কলকাতা: দরজায় কড়া নাড়ছে পুজো (Pujo)। পাড়ায় পাড়ায় সেজে উঠছে মণ্ডপ। কোথাও থিম পুজোর ভিড় তো কোথাও বারোয়ারি। আবার কোথাও সনাতনী রূপেই হয় মায়ের আরাধনা। তবে এই বারোয়ারি পুজোর রমরমার মধ্যেও বাংলার আনাচকানাচে লুকিয়ে রয়েছে এমন কিছু পুজো, যা মনে করিয়ে দেয় কয়েকশো বছরের ঐতিহ্যের কথা। কালের নিয়মে জৌলুস কমলেও গ্রামবাংলায় এখনও পুজো হয় শতাব্দীপ্রাচীন সব রীতিনীতি মেনে। তেমনই এক পুজো হল বীরভূমের বানিওর গ্রামের দুর্গা পুজো (Durga Pujo 2023)। প্রায় ৩০০ বছরের পুরনো। আজও এই পুজোয় মেতে ওঠেন এলাকার বাসিন্দারা।
১৭১৫ সালে বানিওর গ্রামে পুজো শুরু করেন রত্নেশ্বর রায়চৌধুরী। নলহাটি ১ নম্বর ব্লকের বানিওর গ্রামের জমিদার ছিলেন তিনি। শোনা যায়, দীর্ঘদিন নিঃসন্তান ছিলেন তিনি। এরপর তিনি দেবী দুর্গার (Devi Durga) কাছে মানত করেন। অবশেষে মা দুর্গার (Maa Durga) আশির্বাদে জমিদারের পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। প্রাচীন রীতি মেনে বোধনের দিন থেকেই মায়ের ঘট পুজো শুরু হয়ে যায়। সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী ও দশমী এই ৪ দিন রীতি মেনেই পুজো হয়। জনগনের মধ্যে কথিত আছে, সন্ধ্যা প্রদীপ দেখাতে আসা এক গৃহবধূকে খেয়ে ফেলেছিলেন মা দুর্গা। অনেক খোঁজাখুঁজি করার পর দেখা যায় মায়ের মুখে গৃহবধূর কাপড়ের এক টুকরো অংশ লেগে আছে। এরপর গ্রামের মানুষ মাকে মানুষখাকি বলতে শুরু করে। তারপর থেকেই জন্য দড়ি দিয়ে বাঁধার রীতি চালু হয়েছে।
আরও পড়ুন: নবরাত্রিতে ভুলেও করবেন না এই কাজ , ক্ষুব্ধ হবেন মা দুর্গা
স্থানীয়দের বিশ্বাস, দেবী মা বাঁধা না থাকলে বাইরে বেরিয়ে ফের কোনও মেয়েকে খেয়ে ফেলতে পারেন। তাই আজও দেবীকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয় এই গ্রামে। সেই পুরনো রীতির আজও চলে আসছে। এখানে দুর্গাকে পাটের দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। দড়ি বাঁধা অবস্থায় পুজিত হন মা।এই পুজোর রীতি মেনে দড়ি বাঁধা ও বাঁধন খোলার জন্য লোক নিযুক্ত করা হয়েছে। তাঁরাই বংশ পরম্পরায় মা দুর্গাকে দড়ি বেঁধে রাখেন। দড়ি বাঁধার জন্য বিগ্রহের পিছনে একটি গর্তে খুঁটি পুঁতে রাখা হয়েছে। দেবী দুর্গাকে সেই খুঁটি, জানালা এবং অন্যান্য পিলারে বেঁধে রাখা হয়। ষষ্ঠীর দিন ঘটস্থাপনের আগে মাকে দড়ি দিয়ে বাঁধা হয়। দশমীর দিন খোলা হয়। দশমীর দিন প্রতিমা বির্সজন করা হয় না। এখানে একাদশী দিন সকালে বির্সজন হয়।
দেখুন আরও অন্য খবর: