কলকাতা: নজরে ২৬ বিধানসভা নির্বাচন (West Bengal Assembly Election 2026)। তার আগেই আগামী বিধানসভা নির্বাচনের ওয়ামআপ করতেই ২১ জুলাইয়ে প্রস্তুতি (TMC 21 July Preparatory Meeting) নিয়ে আজ শনিবার ভবানীপুরে (Bhabanipur) বৈঠকে বসছেন তৃণমূল রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। দলের সমস্ত জেলার সভাপতি, জেলা চেয়ারম্যান ও বীরভূম এবং উত্তর কলকাতা জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্যদের ওই বৈঠকে ডাকা হয়েছে। প্রস্তুতি বৈঠকে দলের বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা ও মন্ত্রীকেও ডাকা হয়েছে। বেলা ১টায় ওই বৈঠকে যোগ দিতে শুক্রবারই কলকাতায় পৌঁছেছেন বীরভূমের প্রাক্তন জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। উত্তরবঙ্গ-সহ দূরের জেলার অনেক সভাপতি এবং চেয়ারম্যানও শহরে এসে পৌঁছেছেন। ২০২৬ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের সর্বস্তরের কর্মীদের কী ভাবে উজ্জীবিত করা হবে তা ঠিক করতেই আজকের এই বৈঠক। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে ২১ জুলাই তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বর কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।
প্রতি বছর ২১ জুলাই ধর্মতলায় সমাবেশ করে তৃণমূল। সেই সমাবেশে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কর্মী-সমর্থকেরা যোগ দেন। তাঁদের সভাস্থলে আনার দায়িত্বে থাকেন জেলা নেতৃত্ব। ২০২৬ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। সেই নির্বাচনের আগে সম্ভবত শেষ ২১ জুলাইয়ের কর্মসূচি আয়োজিত হতে চলেছে। বিধানসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হতে ৮–৯ মাস দেরি থাকলেও তৃণমূল এখনই খুব দ্রুততার সঙ্গে সংগঠনকে ভোটমুখী করতে শুরু করেছে। নির্বাচনী নির্ঘন্ট প্রকাশের আগেই জেলায় জেলায় ব্লক ও অঞ্চল স্তরে কর্মিসভা করে সংগঠনকে ২০২৬ সালের ভোটের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত করে ফেলতে চাইছে রাজ্যের শাসকদল। মূলত ২৬ এর নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে প্রস্তুতি শুরু হলেও সামনেই যেহেতু ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ, তার জন্য সে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও প্রচার সেরে ফেলতে চলেছে তৃণমূল। সে ক্ষেত্রে একই পদক্ষেপে দু’টো লক্ষ্য পূরণ হবে। ২১ জুলাইয়ে প্রস্তুতি নিয়ে আজ শনিবার ভবানীপুরে বৈঠকে বসছেন তৃণমূল রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। দলের সমস্ত জেলার সভাপতি, জেলা চেয়ারম্যান ও বীরভূম এবং উত্তর কলকাতা জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্যদের ওই বৈঠকে ডাকা হয়েছে। এই প্রস্তুতি বৈঠকে দলের সাংগঠনিক ক্ষমতাকে ঝালিয়ে দেখে নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: বড়মার মন্দিরে পুজো দিলেন অনুব্রত মণ্ডল
পাশপাশি বিরোধীদের কাছে ২১ জুলাইকে কেন্দ্র করে অনেক বেশি জমায়েত হলে সাংগঠিক শক্তির প্রমাণও দেওয়া যেতে পারে। ২১ জুলাই তৃণমূলের কর্মী থেকে শার্ষ নেতৃত্বর কাছে সাড়া জাগানো দিন। কারণ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগামীর জন্য কী নির্দেশ দেন সেই দিকে সকলেই তাকিয়ে। ইতিমধ্যে দলের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, গত কয়েক বছরের মতো এবারও রাজ্য কমিটির তরফে দেওয়া সিডি মেনেই পোস্টার ও ব্যানার করতে হবে। দলীয় কমিটির নামেই ওই ব্যানার হবে। কোনও ব্যক্তির নামে ব্যানার বা পোস্টার করা যাবে না।
গত বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে তৃণমূল ভালোই ফল করেছে। রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপি শাসকদলের কাছে ধরাশায়ী। আগামী নির্বাচনে রাজ্যে রেকর্ড আসনে জিততে নতুন করে রণনীতি সাজাতে মরিয়া তৃণমূল। বেশ কয়েকদিন ধরে তৃণমূলের অন্দরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ উঠেছিল তা ঠিক করতে আসরে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ( CM Mamata Banerjee)। এমনকী দুর্নীতি নিয়েও কাউকে রেয়াত করা হবে তা নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন। ২৬ এর আগে দলের মন্ত্রী-বিধায়কদের স্বচ্ছ ভাবমূর্তিকে প্রাধান্য দিচ্ছেন তৃণমূলনেত্রী। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা গিয়েছিল দলে যে যত বড়ই হোক না কেন কর্মীদের কাজকেই প্রাধান্য দেওয়া হবে। সম্প্রতি দলের জেলা সংগঠনে বেশ কিছু রদবদল করেছে তৃণমূল। বেশ কয়েকটি জেলায় জেলা সভাপতির পদও তুলে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। তারপরই শনিবার ২১ জুলাইয়ের প্রত্সুতি বৈঠক বসতে চলেছে। দলের সকল স্তরের নেতা-কর্মীকে এক ছাতার তলায় নিয়ে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে বিধানসভা ভোটে দলের রণকৌশল কী হতে পারে, তা নিয়ে বার্তা দিতে পারেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে এ বছরের কর্মসূচির আলাদা তাৎপর্য রয়েছে।
দেখুন ভিডিও