নয়াদিল্লিঃ সম্পূর্ণ নিয়মবিরুদ্ধভাবে বুধবার লোকসভার স্পিকার নির্বাচন হল বলে অভিযোগ তুলল ইন্ডিয়ার অন্যতম শরিক তৃণমূল। দলের সাংসদ এবং সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন ভোটপর্ব মিটে যাওয়ার পর সংসদ চত্বরে দাঁড়িয়ে বলেন, বিরোধীদের অবজ্ঞা এবং উপেক্ষা করে একতরফাভাবে স্পিকার নির্বাচন করা হল। তিনি প্রশ্ন তোলেন, প্রয়োজনীয় সংখ্যা ছিল না বলেই কি সরকার ভোটাভুটিতে গেল না? সংসদের নিয়ম উল্লেখ করে তৃণমূল সাংসদ বলেন, যদি একজন সদস্যও ভোটাভুটি চান, তবে তা করতে দেওয়া বাধ্যতামূলক। অভিষেকের দাবি, সংসদের ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, কংগ্রেস-সহ একাধিক বিরোধী সাংসদ ভোটাভুটি চেয়েছেন। কিন্তু প্রোটেম স্পিকার কারও কথাকেই গ্রাহ্য করেননি। তিনি বলেন, এই সরকার অন্যায়ভাবে, অবৈধভাবে, অসাংবিধানিকভাবে চলছে। সরকার পতনের অপেক্ষায়।
তৃণমূল এই কথা বললেও কংগ্রেস কিন্তু ভিন্নমত পোষণ করেছে। প্রধান বিরোধী দলের বক্তব্য, তারা ভোটাভুটির কোনও প্রস্তাব দেয়নি। ভোটপর্ব মিটে যাওয়ার পর নিজের এক্স হ্যান্ডেলে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা লেখেন, ইন্ডিয়া জোটের শরিকরা গণতান্ত্রিক পদ্ধতি মেনে স্পিকার হিসেবে কংগ্রেস সাংসদ কে সুরেশের নাম প্রস্তাব করে। তা নিয়ে ধ্বনিভোট করে। ইন্ডিয়া জোট ভোটাভুটির প্রস্তাব দিতেই পারত। কিন্তু তারা তা দেয়নি। কারণ ইন্ডিয়া লোকসভায় ঐকমত্য এবং সহযোগিতার পরিবেশ বজায় রাখতে চেয়েছিল লোকসভায়।
আরও পড়ুন: ব্যারাকপুরের এক ব্যবসায়ীকে তোলা চেয়ে হুমকি ফোন
লোকসভার নিয়ম হল, ধ্বনিভোটে উভয় পক্ষের আওয়াজ একই রকমের জোরালো হলে ভোটাভুটি হতে পারে। কিন্তু প্রোটেম স্পিকার ভর্তৃহরি মহতাব জানিয়ে দেন, শাসকপক্ষের আওয়াজের জোর বেশি ছিল। বিড়লার পক্ষে মতামত বেশি। তাই তিনি জয়ী হয়েছেন। অভিষেক প্রশ্ন তোলেন, হেরে যাওয়ার ভয়েই কি সরকার ভোটাভুটির প্রস্তাব এড়িয়ে গেল?
বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের তরফে কংগ্রেস নেতারা বলেছিলেন, প্রথা অনুসারে লোকসভার ডেপুটি স্পিকার পদটি বিরোধীদের দিতে হবে। তাহলেই তাঁরা স্পিকার পদে ওম বিড়লাকে মেনে নেবেন। নতুবা বিরোধীরা স্পিকার পদে প্রার্থী দেবে। কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী মঙ্গলবার অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজনাথ সিং কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গেকে বিষয়টি জানাবেন বলেও তাঁকে আর ফোন করেননি। কংগ্রেস সভাপতিকে অপমান করা হয়েছে। এরপরই কংগ্রেস তাদের প্রবীণ সাংসদ কে সুরেশের মনোনয়নপত্র জমা দেয়।
এদিকে কংগ্রেসের আচরণে ক্ষুব্ধ হয় তৃণমূল। অভিষেক বলেন, স্পিকার নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে কংগ্রেস কারও সঙ্গে আলোচনা করেনি। তারা একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বলতে বাধ্য হচ্ছি, এটা দুর্ভাগ্যজনক। তারপরও মঙ্গলবার সংসদে রাহুল এবং অভিষেক পাশাপাশি বসে আলোচনা করেন। সন্ধ্যায় রাহুল যোগাযোগ করেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তাতেই দুই তরফের সম্পর্কে বরফ গলে। মমতাও তার আগে ঘনিষ্ঠ মহলে কংগ্রেসের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বলে তৃণমূল সূত্রের খবর।
দেখুন আরও অন্যান্য খবর: