পুরুলিয়া ও কলকাতা:আদিবাসী কুড়মি সমাজের রেল ও রাস্তা রোকো আন্দোলনকে বেআইনি বলে ঘোষণা করল কলকাতা হাইকোর্ট। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্য সরকারকে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতি টিএস শিভগননমের ডিভিশন বেঞ্চ। আগামিকাল বুধবার থেকে কুড়মি (Kurmi Agitation) সমাজ অনির্দিষ্টকালের জন্য রেল ও রাস্তা অবরোধে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এর জন্য জঙ্গলমহলের বিভিন্ন জেলায় কুড়মিদের বিভিন্ন সংগঠন ব্যাপক প্রচারও চালিয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত কুড়মি আন্দোলনের নেতারা জানান, বুধবার সকাল থেকে অবরোধ শুরু হবেই। ইতিমধ্যে তাঁদের কাছে খবর আসে হাইকোর্ট এই আন্দোলনকে বেআইনি ও অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করেছে। তারপরই কুড়মি সমাজ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেয়। তবে কুড়মিদের কোনও কোনও সংগঠন আন্দোলনের প্রশ্ন অনড় রয়েছে। পুলিশ প্রশাসনও এবার প্রথম থেকে অনেক কড়া। যদিও দক্ষিণ-পূর্ব রেল দুপুরে বিজ্ঞপ্ত দিয়ে জানিয়ে দেয়, অবরোধ কর্মসূচির জন্য বেশকিছু ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। কিছু ট্রেনের যাত্রাপথ ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কুড়মি সমাজের এই আন্দোলনের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে দুটি জনস্বার্থ মামলা হয়। মামলাকারীদের বক্তব্য, আন্দোলন করার অধিকার সকলেরই আছে। কিন্তু অন্যের মৌলিক অধিকার এবং জনজীবন স্তব্ধ করে আন্দোলন করা যায় না। আদালতে মামলাকারীদের আবেদন, বিগত দুটি আন্দোলনের জেরে রেল ও সরকারের বিপুল আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। সাধারণ মানুষকেও হয়রানির মুখে পড়তে হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিবিআই অফিসারদের নির্লজ্জ, নির্বোধ বলে ফের কটাক্ষ
সেই মামলার সূত্রে আদালতের নির্দেশ, পরিস্থিতি সামলাতে রাজ্য সরকারকে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। প্রয়োজনে প্রতিবেশী রাজ্যের সাহায্য নিতে হবে। কারণ, এমন আন্দোলনের জেরে প্রতিবেশী রাজ্যগুলিরও ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে রাজ্য সরকার মনে করলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নিতে পারে। বলেও হাইকোর্ট জানিয়েছে।
তফসিলি উপজাতি মর্যাদার দাবিতে এর আগেও আন্দোলনে নেমেছে কুড়মি (Kurmi Agitation) সম্প্রদায়। তাদের দাবি, সারনা ধর্মের স্বীকৃতি, কুড়মিদের ভাষা কুড়মালিকে সংবিধানের অষ্টম তফসিলের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। গত বছরও দুর্গাপুজোর আগে সেপ্টেম্বর মাসে কুড়মিদের বিভিন্ন সংগঠন একই দাবিতে রেল ও সড়ক অবরোধের ডাক দিয়েছিল। পাঁচদিন ধরে চলে ওই অবরোধ। ফলে চূড়ান্ত নাকাল হতে হয় সাধারণ মানুষকে। এ বছরের এপ্রিল মাসে কুড়মি সমাজ আন্দোলনে নেমে ছিল।
পুলিশ আইন শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। চলছে বিভিন্ন রাস্তায় নাকা তল্লাশি। কুড়মি সমাজের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি সুজিত মাহাত বলেন, আমরা সাধারণ মানুষকে সমস্যায় ফেলতে চাই না। আমাদের দাবি পূরণ হলে সমাজের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।