নয়াদিল্লি: ভিন্ন মতাবলম্বীদের প্রতি ইউএপিএ (UAPA) অপপ্রয়োগের সম্ভাবনা প্রসঙ্গে প্রফেসর জি এন সাইবাবার (G N Saibaba) মৃত্যু এক ঘুম-ভাঙানিয়া ঘটনা। প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ হিসেবে ছাড়াও মানবাধিকার প্রসঙ্গে তিনি ছিলেন অগ্রণী সৈনিক। অথচ তাঁর বিরুদ্ধে আনা হয়েছিল ১৯৬৭ সালের বেআইনি কার্যকলাপ বিরোধী তথা সন্ত্রাসবাদ বিরোধী আইনে অভিযোগ।
গত বছরের মার্চে বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চ দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর জি এন সাইবাবা ও আরও পাঁচ জনের বিরুদ্ধে ইউএপিএ অনুযায়ী মাওবাদীদের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার অভিযোগ সহ কারাবাসের সিদ্ধান্ত খারিজ করে। তখনই তিনি হুইল চেয়ার ছাড়া নড়াচড়া করতে পারতেন না। আদালতকে জানানো হয়েছিল, তিনি শারীরিকভাবে ৯০% প্রতিবন্ধীত্বে রূপান্তরিত হয়েছেন। কিন্তু অক্টোবর মাসে সুপ্রিম কোর্ট এক বিশেষ শুনানিতে হাইকোর্টের সেই রায়ে স্থগিতাদেশ দেয়। মামলা ফিরে যায় ফের বম্বে হাইকোর্টে। সেখানে তাঁর বিরুদ্ধে থাকা যাবতীয় অভিযোগ সহ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় ফের রদ হয়।
আরও পড়ুন: রাজ্যের দুর্গা কার্নিভালকে সমর্থন, জানালেন জুনিয়র ডাক্তাররা
উল্লেখ্য, অভিযোগ ওঠার পরেই ২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তিনি কারান্তরালে ছিলেন। যে সময়ে তাঁর জামিনের আবেদন গ্রাহ্য হয়নি। শেষে মহারাষ্ট্রের গাডচিরোলি জেলার আদালত ২০১৭ সালে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়। অথচ তাঁর বিরুদ্ধে ইউএপিএ অনুযায়ী তদন্ত চালানোর জন্য যে সরকারি ছাড়পত্র নেওয়া হয়, সেটি রহস্যজনক বলে আদালতকে জানায় নিরপেক্ষ তদন্তকারীর রিপোর্ট। সেখানে এও বলা হয়, প্রাসঙ্গিক সরকারি অনুমোদন যথাযথভাবে বিবেচিত হয়নি।
শেষ পর্যন্ত সাতান্ন বছর বয়সের ওই প্রফেসর মাওবাদী সম্পর্কের অভিযোগ থেকে এবং কারান্তরাল থেকে মুক্তি পাওয়ার সাত মাসের মধ্যে মারা গেলেন। গলব্লাডারে সংক্রমণের কারণে সরকারি হাসপাতালে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। সেই সূত্রে নিজামস ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস হায়দ্রাবাদে কুড়ি দিন কাটিয়ে তিনি পরলোকে যাত্রা করলেন।
দেখুন অন্য খবর: