কলকাতা: ১৯ বছর পর ডুরান্ড কাপের (Durand Cup) ফাইনালে মুখোমুখি ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) এবং মোহনবাগান (Mohun Bagan)। রবিবাসরীয় কলকাতা ডার্বি (Kolkata Derby) নিয়ে উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। ছুটির দিনটায় ফের দ্বিখণ্ডিত হবে বাঙালি। তবে সবকিছু ছাপিয়ে যে বিষয়টা অস্বস্তি দিচ্ছে তা হল রেফারিং। ডুরান্ড কাপের একাধিক ম্যাচে রেফারিং নিয়ে অসন্তোষ দেখা গিয়েছে, বিশেষ করে মোহনবাগানের কোয়ার্টার ফাইনাল এবং সেমিফাইনাল ম্যাচে রেফারির ভুল সিদ্ধান্ত স্পষ্ট চোখে পড়েছে।
কোয়ার্টারে হুয়ান ফেরান্দোর (Juan Ferando) দলের বিরুদ্ধে ন্যায্য পেনাল্টি দেওয়া হয়নি মুম্বই সিটিকে (Mumbai City)। দেওয়া হলে খেলার ফল অন্যরকম হতে পারত। সেমিফাইনালে মোহনবাগানকে যে পেনাল্টি দেওয়া হল তা কি ন্যায্য? না, বক্সের বাইরে ফাউল হয়েছিল। খুব স্বাভাবিক, ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা এ নিয়ে চেঁচামেচি করবেন। বাগানের মালিক সঞ্জীব গোয়েঙ্কা রেফারিকে কিনে নিয়েছেন এরকম ‘আওয়াজ’ সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচুর। কেউ কেউ রসিকতা করছেন, রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী ফাইনালে ডার্বি চান, অনেকটা ‘ধন্যি মেয়ে’ ছবির শিল্ড যেন গ্রামের বাইরে না যায় টাইপ ব্যাপার।
আরও পড়ুন: ২০ বছর পর মেসি-রোনাল্ডোহীন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, গ্রুপ অফ ডেথে এমবাপের পিএসজি
এসব রসিকতা, বিক্ষোভ সরিয়ে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে আসা যাক। ভারতীয় ফুটবলে কবে ভিএআর (VAR) প্রযুক্তি আসবে? ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা চিল্লামিল্লি করছেন, মোহনবাগানকে দুয়ো দিচ্ছেন, খিস্তিখেউড় করছেন, কিন্তু কেউ এই প্রশ্নটা তুলেছেন? তাঁরা কেউ আসল জায়গায় নাড়া দেননি। মোহনবাগান সমর্থকরা তো চুপ থাকবেনই। মুম্বই-ম্যাচে রেফারির কিছু সিদ্ধান্ত তাদের দলের বিরুদ্ধে গিয়েছিল, তা থেকে গোল হলে তাঁরাও হইচই করতেন।
শুধু কি ডুরান্ড কাপ, সামগ্রিকভাবেই ভারতীয় ফুটবলে রেফারিং খুবই নিম্নমানের। ছেলেবেলায় শুনেছিলাম রেফারির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। রেফারি মানুষ এবং মানুষ মাত্রেই ভুল হয়। কিন্তু ভুল ক্রমাগত হতে থাকলে? গ্রহণযোগ্য নয় আর সেই কারণেই ভিএআরের আগমন। পৃথিবীর সমস্ত প্রথম সারির ফুটবল প্রতিযোগিতা তো বটেই, আমেরিকার মেজর লিগ সকার কিংবা সৌদি আরবের সৌদি প্রো লিগেও ভিএআর আছে।
এবার বলতে পারেন, এত পয়সা কোথায়। মানছি ভারতীয় ফুটবলে অর্থাভাব আছে। কিন্তু যে ক্যামেরাগুলোর মাধ্যমে লাইভ সম্প্রচার করা হয়, সেগুলো ব্যবহার করলেই মুম্বই পেনাল্টি পেতে পারত কিংবা মোহনবাগানের পেনাল্টি ফ্রি-কিক হত। হ্যান্ডবল থেকে রেফারির নজর এড়িয়ে জঘন্য ফাউল, অফসাইড কি না, এই সব ধরা পড়ত ক্যামেরায়। এর জন্য আলাদা করে ক্যামেরা বসানোর প্রয়োজন নেই। শুধু কিছু লোককে নিয়োগ করা দরকার যাঁরা টিভির পর্দায় রিপ্লে দেখবেন এবং দরকার মতো রেফারিকে পরামর্শ দেবেন। ডুরান্ড কাপ না হয় বাদ দিলাম, অন্তত আইএসএলে (ISL) ভিএআর অবশ্যই আসা উচিত। যে দেশে ঘরোয়া ক্রিকেটে একটা ক্যাচ দেখতে ১৫-২০টা ক্যামেরা দেখা হয়, সেখানে রেফারির সিদ্ধান্ত যাচাই হবে না কেন? এটা তো ‘হ্যান্ড অফ গড’ যুগ নয়।