কলকাতা: বীণা দাস ২৪ অগাস্ট ১৯১১ সালে জন্ম গ্রহন করেন। ২৬ ডিসেম্বর ১৯৮৬ সালে তাঁর জীবনাবসান ঘটে। তিনি ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিকন্যা।
বীণা দাস ১৯১১ সালে নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরে জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু তাঁদের আদি বাড়ি ছিল চট্টগ্রামে। তাঁর পিতা ছিলেন ব্রাহ্ম সমাজী পণ্ডিত ও দেশপ্রেমিক বেণী মাধব দাস ও মাতার নাম সরলা দাস। তাঁর দিদি ছিলেন বিপ্লবী কল্যাণী দাস। পিতার আদর্শে প্রভাবিত হয়ে রাজনীতিতে যোগ দেন। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামী যতীশ ভৌমিকের সাথে তার বিবাহ হয়। কলকাতায় তিনি বেথুন কলেজে পড়াশুনা করেছেন। পরবর্তিতে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন।
আরও পড়ুন: দেশাত্মবোধ বিষয়ক এই বইগুলো পড়ে নিন স্বাধীনতা দিবসের আগেই
তারপর তিনি রাজনৈতিক জীবনে প্রবেশ করেন। বীণা দাসের পরিবার রাজনৈতিক পরিবার। অসহযোগ ও জাতীয় আন্দোলনের যোগ দেওয়ার কারণে তার দাদা কারাবরণ করেন। ছাত্রাবস্থায় তিনি রাজনৈতিক মনস্ক হয়ে ওঠেন। সে সময় যুগান্তর দল এর কতিপয় সদস্যের সাথে তার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয়। ১৯২৮ সালে সাইমন কমিশন বয়কট করার জন্য বেথুন কলেজের ছাত্রীদের নিয়ে লতিকা ঘোষের সঙ্গে উঠে-পড়ে লেগেছিলেন।
১৯৩০ সালে ডালহৌসির অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জন্য ছোট ছোট দলের নেতৃত্ব দেন এবং গ্রেপ্তার হন। বীণা দাস ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র বিপ্লবের নেত্রী ছিলেন এবং ১৯৩২ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এর সমাবর্তনে বাংলার ব্রিটিশ গভর্নর স্ট্যানলি জ্যাকসনের উপর পিস্তল দিয়ে গুলি চালান। এইসময় জ্যাকসনকে রক্ষা ও বীণা দাসকে ধরে ফেলার কৃতিত্ব অর্জন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্যার হাসান সোহরাওয়ার্দী। এই হত্যা প্রচেষ্টা চালানোর কারণে ৯ বছর কারাবরণ করেন বীণা দাস। ১৯৪১ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ কলকাতার কংগ্রেসের সম্পাদিকাও ছিলেন তিনি। ১৯৪৬ থেকে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত তিনি পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য ছিলেন।
বীণা দাসের শেষ জীবন বেদনাদায়ক ও অত্যন্ত মর্মান্তিক। স্বামীর মৃত্যুর পরে তিনি হরিদ্বার চলে যান। ১৯৮৬ সালের ২৬ ডিসেম্বর ঋষিকেশে সহায় সম্বলহীন হয়ে পথপ্রান্তে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।