কলকাতা: পঞ্চায়েত ভোটে নিরাপত্তায় কোনও খামতি রাখা হবে না বলে ঘোষণা করলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা। তবে ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগ করা নিয়ে বৃহপ্সতিবার নিশ্চিত করে কিছু জানাননি নির্বাচন কমিশনার। সাংবাদিক বৈঠকে ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে ব্যাপক হিংসার প্রসঙ্গ ওঠে। সে ব্যাপারে রাজীব বলেন, অতীতে কী হয়েছে, সব সময় তা দিয়ে সব কিছু বিচার হয় না। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের উপর আস্থা রাখুন। রাজ্য পুলিশের উপরও ভরসা রাখা উচিত। প্রশ্ন করা হয়েছিল, গত পঞ্চায়েত ভোটে অনেকেই নিজের ভোট নিজে দিতে পারেননি। এবারও কি তা পুনরাবৃত্তি ঘটবে? জবাবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার বাঁকা সুরে বলেন, নিজের ভোট তো নিজেই দেয় মানুষ।
গতকালই রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব নেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা। দায়িত্ব দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তিনি পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণা করে জানান, রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেই ভোটের দিন ঠিক করা হয়েছে। ভরা বর্ষার মধ্যে পঞ্চায়েত ভোট হতে চলেছে এবার। তাতে অবশ্য কোনও অসুবিধা হবে না বলে দাবি নতুন নির্বাচন কমিশনারের।
এবার ৩৩১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট আসন ৬৩ হাজার ২২৯টি। ৩৪১টি পঞ্চায়েত সমিতিতে মোট আসন ৯ হাজার ৭৩০টি। এছাড়া জেলা পরিষদে রয়েছে ৯২৮টি আসন। মোট ভোটারের সংখ্যা ৫ কোটি ৬৭ লক্ষ ২১ হাজার ২৩৪। ভোট গ্রহণ শুরু হবে সকাল ৭টা থেকে। চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। বিকেলে ওই সময় পর্যন্ত যাঁরা লাইনে থাকবেন, তাঁদের সকলকে ভোট দেওয়ানোর সুযোগ থাকবে। কমিশনার জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে আদর্শ আচরণবিধি চালু হয়ে গিয়েছে। প্রশ্ন করা হয়েছিল, কোনও সর্বদলীয় বৈঠক না ডেকেই কেন ভোটের দিন ঘোষণা করা হল। উত্তরে রাজীব বলেন, আইনে কোথাও বলা নেই যে সর্বদলীয় বৈঠকের পর ভোটের দিন ঘোষণা করা হবে।
২০১৮ সালে পঞ্চায়েত ভোট (Panchayet Election) হয়েছিল ১৪ মে। সেবার এক দফাতেই ভোট হয়েছিল। ওই বছর বহু জেলায় বিরোধীদের মনোনয়ন জমা দিতে দেয়নি শাসকদল, এমনটাই অভিযোগ উঠেছিল। শুধু তাই নয়, বেশ কিছু জেলায় মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসে বিরোধীদলের প্রার্থীদের বেধড়ক মারধরও খেতে হয়েছিল। এমনকী রেহাই পাননি মহিলা প্রার্থীরাও। ত্রিস্তর মিলিয়ে প্রায় ৩৪ শতাংশ আসনে শাসকদল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়। ভোটের দিন ব্যাপক হিংসার ঘটনা ঘটে।
এবার বিজেপি সহ বিরোধীরা অনেক আগে থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর তত্ত্বাবধানে পঞ্চায়েত ভোটের দাবিতে সরব হয়েছে। বিজেপি এই দাবিতে আদালতেরও দ্বারস্থ হয়েছিল। যদিও তখনকার নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাস কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি খারিজ করে দিয়েছিলেন।