হায়দরাবাদ: হায়দরাবাদের শেষ নিজামের (Last Nizam of Hyderabad) মৃত্যু হল তুরস্কে (Turkey)। তাঁর শেষ অন্তিম অনুযায়ী আগামিকাল, মঙ্গলবার মাতৃভূমি ভারতেই (India) তাঁর শেষকৃত্য হবে। শেষ নিজামের মরদেহ নিয়ে তাঁর সন্তানরা হায়দরাবাদের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। মির বরকত আলি খান (Mir Barkat Ali Khan) পরিচিত ছিলেন প্রিন্স মুকররম জাহ্ বাহাদুর নামে। হায়দরাবাদের অষ্টম নিজাম মির বরকতের বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। শনিবার রাতে তুরস্কের রাজধানী ইস্তানবুলে (Istanbul) তাঁর মৃত্যু হয়।
নিজামের দফতর থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গভীর শোকের সঙ্গে জানানো যাচ্ছে যে, নবাব মির বরকত আলি খান গতকাল রাত সাড়ে ১০টা (ভারতীয় সময়) নাগাদ মারা গিয়েছেন। তিনি হায়দরাবাদের অষ্টম নিজাম ছিলেন। তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী জন্মভূমিতে তাঁকে সমাধিস্থ করা হবে। মিরের সন্তানরা মরদেহ নিয়ে দেশে ফিরে আসছেন।
বিবৃতি আরও বলা হয়েছে, দেশে ফেরার পর তাঁর মরদেহ চৌমহল্লা প্রাসাদে রাখা হবে। সেখানে ধর্মীয় ক্রিয়াকর্মের পর আসফ জাহি পারিবারিক সমাধিক্ষেত্রে তাঁকে কবরস্থ করা হবে। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, মুকররম বাহাদুরের জন্ম ১৯৩৩ সালের ৬ অক্টোবর। মির ওসমান আলি খানের জ্যেষ্ঠ পুত্র মির হিমায়েত আলি খানের ছেলে মুকররম। ১৯৪৮ সালের সেপ্টেম্বরে হায়দরাবাদের ভারতভুক্তির আগে নিজামের হাতেই ছিল এই শহর তথা রাজ্য।
তাঁর মা যুবরানি দুরু শেওয়ার ছিলেন তুরস্কের শেষ সুলতান (অটোমান সাম্রাজ্য) দ্বিতীয় আবদুল মজিদের কন্যা। ২০০০ সালের গোড়ার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়েছিল। ১৯৫৪-র ১৪ জুন মুকররম জাহ্-কে যৌবরাজ্যে অভিষিক্ত করেছিলেন তাঁর ঠাকুরদা। সেই থেকে তাঁকেই হায়দরাবাদের অষ্টম এবং শেষ নিজাম বলে গণ্য করা হয়। ভারত সরকারও তাঁর অভিষেককে আদর্শগতভাবে সিলমোহর দেয়। তবে ১৯৭১ সালে ভারত সরকার রাজতন্ত্র ও রাজমর্যাদার অবলুপ্তি ঘটানোর আগে পর্যন্ত তাঁকেই হায়দরাবাদের যুবরাজ বলে মর্যাদা দেওয়া হতো।
নিজাম তাঁর ছেলেকে ‘গদ্দি’ বা উত্তরাধিকার না দিয়ে নাতিকেই তা দিয়েছিলেন। মুকররম জাহ্ প্রথমে তুরস্কের রাজকুমারী এসরাকে বিবাহ করেন। তাঁদের এক ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছে। পরে তিনি অস্ট্রেলিয়ার হেলেন সিমন্সকে বিয়ে করেন। তাঁদের একটি ছেলে রয়েছে। পরে তিনি মানোলিয়া ওনুর এবং শেষবার জামিলা বোলারৌসকে বিবাহ করেন।
হায়দরাবাদের প্রবীণ সাংবাদিক ও কলমচি মির আয়ুব আলি খান হিন্দুস্তান টাইমসে জানান, মুকররমের হায়দরাবাদে প্রভূত ধনসম্পত্তি আছে। যেমন, ফলকনুমা প্রাসাদ, খিলাওয়াত প্রাসাদ, রাজকোঠি এবং চিরন প্রাসাদ। তাঁর এই সম্পত্তির দেখভাল করেন প্রথম স্ত্রী। ফলকনুমা প্রাসাদে তিনি মাঝেমধ্যেই এসে থাকেন। যে প্রাসাদ এখন তাজ ফলকনুমা প্যালেস নামে হোটেল হয়েছে।