শিলং: মেঘালয় (Meghalay) বিধানসভার ভোটে এবার তৃণমূল কতটা প্রভাব ফেলতে পারবে তার দিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল। তৃণমূল ইতিমধ্যে উই কার্ড, মাই কার্ডের কথা বলে মেঘালয়ে প্রচারে সাড়া ফেলে দিয়েছে। জোর লড়াই দিচ্ছে ঘাসফুল। শাসক তথা এনপিপি দলের প্রধান কনরাড সাংমা প্রধান টার্গেট করছেন তৃণমূলকেই। তিনি বলেছেন, তৃণমূল যে উই কার্ড, মাই কার্ডের কথা বলছে তা ভাঁওতা ছাড়া কিছুই নয়। তাঁর আরও অভিযোগ, তৃণমূলের এই সব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হলে মেঘালয় ঋণের জালে জড়িয়ে যাবে। এটা গিমিক ছাড়া কিছু না। মেঘালয়ের মানুষের কাছে কনরাডের অনুরোধ, কেউ যেন তৃণমূলের প্রলোভনে পা না দেয়।
এর আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মেঘালয়ে গিয়ে নানান প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। রাজ্যে ক্ষমতায় এলে তাঁরা কী করবেন, তার লম্বা ফিরিস্তিও দেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই তিনি বাংলার লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ধাঁচে মহিলাদের জন্য উই কার্ড চালু করার কথা ঘোষণা করেন। এছাড়া যুবদের জন্য মাই কার্ড চালু হবে বলেও মমতা জানান। মমতার সভা ঘিরে সাধারণ মানুষের উচ্ছ্বাস ছিল তুঙ্গে। সেই সভায় বিশাল ভিড়ও হয়। সেখানকার রাজনীতির কারবারিরা জানান, সাম্প্রতিক কালে কোনও রাজনৈতিক দলের সমাবেশে এত ভিড় হয়নি।
ইতিমধ্যেই ৬০ আসনের বিধানসভা ভোটে তৃণমূল ৫২ জন প্রার্থীর প্রথম তালিকা প্রকাশ করেছে। সেই তালিকায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা এবং তাঁর পরিবারের তিন সদস্যের নাম রয়েছে। মুকুল তাঁর এবং তৃণমূলের অন্য প্রার্থীদের জয়ের ব্যাপারে একশো শতাংশ আশাবাদী। এবার মূল লড়াই ত্রিমুখী হবে। একদিকে শাসক এনপিপি। এছাড়াও লড়াইয়ের ময়দানে রয়েছে বিজেপি এবং তৃণমূল। রাজনৈতিক মহল মনে করছে এই তিন দলের মধ্যে মূল লড়াই হবে। তবে ভোটের ময়দানে আরও একাধিক দল রয়েছে।
আরও পড়ুন: Meghalaya Assembly Election 2023: মেঘালয়ে জোট নয়, এবার সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গড়বে এনপিপি!
আগের বছর বিজেপি ৪৭টি আসনে মেঘালয়ে ভোটে লড়াই করেছিল। এবার তাঁরা ৬০টি আসনে লড়ছে। এই রাজ্যে বিজেপির দুজন বিধায়ক ছিলেন। তাঁরা হলেন শানবুর সুল্লাই ও এএল হেক ( Sanbor Shullai and A L Hek )। তাঁরা এবার যথাক্রমে দক্ষিণ শিলং ও পিন্থোরুখরা (Pynthorukhrah) আসন থেকে লড়াই করছেন। রাজ্য বিজেপি সভাপতি আর্নেস্ট মউরি (Ernest Mawrie) লড়াই করবেন পশ্চিম শিলং বিধানসভা কেন্দ্র থেকে। ২০১৮ সালে তিনি নংথাইমাই বিধানসভা কেন্দ্র থেকে লড়ে হেরেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার (Conrad Sangma) বিপক্ষে বার্নার্ড মারককে (Bernard N Marak) প্রার্থী করেছে বিজেপি। বানরাড মারক ২০১৪ সালে অস্ত্র ছেড়ে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। গত মাসেই কনরাড সাংমার নেতৃত্বাধীন মেঘালয় ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (Meghalaya Democratic Alliance led by Conrad Sangma) থেকে বেরিয়ে এসেছে বিজেপি।
জাতীয় দল বিজেপি, কংগ্রেস ছাড়াও মেঘালয়ে যেসব রাজনৈতিক দল এবার ভোটের লড়াইয়ের ময়দানে রয়েছে তার মধ্যে আছে পিএ সাংমার দল ন্যাশনাল পিপলস পার্টি। তাছাড়া সেখানে চার্লস পিংরোপের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। শরদ পাওয়ারের নেতৃত্বাধীন এনসিপি (NCP)। তাছাড়া আছে ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক পার্টি, পিপলস ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট, হিল স্টেট পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি, কেএইচএনএএম পার্টি। আছে গারো ন্যাশনাল কাউন্সিল, ভয়েস অফ দ্য পিপল পার্টি, নর্থ ইস্ট সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি, মেঘালয় ডেমোক্রেটিক পার্টি।