শ্রী লঙ্কা ১৪২ (২০ ওভারে)
দক্ষিণ আফ্রিকা ১৪৬-৬ (১৯.৫ ওভারে)
শেষ ওভারে জেতার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার দরকার ছিল ১৫ রান। ব্যাট করছেন কাগিসো রাবাডা বেবং ডেভিড মিলার। বল হাতে লাহিরু কুমারা। প্রথম বলে রাবাডা একটি রান নেওয়ায় ক্রিজে এলেন মিলার। এর পর পর পর দু বলে দুটো ছক্কা। চতুর্থ বলে আরও একটি রান এল তাঁর ব্যাট থেকে। আর পঞ্চম বলে বাউন্ডারি মেরে শ্রী লঙ্কার বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকাকে চার উইকেটে জিতিয়ে দিলেন রাবাডা। এই জয়ের ফলে তিন ম্যাচে চার পয়েন্ট নিয়ে সেমিফাইনালে যাওয়ার আশা জিইয়ে রাখল দক্ষিণ আফ্রিকা। একটা সময় মনে হচ্ছিল শ্রী লঙ্কা বুঝি ম্যাচটা জিতেই যাবে। কিন্তু শেষ ওভারে মিলার পর পর দুটো ছয় মেরে টিমকে জিতিয়ে দিলেন। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকলেন ১৩ বলে ২৩ রান করে। তার আগে ষোলোতম ওভারের শেষ বলে অলডেন মার্করাম এবং আঠেরোতম ওভারের প্রথম দু বলে তেম্বা বাভুমা এবং ডোয়েন প্রিটোরিয়াসকে তুলে নিয়ে হ্যাটট্রিক করে আফ্রিকান শিবিরে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছিলেন ওয়ানিন্ডু হাসরঙ্গা। এবারের বিশ্ব কাপে এটাই প্রথম হ্যাটট্রিক। এরপর মিলারের সঙ্গে যোগ দেন রাবাডা। তখনও তাঁর টিম জয় থেকে অনেক দূরে। শেষ পর্যন্ত মিলারের ব্যাটে জয় লাভ। তবে ম্যাচের সেরা হয়েছেন মিলারদের দলের বাঁ হাতী স্পিনার তাব্রেইজ সামসি। চার ওভার বল করে মাত্র ১৭ রানে তিন উইকেট সামসি।
শ্রী লঙ্কা কিন্তু ১৪২ তুলেছিল যা লড়াই করার পক্ষে যথেষ্ট। টস জিতে ফিল্ডিং নিয়েছিলেন বাভুমা। শারজার মাঠ খুব বড় নয়। সেই ফ্যাক্টরটাই শেষ পর্যন্ত শ্রী লঙ্কার বিপক্ষে গেল। তাই পাথুম নিশঙ্কের ৫৮ বলে ৭২ (ছটি বাউন্ডারির সঙ্গে তিনটি ওভারবাউন্ডারি) এবং চারিথ আসালঙ্কার ২১ ছাড়া অবশ্য তাদের পক্ষে বলার মতো তেমন রান নেই। কুশল পেরেরা (৭), ভানুকা রাজাপক্ষ (০) অভিষ্কা ফার্নান্ডো (৩), হাসরঙ্গা (৪) দানুষ শনকা (১১), চামিকা করুনারত্নে (৫) দুষ্যন্ত চামিরা (৩) কিংবা মহেশ তীকক্ষণা (৭)–শুধু গেছেন আর আউট হয়ে ফিরেছেন। সামসি ছাড়া বল হাতে সফল ডোয়েন প্রিটোরিয়াস (৩-১৭) এবং আনরিখ নোখিয়া (২-২৭)। তবে কাগিসো রাবাডা তিন ওভারে ৩২ রান দিয়ে কোনও উইকেট পাননি। ব্যর্থ কেশব মহারাজও (০-৩৪)। এই নিয়ে শ্রী লঙ্কা তিনটির মধ্যে দুটি ম্যাচে হেরে গেল।
১৪৩ রানের টার্গেটকে মাথায় রেখে ব্যাট করতে নামেন কুইন্টন ডি কক এবং রেজা হেনড্রিক্স। আগের ম্যাচে বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে হাঁটু গেড়ে বসে প্রতিবাদ না করে নিজেকে টিম থেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন ডি কক। তবে নিজের ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চেয়ে নিয়ে আবার দলে ঢুকেছেন। কিন্তু তেমন রান পাননি। ১০ বলে ১২ করে তিনি দুষ্যন্ত চামিরার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান। তার আগেই অবশ্য চামিরা তুলে নিয়েছেন রেজা হেনড্রিক্সকে। ২৬ রানে দুই উইকেট হারিয়ে তখন দক্ষিণ আফ্রিকা একটু ব্যাক ফুটে। তার উপর একটু পরেই রান আউট হয়ে যান ভ্যান ডার ডুসেন (১১ বলে ১৬)। এর পর অধিনায়ক তেম্বা বাভুমা এবং অলডেন মার্করাম ম্যাচটা ধরেন। বাভুমা বেশ ভাল ব্যাট করলেন। তাঁর ৪৬ বলে ৪৬ রানে ছিল একটি করে বাউন্ডারি ও ওভারবাউন্ডারি। তবে তার আগেই ফিরে গেছেন মার্করাম। কুড়ি বলে ১৯ করেন তিনি। তবে বাভুমা আর মার্করাম চতুর্থ উইকেটে ৪৭ রান যোগ করেন। পর পর দু বলে বাভুমা আর প্রিটোরিয়াস ফিরে যাওয়ার পর জয়ের পরিস্থিতি তৈরি করেছিল শ্রী লঙ্কা। সেখান থেকে ডেভিড মিলার তাদের জিতিয়ে দেন। চার ওভার বল করে কুড়ি রানে তিন উইকেট নিয়েও হাসরঙ্গা জেতাতে পারলেন না হাসরঙ্গা।
এক নম্বর গ্রুপে এখন যা অবস্থা সেমিফাইনালে যেতে হলে ইংল্যান্ডকে হারাতেই হবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। ইংল্যান্ড এই টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিট দল। তাই বাভুমাদের কাজটা বেশ কঠিন।