নয়াদিল্লি: আসন্ন লোকসভার নির্চানের আগেই বেশ কয়েকটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। সেই সব রাজ্যের নিজেদের জয়রথ অব্যহত রাখতে নির্বাচনী প্রচারে ত্রুটি রাখছে না গেরুয়া শিবির। রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনেও এনডিএ প্রার্থী-রা জয় পেয়েছেন বিরোধীদের দাবি সিবিআই (Central Bureau of Investigation)-ইডি (ED) দিয়ে তাদের একেবারে কোণঠাসা করা চেষ্টা। এমনটা দেখলে মনে হতেই পারে, ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে (Lok Sabha Election 2024) ফের নরেন্দ্র মোদির জয়টা সহজই হবে।
জোটের বিষয়ে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারই (Nitish Kumar) বিভিন্ন রাজ্যভিত্তিক দলগুলির সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছেন। সমর্থন করছে কংগ্রেস দলও। বিরোধী দলগুলির জোট বাঁধার প্রচেষ্টায় বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার দেখা করেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের সঙ্গে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গে বৈঠক করেছেন নীতিশ কুমার। এর আগে তামিলনাডুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্তালিনের সঙ্গে কথা হয়েছে মমতা ব্যানার্জীর। আবার উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবও দেখা করে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে।
আগেই দেখা গেছে বিজেপি-বিরোধী দলগুলি একজোট হওয়ার চেষ্টা করে, কিন্তু কোন-না-কোনভাবে তা ব্যর্থ হয়। ব্যর্থতার মূল কারণ হয়ে ওঠে বিরোধী জোটের নেতৃত্ব দেওয়া নিয়েই। বেশ কিছুমাস আগে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর দাবি করে ছিলেন ২০২৪ বিপুল সাফল্যের সঙ্গে কেন্দ্রের ক্ষমতায় আসবেন মোদি। বিরোধী জোট কাজ করবে না। একসঙ্গে চা খেলে কিংবা মধ্যাহ্নভোজন করলে অথবা রাজনৈতিক দলের নেতার একমঞ্চে এলেও বিরোধী জোট তৈরি হয়ে যাবে না। কারণ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির আদর্শ আলাদা। তাই এই জোট কার্যকরী হবে না আগামিদিনে। ভোটকুশলী কংগ্রেসের ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র সাফল্য নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। দীর্ঘ পদযাত্রার পর কংগ্রেস নির্বাচনী সাফল্য কতটা পাবে, তার উপরেই নির্ভর করবে ভারত জোড়ো যাত্রার সাফল্য।
আরও পড়ুন:Lok Sabha Vote 2024 | মোদিকে হটাতে ৫০০ আসনে ‘একের বিরুদ্ধে এক’ প্রার্থীর প্রস্তাব, সম্ভাবনা কত দূর
হিন্দুত্ব, জাতীয়তাবাদ এবং উন্নয়ন মডেল বিজেপি এই অস্ত্রেই আগামী নির্বাচনী লড়াইয়ে নামবে। রাজনৈতিক মহলের মতে, হিন্দুত্বের স্লোগান ছাড়াও, মোদি সরকার গরিব কল্যাণে বেশ কয়েকটি প্রকল্প এনেছে। এটি বিনামূল্যে রেশন, গ্যাস সিলিন্ডার এবং কৃষক এবং অন্যান্য সুবিধাভোগীদের সরাসরি নগদ স্থানান্তর যা বিভিন্ন নির্বাচনে বিজেপির যাত্রাকে মসৃণ করেছে। প্রযুক্তিগত অগ্রগতির কারণে সরাসরি সেই সুবিধাগুলি সাধারণ মানুষ পাচ্ছে। সমাজের দুর্বল অংশের জন্য কল্যাণমূলক পরিকল্পনা আগে কখন ছিল। তবুও এটা সত্য যে অতীতেও এমন অনেক উদাহরণ আছে অনেক দানক্ষয়রাতি, কল্যাণমূলক কাজ, উন্নয়নের জোয়ার এনেও মানুষ চায়নি বলে সরকার পড়ে গেছে।
রাজনৈতিক বিশেজ্ঞরা মনে করছেন, বিরোধীরা নির্বাচনে, বেকারত্ব, মুদ্রাস্ফীতি, কৃষক আন্দোলনকে হাতিয়ার করেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে নামবে। অন্যদিকে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো নিজ নিজ রাজ্যে একাধিক দুর্নীতি নাম জড়িয়েছে। সেই সব দলের নেতা মন্ত্রীরা বর্তমানে জেল বন্দি।
আবার এর মধ্যেই বিহারে নীতীশ কুমার এনডিএ ছেড়েছেন, শিরোণি অকালি দল-একের পর এক দল এনডিএ ছাড়ায় বিজেপি-র লড়াই কঠিন হচ্ছে। দীর্ঘ কৃষক আন্দোলন সহ বেশ কিছু বদলের পর ভারতীয় রাজনীতিতে ২০২৪ লোকসভার খেলা পাল্টে যেতেও পারে। অন্তত নির্বাচনী সমীক্ষা তেমনই বলছে। যদিও নির্বাচনের আগে সমীক্ষা তেমন কিছুর ইঙ্গিত দেয় না। ভোটপ্রচারে নরেন্দ্র মোদির-র (Narendra Modi) ব্যক্তি ক্যারিশ্মা খেলা ঘুরিয়ে দিতে পারে। কিন্তু শেষ রায় দেবে জনতা জর্নাদন, মত রাজনৈতিক বিশেজ্ঞদের।