কলকাতা: কুমোরটুলিতে (KumorTuli) ট্রলি ব্যাগে (Trolley Bag Case) মহিলার দেহ উদ্ধারকে ঘিরে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। এখনও পর্যন্ত এই কাণ্ডে দুই মহিলাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ (Police)। জানা গেছে সম্পর্কে ধৃতরা মা ও মেয়ে (Arrest Mother Daughter)। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, মহিলা তাদের পিসি শাশুড়ি। এরা সকলেই মধ্যমগ্রাম (Madhyamgram) এলাকার বাসিন্দা। মৃতার নাম সুমিতা ঘোষ (Sumita Ghosh)। ধৃতদের নাম ফাল্গুনী ঘোষ (Falguni Ghosh) ও আরতি ঘোষ (Arati Ghosh)।
জানা গেছে মা ও মেয়ে মধ্যমগ্রামের বীরেশপল্লি এলাকার (Bireshpalli area of Madhyamgram) বাসিন্দা। সংবাদমাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়তেই পড়শিরা সাংবাদিকদের জানান, মা ও মেয়ে দুজনেই উশৃঙ্খল জীবন যাপন করতেন। পাড়াতেও তাদের সুনাম ছিল না। দুজনের কাণ্ডকারখানায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন পড়শিরা। কোনও প্রতিবাদ জানাতে গেলেই মা ও মেয়ে ঝগড়া করতেন। পাড়ার লোকেরা তাদের এড়িয়েই চলতেন।
আরও পড়ুন: কলকাতার কুমোরটুলিতে ট্রলি ব্যাগে উদ্ধার মহিলার খণ্ডবিখণ্ড দেহ
বিগত আড়াই বছরের বেশি সময় ধরে মধ্যমগ্রামের বীরেশপল্লি এলাকায় ভাড়া আসেন তারা। প্রতি রাতে তাদের বাড়িতে অপরিচিত যুবকদের আনোগোনা চলত। এমনকী গভীর রাত পর্যন্ত ওই বাড়িতে মধুচক্র আসর বসাত তারা। প্রতিবেশীরা স্থানীয় পুরসভাকেও বিষয়টি জানান। বাসিন্দাদের অভিযোগ পাওয়ার পর মধ্যমগ্রাম পুরসভার উপপ্রধান প্রকাশ রাহা পদক্ষেপ নিতে উদ্যোগী হন।
তখন ফাল্গুনী ও আরতি প্রকাশ্যে গালিগালাজ করে অপমান করে তাঁকে। ওই ভাড়াবাড়ির মালিক কলকাতায় বাস করেন। উপপুরপ্রধান বাড়ির মালিককেও বিষয়টি জানিয়েছিলেন। ওই ভাড়া বাড়িতে মা ও মেয়ে দুজনেই বসবাস করতেন। কিন্তু কিছুদিন আগে ওই বাড়িতে আসেন এক মহিলা। উনিই ছিলেন পিসি শাশুড়ি সুমিতা ঘোষ।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, কুমোরটুলিতে ট্রলি ব্যাগে উদ্ধার হওয়া দেহটি সুমিতার। মা-মেয়ে দু’জন মিলে তাঁকে খুন করেছেন।
জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে আরতি ও ফাল্গুনী দুজনে একটি ট্রলি ব্যাগে সুমিতার দেহ প্লাস্টিকে মুড়ে বীরেশপল্লি থেকে একটি ভ্যানে চেপে তারা প্রথমে মধ্যমগ্রাম দোলতলায় যান। সেখান থেকে একটি গাড়ি করে কাজিপাড়া রেলস্টেশনে আসেন। তার পর কাজিপাড়া থেকে পার্ক সার্কাস পর্যন্ত ট্রেনের টিকিট কেটেছিলেন।
প্রথমে প্রিন্সেপঘাটে তাঁরা দেহভর্তি ট্রলি গঙ্গায় ফেলে দেওয়ার চেষ্টা পরিকল্পনা ছিল মা ও মেয়ের। কিন্তু ঘাটে এত লোকজন দেখে আর সাহস পাননি তারা। সেখান থেকে কুমোরটুলি ঘাটে চলে আসেন তারা। গঙ্গায় ফেলতে গিয়ে সাধারণের চোখে পড়ে যান তারা। স্থানীয়দের চাপে মা ও মেয়ে বলে, ট্রলি ব্যাগে কুকুরের দেহ আছে। কিন্তু তাদের ঘিরে রেখেই পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রা। তার পরেই স্থানীয়দের তৎপরতায় মা ও মেয়েকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বারাসতের এসডিপিও বিদ্যাসাগর আজিঙ্কা মধ্যমগ্রামের বীরেশপল্লি এলাকায় ওই ভাড়া বাড়িতে দেখেন বাড়িটি তালাবন্ধ রয়েছে। বাড়ির মালিককেও ডেকে পাঠিয়েছে পুলিশ।
কী কারণে এই খুন তার উত্তর খুঁজছে পুলিশ। ধৃত আরতি ও ফাল্গুনী ঘোষ দুজনে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতেন না। তাদের আমোদ প্রমোদে কি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন সুমিতা ঘোষ? তাই কি এই খুন? আপাতত সবই তদন্ত সাপেক্ষ্য জানিয়েছে পুলিশ।
দেখুন অন্য খবর: