বারাসত: ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছিলেন এক গৃহবধূ। পরে তিনি আত্মঘাতী হন। ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীসহ দুজন গ্রেফতার। অভিযোগ, ধর্ষিতা হয়েছিলেন গত এক মাস আগে। থানায় অভিযোগ করার পরও গ্রেফতার হয়নি অভিযুক্ত। বারবার চাপ দেওয়া হচ্ছিল অভিযোগ তুলে নেওয়ার। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাবরা থানার কুমড়ো কাশীপুর এলাকার ঘটনা।
অভিযোগ, গত ৫ সেপ্টেম্বর ধর্ষিত হন কুমড়ো কাশীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের এক গৃহবধূ। পরদিন হাবরা থানায় অভিযোগ করেন নির্যাতিত মহিলা। অভিযুক্ত সঞ্জয় বিশ্বাস কলকাতা পুলিশে কর্মরত। সঞ্জয় বিশ্বাসের স্ত্রী সঞ্চিতা বিশ্বাস গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের সদস্যা। স্বামীর কুকীর্তির ঘটনা ধামাচাপা দিতে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যা স্ত্রী সহ পরিবারের সকলেই চাপ সৃষ্টি করছিলেন ভাড়াটিয়া মহিলার উপর। কারণ, ঘটনার বেশ কিছুদিন আগেই থানার দ্বারস্থ হয়েছিলেন মহিলা। দেড় মাস আগে ওঠা ওই অভিযোগে ছিল, বাড়ি ভাড়ার দেওয়ার অছিলায় স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামী ধর্ষণ করেছিলেন ওই নির্যাতিতা মহিলাকে। এরপর থেকেই নানা সময়ে নানাভাবে মানসিক অত্যাচার সহ হুমকি দেওয়া হচ্ছিল তাঁকে। এই প্রবল চাপ সহ্য করতে না পেরেই আত্মসম্মানের ভয়ে অবশেষে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় ওই মহিলা বলেই অনুমান। যদিও, বোনের এমন মৃত্যুর পরই গোটা ঘটনার অভিযোগ জানিয়ে হাবরা থানার দ্বারস্থ হয়েছে নির্যাতিতার ভাই। ঘটনায় মূল অভিযুক্ত জয়ন্ত বিশ্বাস কলকাতা পুলিশের গাড়িচালক। ঘটনার পর থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন। এরপরই শুক্রবার উদ্ধার হয় নির্যাতিতা গৃহবধুর ঝুলন্ত দেহ। মৃতার ভাইয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে তিনজনকে গ্রেফতার করে হাবরা থানার পুলিশ। তাঁর বোনকে চক্রান্ত করেই খুন করা হয়েছে বলে জানান নির্যাতিতার ভাই। আর এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে অভিযুক্ত জয়ন্ত বিশ্বাস ও তার পঞ্চায়েত সদস্যা স্ত্রী সঞ্চিতা বিশ্বাস এবং মৃতার স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন বলেও দাবি। তদন্তে নেমে পুলিশ ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত জয়ন্ত বিশ্বাসকে গ্রেফতার করে। এছাড়া গৃহবধূকে হুমকি সহ মানসিক অত্যাচার করে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে জয়ন্তর স্ত্রী তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যা সঞ্চিতা বিশ্বাসকেও। ঘটনায় হাবরা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এদিন ধৃতদের পুলিশ হেফাজত চেয়ে বারাসাত আদালতে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন: প্রতীকী অনশনে জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের জুনিয়র ডাক্তাররা
দেখুন অন্য খবর: