
কলকাতা: সোমবার, দুপুর ২.৪৫। শিয়ালদহ আদালতের (Sealdah Court) ২১০ নম্বর কক্ষের দিকে নজর গোটা দেশের। ফাঁসি নাকি যাবজ্জীবন- এই ধন্দে তখন চর্চার ঝড় সব জায়গায়। বিচারক অনির্বাণ দাস (Judge Anirban Das) এলেন এজলাসে। আরজি কর কাণ্ডের (RG Kar Case) শাস্তি ঘোষণাও করলেন সঠিক সময়ে। আমৃত্যু কারাবাসের (Life Imprisonment) সাজা দেওয়া হল সঞ্জয় রায়কে (Sanjay Roy)। বিচারকের মুখ থেকে শাস্তির কথা শোনার পরে কাঁদো কাঁদো মুখে দাঁড়িয়ে থাকেন সঞ্জয়। এজলাস ছাড়ার সময় তাঁকে বিড়বিড় করে কিছু বলতে দেখা যায়, তবে তা স্পষ্ট বোঝা যায়নি। তবে আদালত কক্ষে উপস্থিত অনেকেই শোনেন যে সাজা ঘোষণার পর সঞ্জয় বলেন, “বদনাম হয়ে গেলাম।”
এর আগে এদিন বিচারক যখন সঞ্জয়ের বক্তব্য জানতে চান, তখন তিনি বারবার নিজেকে ‘নির্দোষ’ বলে দাবি করেন। সঞ্জয়ের কথায়, “আমি খুন বা অন্য কোনও অপরাধ করিনি। আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। আমাকে জোর করে সই করানো হয়েছে। যেভাবে আমাকে অত্যাচার করা হয়েছে, তা আদালতে আগেও বলেছি। গলায় রুদ্রাক্ষের মালা ছিল, সেটাও নষ্ট হয়নি। আমি নির্দোষ।”
আরও পড়ুন: ফাঁসি চেয়েছিল নির্যাতিতার পরিবার, সংশধোনের সুযোগ দিল আদালত?
পাশাপাশি এদিন শিয়ালদহ আদালতে সঞ্জয়ের আইনজীবীরা দাবি করেন, তদন্তের সময় বহু প্রমাণ নষ্ট হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের ভিত্তি যথেষ্ট নয়। তবে সরকারি পক্ষের আইনজীবীরা পাল্টা যুক্তি দিয়ে বলেন, সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের পক্ষে পর্যাপ্ত প্রমাণ রয়েছে। সূত্রের খবর, সঞ্জয়ের আইনজীবীরা উচ্চ আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, শনিবার আরজি কর হাসপাতালে মামলার রায় শুনে কিছুটা হতাশ হয়েছিলেন সঞ্জয়। জানা যায়, সেদিন রাতে তিনি কিছুই খাননি। তবে রবিবার সকাল থেকে প্রেসিডেন্সি জেলে (Presidency Jail) তিনি স্বাভাবিক ছিলেন। জেলের অন্যান্য বন্দিদের সঙ্গে ক্যারম খেলতে দেখা যায় তাঁকে। কিন্তু বিচারকের শাস্তি ঘোষণার দিন সঞ্জয়ের নীরবতা ভেঙে যায়। নিজের অপরাধ স্বীকার না করলেও আমৃত্যু কারাদণ্ডের শাস্তি তাঁকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করেছে। বিচারকের রায় শুনে সঞ্জয়ের প্রতিক্রিয়ায় স্পষ্ট, নিজের প্রতি ওঠা অভিযোগ ও শাস্তি তিনি এখনও মেনে নিতে পারেননি।
দেখুন আরও খবর: