ইন্দোর: ক্যাম্পাসের মধ্যে লাভ জিহাদ আর ধর্মীয় উগ্রতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ গেরুয়া শিবিরের ছাত্র সংগঠনের লাগাতার বিক্ষোভ। আর সেই চাপের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেন মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর আইন কলেজের অধ্যক্ষ (Principal)। আইন বিষয়ের অধ্যাপক ইনামুর রহমা তাঁর পদত্যাগ পত্রে (Resignation Letter) জানিয়েছেন, গত ১ ডিসেম্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র আর বেশ কয়েকজন বহিরাগত যেভাবে ক্যাম্পাসের মধ্যে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে তাতে আমি মর্মাহত। আমার ধর্মীয় পরিচয় উল্লেখ করে যেভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হয়েছে তার পরে আর এই দায়িত্বে থাকা যায় না।
ঘটনার শুরু স্থানীয় এবিভিপি নেতার আনা একটি অভিযোগকে কেন্দ্র করে। অধ্যক্ষ ইনামুর রহমাকে পাঠানো তাঁর স্মারকলিপিতে (Memorandum)আরএসএসের ছাত্র শাখার নেতাদের দাবি, কলেজে মুসলিম শিক্ষকের সংখ্যা তুলনায় অনেক বেশি। অথচ বাস্তব তথ্য জানাচ্ছে, কলেজের ২৮ জন শিক্ষকের মধ্যে চারজন মুসলিম। এখানেই শেষ নয়, ওই স্মারকলিপিতে একইসঙ্গে অভিযোগ জানানো হয়, যে কলেজের ওই মুসলিম শিক্ষকরা লাভ জিহাদের মত কাজকর্ম চালাচ্ছেন। তাঁরা কলেজের ছাত্রীদের বিভিন্ন পানশালায় নিয়ে যাচ্ছেন।
এই অভিযোগ পেয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেন অধ্যক্ষ। পাশাপাশি যে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছিল তাঁদেরকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পাঁচ দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেশ করতেও উদ্যোগী হন অধ্যক্ষ। আর এর মধ্যে নতুন অভিযোগ তুলে একেবারে ইনামুর রহমাকে অধ্যক্ষ পদ থেকে অবিলম্বে ইস্তফার দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন এবিভিপি-র নেতারা (ABVP Leaders)।
এবারে তাঁদের অভিযোগ, কলেজের লাইব্রেরিতে রাখা একটি বই (Book) যা ছাত্রছাত্রীদের পড়ানো হয় সেখানে হিন্দু ধর্ম, আরএসএস, এবিভিপি, বজরং দল বা বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নামে নানা আপত্তিকর মন্তব্য রয়েছে। আর ওই বইটি ছাত্রছাত্রীদের পড়িয়ে হিন্দু ধর্ম (Hindu Religion) সম্পর্কে বেশ কিছু বিতর্কিত ধারণা তৈরি করা হচ্ছে। কিন্তু অধ্যাপক রহমার দাবি, ওই বইটি কোনওভাবেই পাঠ্য বইয়ের তালিকায় নেই। কিন্তু এই ধরণের নানা অভিযোগের ভিত্তিতে অবশেষে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন অধ্যক্ষ। কিন্তু ক্যাম্পাসের মধ্যে গেরুয়া শিবিরের (Saffron Camp) এহেন দাপটে যেন এক আশঙ্কার আবহ তৈরি হয়েছে শিক্ষকদের মধ্যে।