কলকাতা: ২০২১ সালের ভোটবিপর্যয়ের পর থেকেই রাজ্য বিজেপির (BJP) অন্দরে যে প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছিল, ”বাংলার নির্বাচনে কেন অবাঙালি নেতৃত্ব?” ২০২৬-এর আগে আবারও সেই প্রশ্নই দলীয় মহলে নতুন করে ফুসতে শুরু করেছে। কারণ, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ফের একবার কার্যত সম্পূর্ণ নির্বাচনী দায়িত্ব তুলে দিলেন অবাঙালি নেতাদের হাতে (District news)।
দলে কোনও পদে না থাকলেও বর্তমানে রাজ্য বিজেপির নির্বাচনী রণকৌশল থেকে মাঠপর্যায়ের প্রতিটি পদক্ষেপ— সবই নাকি ঠিক করছেন কেকে উপাধ্যায়। রাজস্থানে বেড়ে ওঠা, পরে উত্তরপ্রদেশে কাজ করা এই সংগঠককে দিল্লি নেতৃত্বের ‘বিশেষ ভরসার মানুষ’ বলেই মনে করা হচ্ছে। অমিত শাহ থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের জেলা সফর—সব কিছুর সময়সূচি তৈরি করছেন তিনি। অভিযোগ, রাজ্য নেতৃত্বকে জানানো ছাড়াই বহু সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন কেকে। ফলে, স্থানীয় নেতৃত্ব কার্যত তাঁর ওপরেই নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন।
আরও পড়ুন: গর্ভবতী সোনালিকে পুশব্যাক, নাগরিক দাবি নিয়ে আইনি লড়াই এখন সুপ্রিম কোর্টে
সঙ্গে রয়েছেন সুনীল বনশল, অমিত মালব্য এবং মঙ্গল পাণ্ডে দলের সাংগঠনিক দায়িত্বে থাকা এই তিনজনই বাংলার বাইরের রাজ্যের নেতা। নতুন করে নির্বাচনী কমিটির মাথায় বসানো হয়েছে ভূপেন যাদব এবং ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবকে। এঁরাও কেউ বাঙালি নন, নন রাজ্যের রাজনৈতিক পরিসরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত।
সূত্রের খবর, নির্বাচনী তহবিলের দায়িত্বও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দিতে চলেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানকে। ফলে বিজেপির অন্দরে ক্ষোভ বাড়ছে। দলের পুরনো কর্মী থেকে আরএসএসের কিছু স্তরের নেতৃত্ব—অনেকেই মনে করছেন, “বাংলার রাজনৈতিক বাস্তবতা না জেনে হঠাৎ করেই বাইরে থেকে আসা কিছু নেতার নির্দেশে চলতে হবে—এটা অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের বিরোধী। এ ভাবে চললে মাঠপর্যায়ের কর্মীর মনোজগতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবীণ বিজেপি নেতা বলেন, “আমরা নিজের রাজ্যে পরজীবীর মতো লড়াই করব, আর অন্য রাজ্য থেকে আসা নেতৃত্ব ছড়ি ঘোরাবেন—এ কথা মেনে নেওয়া কঠিন। বাংলার রাজনীতি বুঝতে হলে বাংলার সমাজও বুঝতে হয়।”
যদিও এই নিয়ে প্রকাশ্যে এখনও কেউ মুখ খোলেননি। কারণ, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার মতো পরিস্থিতি দলের ভেতর বহুজনের মতে, এই মুহূর্তে নেই। রাজ্য বিজেপির কার্যকরী নেতৃত্ব শমীক ভট্টাচার্য, শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার—এঁদের ভূমিকা তাই এবার নির্বাচনী প্রচারে কতটা দৃশ্যমান হবে, তা নিয়েই জল্পনা বাড়ছে রাজনৈতিক মহলে।
দেখুন আরও খবর:







