নয়াদিল্লি: আফগানিস্তানে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ৬.৬ মাত্রার ভূমিকম্প (Earthquake) হয়। আর ওই ভূমিকম্পে দিল্লি-এনসিআর অঞ্চল (Delhi-NCR Region) সহ উত্তর ভারতের বেশ কিছু জায়গা কেঁপে ওঠে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, প্রায় ৪৫ সেকেন্ড ধরে তিন দফায় কম্পন অনুভূত হয়। মঙ্গলবার রাতের পর বুধবার বিকালে আবারও রাজধানী শহর কেঁপে উঠল। এদিন বিকেলে রাজধানীতে ২.৭ মাত্রার কম্পন অনুভূত হয়। কম্পনের কেন্দ্র ছিল পশ্চিম দিল্লি। বিশেষজ্ঞরা মহলের দাবি, এই কম্পন মঙ্গলবার রাতের কম্পনের আফটার শক।
মঙ্গলবার আফগানিস্তানে ভূমিকম্পের এতটাই তীব্রতা ছিল যে, সে প্রভাব শুধু ভারতেই নয়, পাকিস্তান (Pakistan), কাজাখস্তান (Kazakhstan), তুর্কমেনিস্তান (Turkmenistan), তাজিকিস্তান (Tajikistan), উজবেকিস্তান (Uzbekistan), চীন (China), আফগানিস্তান (Afghanistan) এবং কিরগিজস্তানে (Kyrgyzstan) যথেষ্ট কম্পন হয়। ভারতে দিল্লি-এনসিআর, উত্তরাখণ্ড, পাঞ্জাব, কাশ্মীর সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে কম্পনের ফলে আতঙ্কের পরিস্থিতি তৈরি হয়। ওই অঞ্চলে বসবাসকারীরা তাঁদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে ফাঁকা জায়গায় জড় হন। ভূমিকম্পের উদ্বেগ প্রকাশ করে টুইট করেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চল। সেখানে ভূমিকম্পের গভীরতা ছিল ১৮০ কিলোমিটার। ওয়াদিয়া ইনস্টিটিউট অফ হিমালয়ান জিওলজির বিজ্ঞানী ডঃ অজয় পল জানিয়েছেন, যে কোনও সময় হিমালয় অঞ্চলে অনেক বেশি মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, দুঃখজনক বিষয় হল ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব হয় না। টেকটোনিক প্লেটগুলি যখন শক্তি ছেড়ে দেয় তখনই ভূমিকম্প হয়। ফলে জনসধারণকে সতর্ক করে দেওয়ার উপায় থাকে না।
আরও পড়ুন: Russia Ukraine War Lessons | রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে ভারত শিক্ষা নিয়েছে
উল্লেখ্য, এই বছর শুধুমাত্র মার্চ মাসেই ভারতে এখনও পর্যন্ত ৬ বার ভূমিকম্প হয়েছে। মার্চের ২ তারিখ, নেপাল ছিল ভূমিকম্পের এপিসেন্টার। কম্পের মাত্রা ৪.১। ৩ তারিখের ভূমিকম্পে অরুণাচল প্রদেশ ছিল এপিসেন্টার, কম্পনের মাত্রা ৪.১। এরপর ৭ তারিখ এপিসেন্টার ছিল আন্দামান নিকোবর, কম্পনের মাত্রা ৪.৯। ৮ তারিখে গিলগিট বালতিস্তান ছিল ভূমিকম্পের এপিসেন্টার, কম্পনের মাত্রা ৪.০। মার্চের ১২ তারিখে ভূমিকম্পের এপিসেন্টার ছিল মনিপুরের ওয়াংজিং থেকে ৭৬ কিলোমিটার ভিতরে সেখানে কম্পনের মাত্রা ছিল ৪.৮। এরপর ২১ তারিখে কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.৮, যার এপিসেন্টার ছিল আফগানিস্তান।২২ তারিখ ফের কেঁপে উঠল রাজধানী এদিন কম্পনের মাত্রা ছিল ২.৭। তবে বিশেষজ্ঞরা মহলের মতে, ২২ তারিখের কম্পনটি ২১ তারিখের কম্পনের আফটার শক।
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার ভূমিকম্পে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ১২ জন নিহত।পাকিস্তানে আহতের সংখ্যা ৪৪। তবে ভারতে এখনও পর্যন্ত কোনও হতাহতের খবর নেই।