত বা প্রচলিত ধারণা প্রতিরোধের পুস্তিকা প্রকাশ করে দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বিচারকদের আপত্তিকর শব্দ প্রয়োগে সচেতন করে দেন। মহিলাদের প্রতি সম্মান বা সংবেদশীলতা বজায় রাখতে শুনানির সময় এই শব্দ ব্যবহারের প্রতি সজাগ থাকতে নির্দেশে বলা হয়েছে।
পুস্তিকায় এই ধরনের শব্দ, প্রবাদ, প্রবচনের একটি তালিকা তুলে দেওয়া হয়েছে। প্রধান বিচারপতি এই পুস্তিকা প্রকাশের সময় অতীতের বেশ কিছু রায়দানকালে আপত্তিজনক মন্তব্যের দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আদালতের রায়ে মহিলাদের বিষয়ে এ ধরনের শব্দ প্রয়োগ অনুচিত। এই পুস্তিকার লক্ষ্য সেইসব রায় প্রসঙ্গে সমালোচনা অথবা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা নয়। এটা কেবলমাত্র একটা দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা মাত্র। যুগ যুগ ধরে অসাবধানতাবশত যা টিকে রয়েছে, তার প্রতি মনোনিবেশ করে ত্রুটি সংশোধনের চেষ্টাও বলা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: ভয়াবহ দুর্ঘটনা বৃন্দাবনে, মৃত ৫, আহত ১২
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, এই পুস্তিকার মূল লক্ষ্যই হল চিরাচরিত ধারণার বাইরে সচেতনতা গড়ে তোলা। মহিলাদের সম্পর্কে যেসব শব্দ ব্যবহার হয়ে এসেছে বিচারক বা বিচারপতিদের সে ব্যাপারে সচেতন করে দেওয়ার চেষ্টা। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে এই পুস্তিকা দিয়ে দেওয়া হয়েছে, যাতে গোটা দেশের বিচারক এবং বিচারপতি, মায় আইনজীবীরাও তা দেখতে পান। উল্লেখ্য, গত মার্চ মাসে এ ধরনের পুস্তিকা তৈরির কাজ চলছে বলে একটি অনুষ্ঠানে জানিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি।
এদিন পুস্তিকার যৌক্তিকতা তুলে ধরতে তিনি বলেন, উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, বেশ কিছু রায়ে দেখেছি অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কের মহিলাকে রক্ষিতা বা উপপত্নী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, মহিলাদের প্রসঙ্গে সম্মানজনক শব্দ ব্যবহারের ক্ষেত্রে এটা একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ সুপ্রিম কোর্টের। প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের আমলেই এর আগে সমস্ত রায় আঞ্চলিক ভাষায় ভাষান্তর করা হয়েছে।