ঢাকা: ফের নতুন করে অশান্তি ছড়াল ঢাকায়। বুধবারের পর বৃহস্পতিবারও অশান্ত পদ্মাপাড়ের দেশ। বাংলাদেশে (Quota Protest in Bangladesh) সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলন রণক্ষেত্রের রূপ নিয়েছে। আন্দোলনকারীরা বুধবার মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোল প্লাজায় আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। আন্দোলনে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আহত শতাধিক। এহেন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশজুড়ে সম্পূর্ণ বন্ধের ডাক দিল আন্দোলনকারীরা (Protestors Announce Complete ShutDown Bangladesh )। যার নির্যাস, দেশজুড়ে সর্বাত্মক অবরোধ চলবে। আন্দোলনকারীদের এই বন্ধকর্মসূচিকে ঘিরে সতর্কতা জারি করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আজ ঢাকায় বন্ধ রাখা হচ্ছে মার্কিন দূতাবাস।
ঢাকা, চট্টগ্রাম, রংপুর-সহ বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় ছড়িয়ে পড়েছে এই আন্দোলনের আঁচ। প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ জুড়ে সব বন্ধ রাখার ডাক দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। শুধুমাত্র হাসপাতাল ও কিছু জরুরি পরিষেবাকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমার বিশ্বাস, আমাদের ছাত্র সমাজ সর্বোচ্চ আদালত থেকে ন্যায় বিচার পাবে। তাদের হতাশ হবে না। আমি ঘোষণা করছি, যারা হত্যাকাণ্ড, লুটপাট চালিয়েছে, এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। তাঁদের বিরুদ্ধে বিচারবিভাগীয় তদন্ত হবে।
আরও পড়ুন: ৭ দিনের মধ্যে সপ্ত আশ্চর্য ভ্রমণ! গিনেস রেকর্ড এই ব্যক্তির
বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিববাড়ি মোড় এলাকায় বঙ্গবন্ধু টাওয়ারের সামনে তখন বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। পালটা পুলিশকে লক্ষ্য ইটবৃষ্টিও হয়। শহিদ মিনার, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও চানখারপুল মোড় পর্যন্ত দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনকারীদের উপর গুলি চালানোর অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে।
উল্লেখ্য, গত ১ জুলাই থেকে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। মঙ্গলবার তা চরম আকার ধারণ করে। আন্দোলনকারীদের উপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল আওয়ামি লিগের ছাত্রশাখাও হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ। উল্লেখ্য, ২০১৮-তেও সংরক্ষণ-বিরোধী আন্দোলনে বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে মোট ৫৬ শতাংশ সংরক্ষিত এবং ৪৪ শতাংশ সাধারণের জন্য নির্ধারিত ছিল। এই ৫৬ শতাংশের মধ্যে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের স্বজনদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারীদের জন্য ১০ শতাংশ, বিভিন্ন জেলার জন্য ১০ শতাংশ, জনজাতিদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ সংরক্ষিত পদ ছিল। ২০১৮-য় সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধার স্বজনদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারীদের জন্য ১০ শতাংশ এবং জেলা খাতে ১০ শতাংশ সংরক্ষণ বাতিল করে দেন। রাখা হয় শুধু জনজাতিদের ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের ১।
দেখুন ভিডিও