চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে দফায় দফায় মানবাধিকার লঙ্ঘণের অভিযোগ উঠেছে। ওই অঞ্চলের উইঘুর মুসলিমদের উপর চলছে নানা ধরণের অত্যাচার, এমনই তথ্য উঠে এসেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনগুলির সূত্রে। রাষ্ট্রসংঘের কাছে এব্যাপারে একটি গুরুত্বপূর্ণ রিপোর্ট পেশ করা হয়েছিল সেপ্টেম্বরে। যদিও ওই রিপোর্টের তুমুল বিরোধিতা করেছিল চীন। অবশেষে বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার পরিষদে ওই প্রস্তাব নিয়ে পেশ হওয়া বিতর্কের প্রস্তাব খারিজ হয়ে গেল ভোটাভুটিতে। ভারত সেই প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটি থেকে বিরত থাকল। সংবাদ সংস্থা সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে।
জিনজিয়াং প্রদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে বিতর্কের একটি খসড়া প্রস্তাব পেশ করা হয় বৃহস্পতিবার। পরিষদের ৪৭টি সদস্য দেশের মধ্যে ১৭টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে সায় দিলেও বিরোধিতা করে চীন সহ ১৯টি দেশ। ভোটদান থেকে বিরত থাকে ১১টি দেশ। সেই তালিকায় ভারত ছাড়াও রয়েছে ব্রাজিল, ইউক্রেন, মেক্সিকোর মতো দেশগুলি। খসড়া প্রস্তাবটি পেশ করেছিল আমেরিকা, ব্রিটেন, কানাডা, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, নরওয়ে, সুইডেন সহ বিভিন্ন দেশগুলির সম্মিলিত গোষ্ঠী। আর তুর্কী সহ আরও বেশ কয়েকটি দেশ সেই প্রস্তাবের পক্ষে ছিল।
মানবাধিকার সংগঠনগুলির অভিযোগ, খনিজ সম্পদ সহ নানা দিক থেকে সমৃদ্ধ চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে বসবাসকারী দশ লাখ উইঘুর মুসলিমদের জোর করে আটকে রাখা হয়েছে ওই অঞ্চলের নানা শিবিরে। কমিউনিস্ট শাসিত চীনের দাবি, উইঘুর মুসলিমদের জন্য জিনজিয়াং প্রদেশের নানা অংশে এক বিশেষ ধরণের শিক্ষা শিবির-এর আয়োজন করা হয়েছে ওই সম্প্রদায়ের মানুষদের সার্বিক উন্নতির জন্য। ২০১৭ সালে রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার পরিষদে প্রথম চীনের উইঘুর মুসলিমদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ পেশ হয়। যদিও সে বিষয়ে কোনও আলোচনা হয়নি।
মানবাধিকার সংগঠন হিউমান রাইটস ওয়াচ-এর চীন সংক্রান্ত বিষয়ের ডিরেক্টর, সনি রিচার্ডসন-এর দাবি, রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সর্বোচ্চ স্তরে এই প্রথম চীনের জিনজিয়াং অঞ্চলের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার সুযোগ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু মানবাধিকার পরিষদে ওই রিপোর্টের উপর আলোচনার প্রস্তাবে বিতর্ক না হতে পারা আসলে সদস্য দেশগুলির অমার্জনীয় ব্যর্থতা আর জিনজিয়াং প্রদেশের বাসিন্দা উইঘুর মুসলিমদের প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা। তবে আশার কথা, মানবাধিকার পরিষদে ভোটের ফলাফল একটা বিষয় প্রমানিত করছে ক্রমেই বিভিন্ন দেশ চীনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে সচেতন হয়ে উঠছে।