কলকাতা: মেট্রোর হল কলকাতার লাইফ লাইন। দেশের প্রথম মেট্রো পা রাখছে দেশের প্রাচীনতম সরকারি বিজ্ঞান জাদুঘরে। নদীর নীচের মেট্রো এবার থেকে চলবে জাদুঘরেও। কলকাতার জীবনরেখা মেট্রো রেলওয়ে (Kolkata Metro) ভারতের প্রাচীনতম মেট্রো ব্যবস্থা। সময়ের সঙ্গে পা মিলিয়ে ধীরে ধীরে যা নিজেকে বিস্তৃত করেছে হুগলির মতো বড় নদীর নীচে দিয়ে চলাচল করছে। সারা ভারতে এমন উদাহরণ আর নেই। একইসঙ্গে আবার নতুন নতুন শাখাতেও হচ্ছে ট্রায়াল রান। নতুন রূপ সেজে উঠছে তিলোত্তমার এই প্রাণ ভোমরা। কলকাতার মতো বড় শহরে এমন সুবিধাজনক ও বাজেট ফ্রেন্ডলি পরিবহণ মাধ্যম আর নেই। বর্তমানে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত চালু এই মেট্রো কলকাতা, হাওড়া এবং সন্নিহিত জেলাগুলির মানুষের কাছে ভরসার আর তার সঙ্গে হয়ে উঠেছে সকলের নয়নের মণি। এবার নদীর নীচের সেই মেট্রো এবার জাদুঘরেও (Indiana Museum)।
কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কলকাতা মেট্রোর ভূমিকাকে স্বীকৃতি দিয়ে দেশের প্রাচীনতম সরকারি বিজ্ঞান ও কারিগরি জাদুঘর বিড়লা শিল্প ও কারিগরি সংগ্রহশালা (বি.আই.টি.এম) কলকাতা মেট্রোর ক্রমবিবর্তনকে তাঁদের ট্রান্সপোর্ট গ্যালারিতে প্রদর্শিত করতে চলেছে। জানান মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র। বিশ্বে পরিবহণ ব্যবস্থার ক্রমবিকাশকে তুলে ধরা হয়েছে এই গ্যালারিতে। গ্যালারিটি সর্বসাধারণের জন্য খুলে যাবে আগামী ১৮ মে। চাকার আবিষ্কার থেকে শুরু করে আজকের বিদ্যুৎচালিত গাড়ি অবধি এসে পৌঁছনোর এই সফর গল্প বলার ঢঙে বিভিন্ন ছবি, মডেল ও সংক্ষিপ্ত ভিডিওর মাধ্যমে তুলে ধরা হবে এখানে, যেখানে গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরা হবে কলকাতা মেট্রোর প্রায় ৪০ বছরের পথ চলার গল্প।
আরও পড়ুন: মিতালি জিতলে এলাকার সার্বিক উন্নয়ন হবে, প্রচারে মন্তব্য শশীর
একদা বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারের সম্পত্তি ছিল। বি.আই.টি.এম- এর এই জাদুঘর ভবনটি। এই ভবনেরই একদম নিচের তলায় গড়ে তোলা হয়েছে এই গ্যালারিটি। এখানে আগত দর্শকেরা নদীর নীচে দিয়ে কি ভাবে মেট্রো চলাচল করে তা দেখতে পাবেন এক ত্রিমাত্রিক মডেলের সাহায্যে। আর একটি ত্রিমাত্রিক মডেলের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ মেট্রো স্টেশনের বিভিন্ন স্তর, ভূপৃষ্ঠের উপরের স্তর এবং মেট্রোর যাতায়াত ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বিভিন্ন দুষ্প্রাপ্য ও পুরোনো আলোকচিত্রও স্থান পেয়েছে এই গ্যালারিতে। বিশ্বের কোন কোন দেশে মেট্রো চলে এবং সেই মেট্রো কবে চালু হয়েছিল সেই ব্যাপারে সম্যক ধারণা পাওয়া যাবে এই গ্যালারিতে এলে। বিভিন্ন দুষ্প্রাপ্য ও চিত্তাকর্ষক সামগ্রী দিয়ে সাজানো এই গালারিটি দেখে বেরোনোর মুখে দর্শকরা দেখতে পাবেন মেট্রোর পুরোনো টিকিট ও স্মার্ট কার্ড। ১৯৫৯ সালে স্থাপিত এই সংগ্রহশালা ফেলে আসা সময়কে ফিরে দেখা ও স্মৃতিমেদুর হওয়ার সুযোগ করে দেবে। যা এই জাদুঘরের বাড়তি আকর্ষণ।
বি.আই.টি.এম-এর ডিরেক্টর শ্রী এস চৌধুরি এমন একটি গ্যালারির স্বপ্ন বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে সক্রিয় সহযোগিতা ও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার জন্য মেট্রো রেলের জেনারেল ম্যানেজার পি উদয় কুমার রেড্ডিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। মেট্রো রেলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দুষ্প্রাপ্য ছবি, নকশা এবং অন্যান্য প্রদর্শন সামগ্রী দিয়ে এই গ্যালারিকে সমৃদ্ধ করা হয়েছে। আগামীদিনে ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, বিজ্ঞানপিপাসু ব্যক্তি, বৈজ্ঞানিক, গবেষক এমনকি মেট্রো যাত্রীদের কাছেও এক আকর্ষক গন্তব্য হতে চলেছে এই গ্যালারি। এই সুন্দর এবং সমৃদ্ধ গ্যালারিতে পা রাখলে অনেক অজানা তথ্য ও ইতিহাস উন্মোচিত হবে তাঁদের সামনে। ভবিষ্যতের পৃথিবী কেমন হতে চলেছে সে ব্যাপারেও ধারণা পাওয়া যাবে এই গ্যালারিতে এলে। আগামীদিনে কলকাতার অন্যতম প্রধান আকর্ষণের কেন্দ্র হতে চলে চলেছে বি.আই.টি.এম-এর এই গ্যালারি।
অন্য খবর দেখুন
