কলকাতা: মুখোমুখি দুই দিন-বর্ষ শেষের এবং বর্ষবরণের। শনি ও রবি দুদিনই সপ্তাহান্তে নির্ধারিত এবার। ঠান্ডার (Cold) আমেজে ছুটির দিনে উদ্দীপনায় স্মরণীয় হোক এই দুই দিবস। এই প্রার্থনা (Pray) বঙ্গবাসীর। একটা দিন হচ্ছে শেষের কবিতার। ভুল, খারাপ স্মৃতি, গ্লানি ভুলে থেকে শিক্ষার পাঠ নেওয়ার। অন্যদিনটি হচ্ছে নবীন প্রভাত আগমনের। আগামী জীবনকে আরও সুন্দর প্রাণবন্ত করতে এগিয়ে চলার শপথ নেওয়ার। সব মিলিয়ে ইংরেজির নতুন বছরকে নয়া উদ্যমে স্বাগত (Welcome) জানাতে বর্ষশেষের দিনে ফুল মুডে তৈরি রাজ্য। বর্ষবরণের উচ্ছ্বাসে আজ, শনিবার রাত জাগবেন নগরবাসী (Citizen)। কলকাতা, শিলিগুড়ি (Siliguri), বর্ধমান (Bardhaman), পুরুলিয়া, বহরমপুর (Berhampore), কৃষ্ণনগর (Krishnanagar), ব্যান্ডেল (Bandel) শহর হ্যাপি নিউ ইয়ার (Happy New Year) জানাতে প্রস্তুতি সর্বত্র।
এবার বর্ষশেষ (Year Ending) ও নতুন বছরের (New Year) প্রথম দিন দুটোই সপ্তাহান্তে থাকায় পোয়াবারো হয়েছে। ফলে উৎসবে উপভোগের (Enjoy) মাত্রার পারদ চড়বেই। এদিন দিনভর সেই আঁচ পাওয়া গেল। পুরুলিয়ার (Purulia) অযোধ্যা পাহাড় (Ayodhya Hill), দার্জিলিং (Darjeeling), কার্শিয়াং(Kurseong) , গোরুমারা (Gorumara), চাপড়ামারি (Chapramari), নবদ্বীপ (Nabadwip), হাজারদুয়ারি (Hazarduary), শান্তিনিকেতন (Santiniketan) সর্বত্র পর্যটকরা (Tourists) ছুটি (Holiday) কাটাতে হাজির। করোনার অভিশপ্ত বছরগুলি ভুলে পাহাড়, জঙ্গল, সমুদ্র এই বাংলার সর্বত্র শুধুই আনন্দ উদযাপনের ঘনঘটা।
আরও পড়ুন: Weather Report 31st December: বর্ষবরণের রাতে থাকবে শীতের আমেজ তবে নতুন বছরের শুরুতেই পারদ হবে ঊর্ধ্বমুখী
এদিন কলকাতার (Kolkata) সর্বনিম্ন তাপমাত্রা (Temperature) ১৪.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শীতের আমেজে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাতে তাই সারা বিশ্বের সঙ্গে তৈরি তিলোত্তমাও। ভিক্টোরিয়া (Victoria) থেকে চিড়িয়াখানা কিংবা লাগোয়া নিউটাউনের (Newtown) ইকোপার্কে (Eco Park) সিটি অফ জয়ের (City of Joy) উন্মাদনার ছবি দেখা গেল। সর্বত্র অপেক্ষা বর্ষবরণের রাতের।
উত্তর কলকাতার বাসিন্দা এক কলেজ ছাত্রের কথায়, তাঁরা বন্ধুদের সঙ্গে এদিন দুপুরেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়বেন। বাড়ি ফিরবেন রবিবার সকালে। বিকেলে নন্দন (Nandan) চত্বরে চুটিয়ে আড্ডা। তারপর পার্কস্ট্রিটে বর্ষবরণে মাতোয়ারা হওয়ার সাক্ষী থাকবেন তাঁরা। ভোরে ধর্মতলা থেকে ট্রামে (Trum) চড়ে বাড়ির দিকে রওনা। তারপর কাশীপুর (Kashipur) উদ্যানবাটিতে কল্পতরু (Kalpataru) উৎসব (Festival) চাক্ষুষ করে বাড়ি। পার্ক সার্কাস (Park Circus) এলাকার এক বিশ্ববিদ্যালয়ের (University) ছাত্রীর কথায়, প্রতিবারের মতো এবারও পরিবারের সবার সঙ্গে বর্ষবরণ উপভোগ করতে বো ব্যারাকে যাবেন তাঁরা। সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল (St. Pauls Cathedral) গির্জা চত্বর ঘুরে আসবেন। আর তার সঙ্গে জমিয়ে খাওয়া দাওয়া হবে। শুরুটা ডেকার্স লেন দিয়ে হয়ে রাতে রেস্তরাঁতে শেষ হবে।
এদিন বিভিন্ন জায়গায় বর্ষবরণকে স্মরণীয় (Memorable) করে রাখতে একাধিক অনুষ্ঠানের আয়োজন (Cultural Programme) করা হয়েছে। কোথাও একইসঙ্গে পৌষ উৎসব (Poush Utsav) পালন হবে। থাকছে পিঠে, পুলির ব্যবস্থাও। গান, নাচ, নাটকের আয়োজন করা হয়েছে। বর্ষীয়ান নাট্য ব্যক্তিত্ব বিভাস চক্রবর্তী অসুস্থ। তাঁর থিয়েটার গ্রুপ “অন্য থিয়েটার” এবারও বর্ষশেষের দিনে নাট্যস্বপ্নকল্পের আয়োজন করেছে। সেখানে দিনভর নাটক হবে।
সল্টলেকের তথ্যপ্রযুক্তি (IT) সংস্থার এক কর্মী বললেন, সারা বছর গতানুগতিক কর্পোরেট অফিসে কোট, টাই পড়ে কাজ করি। কিন্তু, এই দিনটা আমি পুরোপুরি নিয়মের বাইরে ক্ষ্যাপা বাউলের মতো কাটায়। রবীন্দ্রসদন চত্বরে, গঙ্গার ঘাটে বাউল গেয়ে, বাউল শুনে সারা বছরের আগাম রসদ সংগ্রহ করি। পার্টি মুডে নাগরিক জীবন বাউলের সুরে ইংরেজি বছর স্বাগত জানাতে তৈরি।