জলপাইগুড়ি: আগামী ১৩ নভেম্বর রাজ্যের ৬ কেন্দ্রের সঙ্গে উপনির্বাচন মাদারিহাটেও (By-election at Madarihat)। মাদারিহাট বিধানসভা উপনির্বাচনের মুখে বিজেপিতে বড়সড় ভাঙনের আশঙ্কা। তৃণমূলের যোগ দিতে পারেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা জন বারলা এমন এই গুঞ্জন ডুয়ার্সের আকাশে বাতাসে। উপনির্বাচনের দলের প্রচারে দেখা যাচ্ছে না প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে। এই পরিস্থিতিতে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জন বারলার (John Barla) সঙ্গে দেখা করলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। জন বারলার ডুয়ার্সের বানারহাটের লক্ষ্মীপাড়া চা বাগানের বাড়িতে হঠাৎই উপস্থিত তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক দীপেন প্রামানিক ও তৃণমূলের জেলার মুখপাত্র দুলাল দেবনাথ। তাহলে কি এবার ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে জন- বার্লা কি তৃণমূলে যেতে চলেছেন? এই নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে।
চব্বিশের লোকসভা ভোটে টিকিট না পেয়ে নিষ্ক্রিয় হয়েছিলেন তিনি। সেই সময় শীর্ষ নেতাদের চাপে প্রার্থী মনোজ টিগ্গার হয়ে প্রচারে নেমেছিলেন। আগামী ১৩ ই নভেম্বর আলিপুরদুয়ার জেলার মাদারিহাট বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন। এই মাদারিহাট বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে জলপাইগুড়ি জেলার বানারহাট ব্লকের দুটো গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে,বিন্নাগুরি গ্রাম পঞ্চায়েত ও সাকোয়াঝোরা গ্রাম পঞ্চায়েত। উপনির্বাচনে ফের তাঁর নিষ্ক্রিয়তা টের পাওয়া যাচ্ছে। বিধানসভা নির্বাচনের আগেই জন বার্লা তৃণমূলে যোগ দেবেন? যদিও এনিয়ে বার্লার মন্তব্য, দল বদলের কোন চিন্তা করিনি, দিপেন প্রামানিক আমার পুরনো প্রেসিডেন্ট ছিল জলপাইগুড়ি জেলার উনি আসবে বলেছিলেন তাই এসেছে কথা বললাম।
জন বারলা নাম না করে মনোজ টিজ্ঞার উদ্দেশ্যে বলেন, এখানে ওয়ান আর্মি হিসেবে চলছে কারও সঙ্গে কোনও কথা না বলে, মাদারিহাট এর উপ-নির্বাচনে আমার দুদিকে দুই ভাই, একদিকে গোর্খা একদিকে আদিবাসী, আমি ময়দানে নামলে গোর্খা আদিবাসী রাগ করবে, ২৬ নির্বাচন আছে ওদেরকে যদি খেপিয়ে দিই তাহলে ওরা আমাদের কিভাবে ভোট দেবে? যার জন্য নির্দল প্রার্থী এখানে দাঁড়ালো আমারই ভাই এরা বিজেপির কার্যকর্তা, ওয়ান ম্যান আর্মি হিসেবে কেউ যদি জেলা চালায় তাহলে কি চলবে ? তাই ওয়ান ম্যান এর জন্য কোনও লিডারশিপ নামছে না এইভাবে তো চলবে না, আপনারা বুঝবেন কাকে বলছি, এখন আমাকে ছাড়া জিতলে ভালো, চা বাগানের মানুষকে নিয়ে না চললে কেন বিশ্বাস করবে।
বার্লার গলায় দলীয় নেতৃত্ব নিয়ে সমালোচনার শোনা গিয়েছিল। জেলা কমিটি, জেলা নেতৃত্ব নিয়েও চরম অসন্তোষ রয়েছে তাঁর। আমিই সব,আমিই এমএলএ, আমিই প্রেসিডেন্ট বাকিরা তাহলে কি করবে ? বাগানের বোনাস মিটিংয়ে আঁতাত করেছে বাগানের ম্যানেজারদের সঙ্গে, আমি শুনেছি বোনাসের শতাংশ একটু কমলে কেউ গরিব হবে না, ভবিষ্যতে ভোটব্যাঙ্ক আরও নামবে। এই লিডার শিপকে ভরসা পাচ্ছে না কেউ,যেভাবে লিডারশিপ চলছে কলকাতা থেকে আমাদের পাত্তাই দেবেন, কোন লিডারশিপ নেই জলপাইগুড়ি জেলা এবং আলিপুরদুয়ার জেলায়,কিভাবে পার্টি চলবে ?কোন কমিটিতে কাউকে রাখেনা না জেলা কমিটি না মন্ডল কমিটি আদিবাসী তো দূরের কথা। আমি তন মন ধন দিয়ে কাজ কড়েছি, বিজেপির ঝান্ডা লাগানো কেউ ছিলনা, কেউ ঝাণ্ডাল তুলতে পারছিল না তখন আমি তুলেছি,নিশ্চয়ই এজন্যেই গত লোকসভা নির্বাচনে ফল খারাপ হয়েছে।
আরও পড়ুন: হাতমুখ বেঁধে ধর্ষণের চেষ্টা নাবালিকাকে
তিনি বলেন, এক লক্ষ ৭৫ হাজার মোট মাইনাস,কলকাতা থেকে অনেককে পাঠিয়েছিল সমাধান করতে তাও মাইনাস হয়েছে ভোট,তার ওপর বিশ্বাস করবে মানুষ ?এই লিডারশিপের সঙ্গে কিভাবে কাজ করবো ?রাজ্য কেন্দ্র সব জানে কেউ চা বাগান নিয়ে কোন কথা বলে না বহুবার পার্টিকে বলেছি চা বাগান নিয়ে আন্দোলন করি, একদিন আসবে মিছিল করলাম ব্যাস, জনতার বিচার নিয়ে না চললে ফল তো ভুগতেই হবে, যেই আসুক চা বাগান নিয়ে কিছু বলেনা বারবার একটা গান করবে একটা ইস্যু নিয়ে গান বাজাবে ওটা আর বাঁচবে না। সামনে আমি করব এখন আমি ময়দানে নেই,আদিবাসী সমাজ ডাকছে আমাকে। আলিপুরদুয়ার জেলা জলপাইগুড়ি জেলা সব বিগ্রে গিয়েছে সব সংগঠন ভেঙে যাচ্ছে আমার ঘরও ভাঙতে চেয়েছিল। সব এমএলএদের আমি জিতিয়েছি, এখন তাই আমি প্রচারে নেই। এখনও রামঝোড়া, দলমোড় চাবাগান এখনও বন্ধ পড়ে আছে যেতে পারছিনা ওই বাগানে। সুকান্ত মজুমদার এসেছিল আমার বাড়িতে আমি বলেছি এই লিডারশিপ থাকলে কাজ করা যাবে না সব ভেঙে দিয়েছে।
অন্য খবর দেখুন