উপোস নিয়ে দ্বিমত আছে অনেকে যেমন বলে মাঝে মধ্যে উপোস রাখা শরীরের জন্য উপকারী। তেমন আবার অনেক এর ভিন্ন মতও পোষণ করেন। তা ধার্মিক কারনে কিংবা ওজন কমানোর জন্য উপোস, কারন যাই হোক না কেন সারদিন উপোস করার পর আপনি কি খাচ্ছেন তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
উপোস রাখা মানে দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকা। এর ফলে সাধারণত আমাদের পাচনতন্ত্র যে সব এনজাইম তৈরি করে তা এই উপোস অবস্থায় করা সম্ভব হয় না। কারন দীর্ঘক্ষণ শরীর কোনও খাবার পায়নি। তাই উপোস ভাঙার পর একেবারে সহজপাচ্য খাবার খাওয়া উচিত এবং খিদের চোটে এক সঙ্গে অনেকটা খেয়ে ফেলা উচিত নয়। প্রথমে শরীরকে খাবার হজম করার কাজে প্রয়োজনীয় এনজাইম তৈরি হওয়ার সময় দিতে হবে।
এর পাশাপাশি আপনি কত ঘন্টা উপোস রাখছেন সেই মতো পেটের ভেতরে যে প্রোটেকটিভ মিউকাস লাইনিং আছে তা আসতে আসতে খর্ব হয়। এর ফলে পেটে যে কোনও জ্বালার প্রবণতা বাড়িয়ে তোলে। তাই উপোস ভাঙার পর মশলাদার খাবার, চা, কফি এমনকি দুধ খাওয়াও উচিত নয়।
তাই উপোস ভাঙার পর প্রথমেই জল খান এর পর সহজপাচ্য ফল ও কিংবা টাটকা ফলের রস খেতে পারেন। আজ রাতে শিবরাত্রির উপোস শেষে শরীর সুস্থ রাখতে এই সব খাবারগুলি খান-
ফল কিংবা ফলের রস খেতে পারেন
উপোস ভেঙে যে খাবারটা আপনি প্রথমে খাবেন তা শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি মেটাতে অত্যন্ত জরুরী। তাই এই সময় তরমুজ, আপেল বা অ্যাভোকাডো কিংবা কিউই খেতে পারেন। এগুলি সহজপাচ্য। পাশাপাশি লেবুবর্গ ফল যেমন পাতিলেবু, মুসম্বী, এমনকি আঙুর পুষ্টিকর হলেও উপোসের পর সরাসরি এগুলো না খাওয়াই ভাল। এগুলি পেটের মিউকাস লাইনিংয়ে জ্বালা সৃষ্টি করতে পারে।
রান্না করা সবজি কিংবা সবজির জুস বা সুপ খেতে পারেন
অর্গানিক সবজি হলে যেগুলো কাঁচা খাওয়া যায় সেগুলো খেতে পারেন। তবে যাদের হজমের সমস্যা রয়েছে তারা কাঁচার বদলে সুপ বা তরকারি খেতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে যেসব সবজিতে প্রোটিনের বেশি ও সহজ পাচ্য কার্বোহাইড্রেট রয়েছে যেমন আলু, গাজর, বিটগাজর, কুমড়ো, বিনস ইত্যাদি। তবে এই সময় কপি না খাওয়াই ভাল।
দই বা ইয়গহার্ট খেতে পারেন
এই দই বা ইয়গহার্ট আপনার গাট হেলথের জন্য ভীষণ কার্যকরী। তাই উপোস করার পরও পেটের যাতে কোনও সমস্যা না হয় সেক্ষেত্রে টক দই বা ইয়গহার্ট খেতে পারেন। তবে দই বা ইয়গহার্ট যাই হোক না কেন যেন ‘আনসুইটেনড’ হয় তা দেখে নেবেন।
ভাল করে রান্না করা শষ্য, বিনস বা ডাল খেতে পারেন তবে এতে শরীর প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাবে ঠিকই কিন্তু হজমের সমস্যা হতে পারে। একইভাবে বাদাম জাতীয় খাবার পুষ্টির নিরিখে যতই ভাল হোক না কেন হজমের ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে।
তবে উপোসের খাওয়া নিয়ে দুটো ব্যপার মাথায় রাখতে হবে এক হল পুষ্টির যে ঘাটতি হয়েছে তা পূরণ করা এবং দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকার ফলে এই সময় হজম সংক্রান্ত সমস্যা হতে পারে। প্রত্যেকের হজম ক্ষমতাও এক নয়। নিজের হজম ক্ষমতা বা কোনও খাবারে অ্যালার্জি রয়েছে কিনা এই বিষয়গুলো বুঝে খাওয়ার খান।