নয়াদিল্লি: নতুন সংসদ ভবনে তামিলনাড়ুর ঐতিহ্যবাহী ‘সেঙ্গল’ বা রাজদণ্ড স্থাপন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাজনা-বাদকরা যা প্রচার করছেন তাকে মিথ্যা বলে পালটা দিলেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। শুক্রবার এক টুইটে রমেশ বলেন, তামিল রাজনীতিতে মাটিতে হারিয়েছে বিজেপি। তাই ফের সেখানে পা ফেলতে মিথ্যা ঢক্কানিনাদ করে বেড়াচ্ছে তারা। সেঙ্গলের সঙ্গে ব্রিটিশ রাজের কাছ থেকে ক্ষমতা হস্তান্তরের অনুষ্ঠানের কোনও সম্পর্ক ছিল না, নেইও। পুরোপুরি ভুয়ো প্রচার করে বেড়াচ্ছে শাসকদল।
আগামী ২৮ মে সংসদের নতুন ভবনে স্পিকারের চেয়ারের পাশে স্থাপন করা হবে সেঙ্গল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান কংগ্রেস সহ ২০টি বিরোধী দল বয়কট করেছে। অন্যদিকে, ২৫টি দল উপস্থিত থাকবে বলে জানিয়ে দিয়েছে। জয়রামের দাবি, সেঙ্গলের সঙ্গে লর্ড মাউন্টব্যাটেন, সি রাজাগোপালাচারী এবং জওহরলাল নেহরুর ক্ষমতা হস্তান্তরের কোনও প্রতীকী সম্পর্কের তথ্যপ্রমাণ নেই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং তাঁর ঢক্কাবাদকরা একে তামিলনাড়ুতে জমি হারানোর মলম হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টা করছেন।
আরও পড়ুন: Migrant Labour | কাজ নেই, রাজ্য ছাড়ছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা
গতকাল বিজেপি অভিযোগ তুলেছিল, হিন্দু ঐতিহ্যকে অসম্মান করেছে কংগ্রেস। এরকম একটি পবিত্র দণ্ডকে মিউজিয়ামে ফেলে রেখে অবমাননা করা হয়েছে। এর জবাবে রমেশ বলেন, মোদি ও তাঁর ব্রিগেডের কাজই হল প্রকৃত বাস্তব থেকে নজর ঘুরিয়ে অন্যত্র আলো ফেলা। মূল প্রশ্ন হচ্ছে কেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে দিয়ে সংসদের নতুন ভবনের উদ্বোধন করানো হচ্ছে না? তার জায়গায় সেঙ্গল নিয়ে রাজনীতি করছে বিজেপি। জয়রাম বলেন, এসব তথ্য যা প্রচার করা হচ্ছে তা সহজ ও স্পষ্ট ভাষায় মিথ্যা। যা গুটিকয় মানুষের মস্তিষ্কপ্রসূত এবং প্রচার সর্বস্ব সংবাদমাধ্যমের কাজ। খোদ রাজাজির দুই সুযোগ্য ছাত্র এই কথা শুনে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।
কী জানেন এই সেঙ্গল বা আয়ূধ বা রাজদণ্ড?
তাহলে জেনে নিন এর ইতিহাস ও গুরুত্ব। সেটা ১৯৪৭ সালের ১৪ অগাস্ট। ব্রিটিশ রাজশক্তির থেকে ভারতের স্বাধীনতা হস্তান্তরের রাত। রাত পৌনে এগারোটা নাগাদ তামিলনাড়ুর মানুষ পন্ডিত জওহরলাল নেহরুর হাতে তুলে দিলেন এই সেঙ্গল। যা প্রাচীনকালে চোল রাজবংশের ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হতো। দীর্ঘদিন এলাহাবাদের সংগ্রহশালায় মুখ বুজে পড়ে থাকার পর এবার ইতিহাসের পাতা থেকে সেঙ্গল ঠাঁই পেতে চলেছে নয়া সংসদ ভবনে। সেই সেঙ্গল নিয়েই উদ্বোধন অনুষ্ঠানের মতো বিতর্ক দানা বেঁধে উঠল।