কলকাতা: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের (RG Kar Medical College) চিকিৎসক ছাত্রীর ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের (RG Kar Case) ঘটনায় তদন্ত নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছেন নিহত তরুণীর বাবা-মা। এবার তাঁরা সাক্ষাৎ করলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-এর প্রধান মোহন ভাগবতের সঙ্গে। শনিবার নিউ টাউনের এক অতিথিশালায় আধ ঘণ্টার বৈঠকে তাঁরা তাঁদের ক্ষোভ ও হতাশার কথা জানান। মোহন ভাগবত তাঁদের আশ্বাস দিয়েছেন যে, সুবিচার নিশ্চিত করতে তিনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন। তিনি জানান, ঘটনার বিষয়ে কিছুটা জানেন, তবে আরও বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছেন।
নিহত তরুণীর বাবা-মা দীর্ঘদিন ধরেই তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ তুলছেন। কলকাতা পুলিশের পর সিবিআই তদন্ত শুরু হলেও তাঁরা এর গতি ও দিশা নিয়ে ক্ষুব্ধ। তাঁদের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপ ছাড়া প্রকৃত সত্য সামনে আসবে না। এর আগে তাঁরা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু সেই সুযোগ পাননি। তবে এবার মোহন ভাগবতের সঙ্গে তাঁদের বৈঠক বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ফের শীতের দাপট রাজ্য জুড়ে, এক ধাক্কায় পারদ নামল ৪ ডিগ্রি
মোহন ভাগবত আগে থেকেই এই ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি আরজি কর মেডিকেল কলেজের ঘটনা নিয়ে তীব্র নিন্দা করেছিলেন এবং দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছিলেন। এবার তিনি সরাসরি নিহত তরুণীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের আশ্বস্ত করলেন। এই বৈঠকের পর মামলার তদন্তের গতিপ্রকৃতি বদলে যাবে কিনা, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, কেন্দ্রীয় স্তর থেকে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে, যা তদন্তকে অন্য দিকে নিয়ে যেতে পারে।
এদিকে, আগামীকাল, ৯ ফেব্রুয়ারি, নিহত তরুণীর জন্মদিন। এই উপলক্ষে কলকাতায় একাধিক প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। ‘বাংলার মেয়ের জন্মদিন’ নামে একটি স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে আরজি কর মেডিকেল কলেজে, যেখানে সিবিআই-সহ তদন্তকারী সংস্থা এবং প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আয়োজকদের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এই বৈঠকের পর সত্যিই কি তদন্তের গতিপথ পরিবর্তন হবে? নিহত তরুণীর বাবা-মা যে ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন, তা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। এখন দেখার, মোহন ভাগবতের হস্তক্ষেপ আদৌ কোনো বাস্তব পরিবর্তন আনতে পারে কিনা, নাকি তদন্তের গতি একই থাকছে। তবে পরিবারের সদস্যদের আশাবাদ, এবার অন্তত তাঁদের অভিযোগের সঠিক তদন্ত হবে।
দেখুন আরও খবর: