আগরতলা: প্রথমে ১৪৪ ধারা। তার পর করোনা টেস্ট। যেন তেন প্রকারে অভিষেকের ত্রিপুরা সফর আটকাতে মরিয়া বিপ্লব দেব সরকার। করোনার অজুহাত দেখিয়ে দীর্ঘসময় ত্রিপুরার বিস্তীর্ণ এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে রাখা হয়েছিল। যে কারণে বাতিল হয়েছিল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের র্যালি। জমায়েতের নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হলেও এ বার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আগরতলার সভার ২৪ ঘণ্টা আগে করোনা টেস্ট বাধ্যতামূলক করল ত্রিপুরা সরকার।
৩১ অক্টোবর দুপুরে আগরতলায় অভিষেকের জনসভা রয়েছে। তার আগে ২৯ অক্টোবর ত্রিপুরা সরকারের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ সহ বেশ কয়েকটি রাজ্য থেকে রেল-সড়ক-বিমান পথে ত্রিপুরায় আসতে হলে করোনা টেস্ট বাধ্যতামূলক। আজ, শনিবার থেকেই এই নিয়ম লাগু করা হয়েছে। আটিপিসি-আর ছাড়াও ট্রু-নাট, সিবিনাট টেস্ট গ্রাহ্য হবে বলে জানানো হয়েছে। ৪৮ ঘণ্টা আগে টেস্ট করানো যাবে। ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ দেওয়া থাকলেও করোনা টেস্ট থেকে ছাড় মিলবে না।
আরও পড়ুন: ৩১ অক্টোবর ত্রিপুরা যাচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়
ত্রিপুরা সরকারের এই ফরমানের বিষয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে তৃণমূল। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বিপ্লব দেব সরকার ভয় পেয়েছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফর আটকানোর জন্যই রাতারাতি এই নির্দেশিকা জারি করেছে ত্রিপুরা সরকার। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ টুইটে একহাত নিয়েছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবকে। তিনি লিখেছেন, অভিষেকটা আটকাতে বিপ্লব দেব যতটা পরিশ্রম করছেন, তার কিছুটা মানুষের জন্য করলে ত্রিপুরাবাসী লাভবান হতো!
If @BJP4Tripura and @BjpBiplab put half the effort into governance that they do into keeping @AITC4Tripura out of the State, maybe Tripura's people would have had access to basic amenities by now. RT PCR test or not, come 2023, BJP will definitely be out of the State. pic.twitter.com/2ru6bWdC7m
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) October 30, 2021
ত্রিপুরা সরকারের এই নির্দেশিকা ঘিরে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। সারা দেশে যেখানে কোনও সফর করার ৭২ ঘণ্টা আগে করোনা টেস্ট করা যায়, সেখানে ত্রিপুরা সরকার এই সময়সীমা রেখেছে ৪৮ ঘণ্টা। প্রশ্ন উঠছে, কি কারণে এই সময়সীমা কমানো হয়েছে? শুক্রবার রাতে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। শনিবার থেকেই তা লাগু করা হয়েছে। অধিকাংশ ল্যাব শনিবার বন্ধ থাকে। কীভাবে টেস্ট করাবেন সাধারণ মানুষ, সেই প্রশ্নও উঠছে।
আরও পড়ুন: প্রথম আলাপেই পোপকে আলিঙ্গন, ভারতে আসার আমন্ত্রণ মোদির
অভিষেকের সভা শুরু দুপুর ১-টায়। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে বাংলা থেকে আরও কিছু মানুষ ত্রিপুরায় যাবেন, তা বলাই যায়। করোনা টেস্টের গেরো কাটিয়ে তাঁরা আদৌ সঠিক সময়ে সভাতে পৌঁছতে পারবেন কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। ত্রিপুরা সরকারের তরফে বিমানবন্দরে করোনা টেস্টের ব্যবস্থা রাখার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও আদৌ তা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে কি না তা নিয়েও জটিলতা রয়েছে।
জটিলতা দেখা দিয়েছে অভিষেকের সভাস্থল নিয়েও। আগরতলা রবীন্দ্র ভবনের সামনে রবিবার দুপুর ১টায় সভা করার কথা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তৃণমূলের তরফে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, কোভিড বিধি মেনে সভা করা হবে। সর্বোচ্চ ৭০০ জন উপস্থিত থাকবেন। প্রাথমিকভাবে সভার অনুমতি দিলেও করোনার দোহাই দিয়ে শনিবার তৃণমূলকে সভাস্থল পরিবর্তনের কথা বলে পুলিশ। তৃণমূলকে চিঠি দিয়ে ত্রিপুরা পুলিশ জানায়, সভাস্থল পরিবর্তন করে ফের জানাতে হবে।