দিল্লি: ১৯৮৪-র শিখ-বিরোধী দাঙ্গায় অভিযুক্ত বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা জগদীশ টাইটলারের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করল সিবিআই। শনিবার দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে চার্জশিট জমা দিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পর শিখ বিরোধী দাঙ্গায় নয়াদিল্লির পুল বাঙ্গাশ অঞ্চলে তিন ব্যক্তির মৃত্যু হয়। ওই হত্যাকাণ্ডের পিছনে এই কংগ্রেস নেতা ষড়যন্ত্রকারী ছিলেন বলে অভিযোগ। দুষ্কৃতীদের উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
শিখ বিরোধী দাঙ্গার ঘটনার তদন্তের জন্য ভারত সরকার ২০০০ সালে বিচারপতি নানাবতী তদন্ত কমিশন গঠন করেছিল। কমিশনের রিপোর্ট বিবেচনা করার পর, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক তৎকালীন সাংসদ এবং অন্যান্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য সিবিআইকে নির্দেশ দেয়। এরপর ২০০৫ সালে আরও একটি মামলা রুজু হয়। যেখানে দিল্লির আজাদ মার্কেটে সর্দার ঠাকুর সিং, সর্দার বাদল সিং এবং সর্দার গুরুচরণ সিং নামে তিন ব্যক্তিকে পুড়িয়ে মারা হয়। সূত্রের খবর, সিবিআই তদন্ত করতে গিয়ে প্রমাণ পেয়েছে যে ১৯৮৪ সালের ১ নভেম্বর অভিযুক্ত কংগ্রেস নেতা আজাদ মার্কেটের গুরুদুয়ারা পুল বাঙ্গাশে বিক্ষোভকারীদের উস্কানি দেন, যার ফলে তিনজনকে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল। এছাড়াও দোকানপাটও পুড়িয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা।
আরও পড়ুন: Adhirranjan Choudhury | অভিষেককে সিবিআইয়ের ডাকা দিদি মোদির লুকোচুরি খেলা বললেন অধীর
মাসখানেক আগেই দিল্লিতে সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে যান জগদীশ। সেখানে তাঁর কণ্ঠস্বর পরীক্ষা করা হয়। সিবিআই নতুন প্রমাণ পেয়েছে বলে খবর মেলে। যদিও ওইদিন ল্যাবরেটরি থেকে বেরোনোর সময় মেজাজ হারান তিনি। টাইটলার বলেন, ‘আমি ফাঁসিতে চড়তে প্রস্তুত, যদি আমার বিরুদ্ধে একটিও প্রমাণ মেলে। কী করেছি আমি? এর সঙ্গে ১৯৮৪ সালের দাঙ্গা সংক্রান্ত মামলার কোনও যোগ নেই। অন্য একটি মামলায় আমার কণ্ঠস্বরের নমুনা চাওয়া হয়েছিল।’
উল্লেখ্য, ইন্দিরা গান্ধী তাঁর দুই শিখ দেহরক্ষীর হাতে নিহত হওয়ার পরই দেশজুড়ে শিখ বিরোধী দাঙ্গা শুরু হয়। সরকারি মতে, প্রায় তিন হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। কিন্তু বেসরকারি মতে, শুধু দিল্লিতেই তিন হাজার মানুষ মারা গিয়েছেন। গোটা দেশে মারা গিয়েছেন প্রায় আট হাজার।