কলকাতা: মঙ্গলবারের পর বুধবারও তৃণমূল প্রবীণ সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Sudeep Banerjee) তীব্র আক্রমণ শানালেন বিধানসভার উপ মুখ্য সচেতক তাপস রায় (Tapas Roy)। মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমের কাছে নিজেকে হাতির সঙ্গে তুলনা করেছিলেন সুদীপ। তিনি বলেন, হাতি চলে বাজার। এদিন উত্তর কলকাতা জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি তাপস বলেন, উনি সাদা হাতি। সুব্রতদা (প্রয়াত তৃণমূল নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায়) আমাদের সুদীপকে দেখিয়ে বলতেন, দেখ কেমন পেঙ্গুইনের মতো আসছে। তাপসের সাফ বক্তব্য, আমাকে যদি সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আপস করে চলতে হয়, তবে আমাকে রাজনীতি নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে।
মঙ্গলবারই উত্তর কলকাতা জেলা কংগ্রেস সভাপতি এবং সাংসদ সুদীপকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন তাপস। এই দুজনের বিরোধ বহুদিনের পুরনো। তাপসের অভিযোগ ছিল, সুদীপ কোনও দিন দল করেননি, সংগঠন করেননি। তিনি চাটুকারিতাকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছেন। এদিন তাপস বলেন, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে আমি বেশিদিন ধরে তৃণমূল করছি। উনি তো ছয় বছর দল থেকে সাসপেন্ড ছিলেন। তখন সুদীপ বলেছিলেন, তৃণমূল দলটা ছয় মাসও থাকবে না। সেই সময় তাঁরা স্বামী-স্ত্রী তৃণমূলের বিরুদ্ধে কী কী বলেছিলেন, কী কী করেছিলেন, তার সমস্ত কাগজপত্র আমার কাছে আছে। প্রয়োজনে সেগুলি সামনে আনব। তাঁর প্রশ্ন, সুদীপকে সামনে রেখে আমাকে রাজনীতি করতে হবে নাকি?
আরও পড়ুন: নিহত আইনজীবীর পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি, পুলিশের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন
সুদীপকে মোমবাতি মার্কা রাজনীতিবিদ বলে কটাক্ষ করে তাপস বলেন, উনি মমতা এবং অভিষেকের অনুগামীদের পছন্দ করেন না। উত্তর কলকাতার মমতা এবং অভিষেক ভক্তদের কী অবস্থা করেছেন তিনি, গিয়ে দেখে আসুন। তিনি শুধু মোমবাতি মার্কাদের পছন্দ করেন। লোকসভা ভোটে সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে হারানোর পর বলেছিলেন, আমি হেরেছি তো কী হয়েছে। তৃণমূল এবং সুব্রতকে তো হারিয়েছি। এই কথা যে নেতা বলেন, তাঁর কথা আমাকে শুনতে হবে নাকি। তাপসের অভিযোগ, উত্তর কলকাতার ৬০টি ওয়ার্ডে তৃণমূল
কাউন্সিলরদের সুদীপ বলেছেন, তাঁকে যেন দলের কোনও কর্মসূচিতে আমন্ত্রণ জানানো না হয়। উনি তাঁর মতো করে উত্তর কলকাতায় তৃণমূলকে চালাতে চান। তিনি বলেন, গত ১৫ বছর ধরে সুদীপ আমার প্রতি যে অসম্মান, অবিচার এবং অত্যাচার করেছেন, তার বিচার চাই আমি। যে লড়াই চলছে, তা স্বাস্থ্যকর না অস্বাস্থ্যকর, বলতে পারব না। তবে এসব কথা বলার জন্য আমার উপর দলের কোনও চাপ আসবে বলে আমি মনে করি না।
প্রবীণ এই বিধায়ক বলেন, নেত্রী ভালোবাসেন বলে যা খুশি তাই করবেন, অসভ্যতা করবেন, তা চলবে না। গত ১৫ বছর ধরে তিনি একই কাজ করে চলেছেন। এসব আমাকে মেনে নিতে হবে?
আরও অন্য খবর দেখুন