ওয়েনাড়: শনিবারের পর রবিবার, মোদি সরকারকে ঝেড়েমুছে আক্রমণ করলেন রাহুল গান্ধী। সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশের পর সাংসদ পদ ফিরে পেয়ে দুদিনের জন্য নিজের কেন্দ্রে এসেছেন কংগ্রেস নেতা। এদিন আদিবাসীদের অধিকার নিয়ে বিজেপিকে তুলোধনা করেন। আদিবাসীদের ভাই ও বোন সম্বোধন করে রাহুল বলেন, এঁরাই হলেন দেশের প্রকৃত মালিক। জমি-জঙ্গলের উপর আদিবাসীদের অধিকার কায়েমের উপর জোর দেন তিনি। উচ্চবর্ণের হিন্দুত্ববাদী পার্টি বিজেপির দেওয়া বনবাসী নামকরণেরও নিন্দা করেন। বলেন, এ ধরনের নাম বিকৃত মানসিকতার পরিচয়।
এদিন এখানে একটি ক্যানসার হাসপাতালে বিদ্যুৎ পরিষেবার একটি ইউনিটের উদ্বোধন করেন সাংসদ। সেখানে তাঁর সাংসদ তহবিল থেকে ৫০ লক্ষ টাকা দিতে পারায় নিজেকে ধন্য বলে মনে করেন তিনি। ওই অনুষ্ঠানে রাহুল আরও বলেন, আদিবাসী এমন একটা শব্দ, যার অর্থ হল এই জমির প্রকৃত অধিবাসী। আদিবাসী মানে একটি নির্দিষ্ট সংস্কৃতি, একটি বিশেষ সম্পর্ক। আদিবাসী মানে আমাদের দেশের প্রকৃত অধিবাসী ভাই-বোনদের প্রতি একটা শ্রদ্ধার সম্পর্ক। তাই স্বাভাবিকভাবেই আমাদের দেশের আদি বাসিন্দাদেরই এই জমি-জঙ্গলের উপর প্রথম পূর্ণ অধিকার আছে। তাঁদের সেই অধিকার দেওয়া উচিত।
আরও পড়ুন: ১৫ অগাস্ট মণিপুর বনধ, হিংসার আঁচ পড়তে পারে লালকেল্লাতেও, নিরাপত্তা জোরদার
আদিবাসী ভাইবোনদের ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, আইনজীবী, ব্যবসায়ী হওয়ার উৎসাহ দেন রাহুল। তাঁদের কম্পিউটার শিখতে বলেন। কিন্তু, জঙ্গলের উপর যে আপনাদের পূর্ণ অধিকার আছে এবং শুধু আপনাদেরই আছে সেই অধিকার অর্জন করাও জরুরি। জমির অধিকার বুঝে নিতে হবে। জঙ্গলের সম্পদের অংশীদার আপনারাও, বলেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি।
বিজেপিকে আক্রমণ করে বলেন, আপনাদের যারা বনবাসী বলে ডাকে, তারা আপনাদের এদেশের আদি বাসিন্দা বলেই অস্বীকার করে। আপনাদের জঙ্গলের অধিকার ছিনিয়ে নিতে চায় তারা। বনবাসী মানে ওরা বলতে চায়, আপনারা বনেই থেকে যান, আর কোনওদিন জঙ্গলের বাইরে মুক্তি নেই আপনাদের। এটা কিছুতেই মেনে নেওয়া উচিত নয়। বনবাসী শব্দে আপনাদের ইতিহাসকে ধ্বংস করার অর্থ নিহিত আছে। আপনাদের ঐতিহ্য-পরম্পরা, সংস্কৃতি, এদেশের মূল স্রোতের সঙ্গে আপনাদের বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা বনবাসী শব্দে লুকিয়ে আছে। রাহুল বলেন, ইদানীং পরিবেশ নিয়ে খুব আদিখ্যেতা হচ্ছে। অথচ আমরা কয়েকশো বছর ধরে জঙ্গলকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছি। কিন্তু একমাত্র আপনারাই পাঁচ হাজার বছর ধরে প্রকৃতিকে দেবতাজ্ঞানে পুজো করে চলেছেন। প্রকৃতির প্রকৃত রক্ষক তো আপনারাই। আপনাদের ছেলেমেয়েদেরও সেরা শিক্ষা, চিকিৎসা, চাকরি পাওয়ার অধিকার আছে। আর সে কারণে আমরা চিরকাল আপনাদের পাশে থাকব।