নয়াদিল্লি: লোকসভা ভোট (Loksabha Vote) মিটে গিয়েছে একমাস আগে। নতুন সরকার গঠিত হয়েছে কেন্দ্রে। ২২ জুলাই থেকে পূর্ণাঙ্গ বাজেট অধিবেশন শুরু হবে। ২৩ জুলাই সপ্তমবারের জন্য বাজেট পেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। এখন বিজেপি এবং আরএসএসের প্রধান মাথা ব্যাথা দলের পরবর্তী জাতীয় সভাপতি (National President) নিয়ে। বর্তমান সভাপতি জে পি নাড্ডার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। তিনি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক সামলাচ্ছেন এখন। কে হবেন পরবর্তী সভাপতি, তা নিয়ে বিজেপির অন্দরে নানা চর্চা চলছে। চর্চা হচ্ছে আরএসএসের শীর্ষ স্তরেও।
সূত্রের খবর, লোকসভা ভোটের ফলে আরএসএস নেতৃত্ব খুশি নয়। দ্বিতীয় মোদি সরকারের জমানায় বিজেপির সঙ্গে সঙ্ঘ পরিবারের সমন্বয়ের অভাবের কথা প্রকাশ্যে এসেছে। ভোটের ফল প্রকাশের পর সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবত বলেছেন, প্রকৃত দেশসেবকের কোনও অহঙ্কার থাকা উচিত নয়। বিভিন্ন মহল মনে করছে, ভাগবতের নিশানা হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এবারের ভোটে মোদি সহ বিজেপির নেতারা বিরোধীদের যে ভাষায় আক্রমণ করেছেন, ভাগবত তাও ভালোভাবে নেননি। তিনি বলেছেন, বিরোধীদের প্রতিপক্ষ ভেবে লড়াই করা উচিত।ভোটে জয় পরাজয় তো থাকবেই। এবার ভোট চলাকালীনই নাড্ডা বলেছিলেন, বিজেপি এখন একাই চলতে সক্ষম। তার কারও সাহায্য দরকার পড়ে না। সঙ্ঘ পরিবারের সদস্য নাড্ডার এ হেন মন্তব্যও আরএসএস শীর্ষ নেতৃত্ব ভালো মনে নেননি। এই অবস্থায় সঙ্ঘ পরিবার এবার সরকার চালানোর ক্ষেত্রে রাশ নিজেদের হাতে রাখতে চায়। পরবর্তী সভাপতি নিয়েও সঙ্ঘ নানা চিন্তা করছে।
আরও পড়ুন: বলাগড়ের গুপ্তিপাড়ার রথযাত্রা দেখতে উপচে পড়ল ভিড়
গত বুধবার বিজেপি এবং সঙ্ঘের শীর্ষ নেতৃত্ব দীর্ঘ বৈঠক করেন। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকের আলোচ্য বিষয় ছিল পরবর্তী সভাপতি। এ বছরের শেষে এবং সামনের বছরের গোড়ায় মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ডের ভোট রয়েছে। আর কালবিলম্ব না করে তার আগেই সভাপতি নির্বাচন সেরে ফেলতে বিজেপির উপর চাপ সৃষ্টি করছে সঙ্ঘ। মহারাষ্ট্র এবং ঝাড়খণ্ডে লোকসভা ভোটের ফল বিজেপির অনুকূলে যায়নি। মোদি, শাহ জুটি যেভাবে এবার চারশো পারের স্লোগান দিয়েছিল, সেটাও সঙ্ঘ পরিবারের চোখে ভালো লাগেনি। সব মিলিয়ে আরএসএস এবার আরও কড়া কাউকে সভাপতি করতে চাইছে। বিনোদ তাউড়ে, বি এল সন্তোষ থেকে অনেকের নামই আলোচনায় উঠে আসছে।
জেপি নাড্ডা সরকারে মন্ত্রী হয়েছেন। ফলে পরবর্তী বিজেপি প্রেসিডেন্ট কে হবেন? তিনি আরএসসের পছন্দের কেউ হবেন না কি মোদির পছন্দের হবেন? সামনেই মহারাষ্ট্র সহ একাধিক রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। তার আগে এই বিষয়টি নিয়ে জল্পনা ছড়িয়েছে। এবার লোকসভায় নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা নেই বিজেপির। তারা ২৪০টি আসন পেয়েছে। ফলে চাপ বাড়বে আরএসএসের দিক থেকে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। দ্য হিন্দুর অ্যাসোসিয়েট এডিটর ও পলিটিক্যাল এডিটর নিসতুলা হেব্বারও একটি সাক্ষাতকারে বলেন, আরএসএস বুঝিয়েছে আমাদেরকে জিজ্ঞেস করে পার্টির সভাপতি বাছাই করা হোক।
উল্লেখ্য, যেবার প্রথম প্রধানমন্ত্রী হলেন নরেন্দ্র মোদি তখনও কে সভাপতি হবেন তা নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছিল। ভোটের আগে রাজনাথ সিংকে সভাপতি করা হয়। কিন্তু ভোটের পরে সভাপতি করা হয় মোদির পছন্দের অমিত শাহকে। এখন সময় বদলেছে। বিরোধীরা এখন খুব সক্রিয়। বিরোধীরা ভালো ভালো বিষয় তুলে ধরছে। নিটের মতো বিষয় তুলে ধরছে। অগ্নিবীর বিষয় তুলে ধরেছে। সেখানে একজন দাপুটে বিজেপি সভাপতি হোক চাইবে বিজেপি নেতৃত্ব।
আরও খবর দেখুন