নয়াদিল্লি: সাল ২০২৫। কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ (Union Budget 2025) হবে ১ ফেব্রুয়ারি (1 February)। সমাজের একটা বড় অংশ হল মধ্যবিত্ত সমাজ। প্রতি বছরই বাজেট নিয়ে সবচেয়ে বেশি নজর দিয়ে থাকে মধ্যবিত্তরা (Middle Class Society)। সাধারণ মানুষের কাছে বাজেট বলতে কোন জিনিসের দাম বাড়ল, আর কোন জিনিসের দাম কমল। এ বছরের বাজেট তাদের সেই ভরসা পূরণ করতে পারবে কি? প্রশ্ন এখন সেটাই ঘুরপাক খাচ্ছে সাধারণ মানুষের কাছে।
২০২৫-২৬ সালের অর্থবর্ষের বাজেট পেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন (Union Finance Minister Nirmala Sitharaman) । প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Pm Narendra Modi) জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (NDA) সরকারের তৃতীয় পূর্ণাঙ্গ আর্থিক বাজেট পেশ হবে।
আরও পড়ুন: এবারও বাজেটে বাংলার প্রাপ্তির ভাণ্ডার শূন্যই থাকবে?
এবারের বাজেটে কি করদাতাদের সুবিধা (Benefits to taxpayers) হবে? মধ্যবিত্তদের সুবিধা দিতে এবার করমুক্ত আয়ের (Tax free income) সীমা বাড়াতে পারে কেন্দ্র সরকার। বর্তমানে স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন (Standard deduction) সহ ৭ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা আয়ের উপর কর দিতে হয় না। সরকার এই সীমা বাড়িয়ে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত করতে পারে। সরকার স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন সীমা ৭৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ লক্ষ টাকা করতে পারে।
কারণ গত বছরও ৫০ হাজার টাকার স্ট্যান্ডার্ড ডিকাশমের সীমা বাড়িয়ে ৭৫ হাজার টাকা করা হয়। ২০ শতাংশ প্রদানকারীদের জন্য কর আয়ের সীমা বাড়ানো হতে পারে। বর্তমানে ১২ লক্ষ থেকে ৫০ লক্ষ টাকার মধ্যে রয়েছে। এর জন্য দুটি বিকল্প রাস্তা রয়েছে।
এর মধ্যে প্রথমটি হল ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়কে কর মুক্ত করা। আর দ্বিতীয়টি হল ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকা উপার্জনকারীদের ২৫ শতাংশের একটি নতুন ট্যাক্স স্ল্যাব চালু করা। এই ছাড় শুধুমাত্র তাদের জন্য কার্যকর হবে যারা নতুন কর ব্যবস্থা বেছে নেবেন।
বর্তমানে, ৭৫,০০০ টাকার স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন-সহ ৭.৭৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ের উপর কোনও কর দিতে হয় না। এছাড়াও, ১৫ লক্ষ টাকার উপরে আয়ের ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ কর ধার্য করা হয়।
উল্লেখ্য, বেশ কয়েক মাস হল যুদ্ধ, বাংলাদেশের অবস্থা সব মিলিয়ে পণ্যের উৎপাদনে ভাটা চলছে। নিচে দেশের জিডিপি বৃদ্ধি (GDP growth) হার। এর প্রতিফলন পড়েছে আর্থিক অবস্থায়। এই অবস্থায় ভারতের শেয়ার বাজার (Share Bazar) নিম্নমুখী। ডলার বেরিয়ে যাওয়ায় পতনের নজির গড়ছে টাকার দাম। আমদানি খরচ বাড়ায় কমছে বিদেশি মুদ্রার ভান্ডার। শেয়ারের দাম এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ন্যাভ অনেকটা কমেছে। মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে নেই। সব মিলিয়ে নাভিশ্বাস উঠেছে মধ্যবিত্তদের কপালে।
সাধারণ মানুষের হাতে টাকার জোগান বাড়াতে কর কমানোর সুপারিশ আসছে নানা মহল থেকে। সাধারণের দাবি, করমুক্ত আয় ৩ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লক্ষ পর্যন্ত করা হোক। ১৫ লক্ষ পর্যন্ত আয়ে কমানো হোক করের হার। ব্যাঙ্ক শিল্পের দাবি, মেয়াদি আমানতে কর ছাড় দেওয়ার কথা ভাবুক কেন্দ্র সরকার। পুরনো বিকল্পে ব্যাঙ্ক সুদে যে করছাড় মেলে, তা আসুক নতুনেও।
স্বল্প সময়ের ফিক্সড ডিপোজিট থেকে শুরু করে দীর্ঘমেয়াদী ফিক্সড ডিপোজিট নিয়ে সরকার কোন সিদ্ধান্ত নেয় কিনা সেদিকে চোখ থাকবে। এতদিন পর্যন্ত প্রতিটি ব্যাঙ্ক যে হারে সুদ দেয় সেখান থেকে যদি তারা সুদের হারে খানিকটা বাড়ায়, তাহলে হাসি ফুটবে। কারণ সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের ভরসা সেই সুদের উপর। সুদ বাড়বে তার প্রভাব পড়বে বিভিন্ন ব্যাঙ্কে, ও শেয়ার বাজারে।
আপাতত মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত, ব্যাঙ্ক শিল্প থেকে মাঝারি-ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, চাকুরিজীবী সকলের নজর এখন বাজেটের দিকে। ১ ফেব্রুয়ারিই জানা যাবে, কেন্দ্র সরকার কতটা ভরসা জোগাতে পারল!
দেখুন অন্য খবর: