বর্ধমান: ‘রেল গাড়ির কামরায় হঠাৎ দেখা’ কবিতার লাইন পড়লেই মনে রোম্যান্টিক ইমেজ সামনে আসে। “দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’ সিনেমায় রেলগাড়ির দৃশ্য রোম্যান্টিকতায় মুগ্ধ করে রাখে। রেলগাড়ি ও রোম্যান্স সিনেমা, উপন্যাসে বারবার এসেছে। এবার রিয়েল লাইফে রেল গাড়ির অন্য রোম্যান্টিকতা মুগ্ধ করে রাখল আটপৌরে বাঙালিয়ানাকে। পশ্চিমবঙ্গের প্রথম সেমি হাইস্পিড ট্রেন বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের চালককে ঘিরে যে কাহিনী ঘুরছে লোকের মুখে মুখে।
শুক্রবার রাজ্যে ছুটেছে সেমি হাইস্পিড (Semi HighSpeed) বন্দে ভারত এক্সপ্রেস (Vande Bharat Express)। সেই গাড়ি বর্ধমান স্টেশন হয়ে নিউ জলপাইগুড়ি (New Jalpaiguri) গিয়েছে। যাকে স্বাগত জানাতে স্টেশনে-স্টেশনে ভিড় করেছিলেন অনেকে। তাঁরা ট্রেনটিকে (Train) একবার চাক্ষুষ করতে চাইছিলেন। কীভাবে চালক তা চালাচ্ছেন সেটিও দেখতে চাইছিলেন। ঠিক তারই মধ্যে একজন বর্ধমান স্টেশন চত্বরে ফুল হাতে এক কোণে দাঁড়িয়েছিলেন। ট্রেনটি বর্ধমান স্টেশনে (Bardhaman Station) ঢোকার পর ভিড়ের মধ্যে থেকে কোনওরকমে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে গিয়ে চালকের হাত ফুল তুলে দিলেন। দ্রুত গতির ট্রেনের চালককে মঙ্গল কামনা করে শুভেচ্ছা জানালেন। ততক্ষণে ট্রেনের চালক অনিল কুমারের (Anil Kumar) চোখে জল। মনে মনে ‘বন্দে ভারত’ বলে নমস্কার জানিয়ে শ্রদ্ধায় মাথা নামিয়েছেন তিনি। শুভেচ্ছা জানাতে ভিড় ঠিল এগিয়ে আসা তাঁর স্ত্রী সুনীতা কুমারের (Sunita Kumar) চোখেও তখন জল। ইতিহাসের ট্রেনের চালক তাঁর স্বামী। তাই আবেগ ধরে রাখতে পারেননি সুনীতাদেবী। রেলের চালককে স্বাগত জানাতে তাঁর স্ত্রীর এহেন শুভেচ্ছা জানানোর কাহিনী তারপর থেকে সেখানে লোকের মুখে ঘুরছে।
আরও পড়ুন: Happily Welcomed New Year: হ্যাপি নিউ ইয়ার জানাতে তিলোত্তমা আজ ক্ষ্যাপা বাউল
বর্ধমানেই থাকেন অনিলবাবুরা। তিনি এর আগে রাজধানী, শতাব্দী, দুরন্ত এক্সপ্রেসের মতো ট্রেন চালিয়েছেন। তবু এই ট্রেন ঘিরে তিনিও যেন বেশি আবেগপ্রবণ (Imotional)। ট্রেনটির উদ্বোধন করেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী (Prime Minister)। ফোনে কথা হয়েছিল স্ত্রীর সঙ্গে। তাই বর্ধমান স্টেশনে ঢোকার মুখ থেকে তিনিও চালকের আসন থেকে সুনীতাদেবীকে ভিড়ের মাঝে চোখ ঘুরিয়ে ইতিউতি খুঁজছিলেন। তাঁর জীবনের রেল (Rail) গাড়ির চালক যে সুনীতাদেবীই। দেখা মাত্র তিনিও আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। ওই মুহূর্ত ছিল একসঙ্গে জীবনের কয়েক দশক পার হয়ে আসা আবেগকে সম্মান জানানোর। গর্বের। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের যাত্রা শুরুর রোম্যান্টিসজমে নতুন সুর দিয়েছে বাঙালি প্রৌঢ় দম্পতির ওই কাহিনী।