চন্দ্রকোনা: সরকারি জায়গা দখল করে দোকান বা হকারী বন্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কড়া বার্তা, প্রশাসনের তৎপরতা, এমনকি বুলডোজার নিয়ে শুরু হয়েছে রাজ্যের নানান প্রান্তে উচ্ছেদ অভিযান। সরকারি জায়গা বেদখল ও ফুটপাতে হকারি বন্ধে ইতিমধ্যে পুরসভাগুলো মাইকিং করে সতর্ক করছে। চন্দ্রকোনার ক্ষীরপাই পুরসভা (Chandrakona Municipality) ইতিমধ্যে মাইকিং প্রচার করে সরকারি জায়গা দখলমুক্ত করতে সতর্কবার্তা দিলেও এখনও তেমন কোনও উদ্যোগ নজরে পড়েনি এলাকায়।
বহু বছর ধরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডের (Chandrakona Central Bus Stand) যাত্রী সেড বেদখল হওয়া ঠেকাতে নিস্ক্রিয় চন্দ্রকোনা পুরসভা। চন্দ্রকোনা পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত এই সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডটি। চন্দ্রকোনা ছাড়াও গড়বেতা, মেদিনীপুর, ঘাটাল সহ হাওড়া, কলকাতা থেকে বাঁকুড়া হোক বা ঝাড়গ্রাম আবার তারকেশ্বর,বর্ধমান, এমনকি বিভিন্ন দুরপাল্লার বাসের যাতায়াত এই চন্দ্রকোনা সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডের উপর দিয়েই। অভিযোগ, গোটা বাসস্ট্যান্ড চত্বর জবরদখল করে রেখেছে বিভিন্ন হকার থেকে ঠেলাগাড়ি বা দোকান। তার উপর টোটো-ছোটো গাড়ির দৌরাত্ম্য ক্রমেই বেড়ে চলেছে বাসস্ট্যান্ডের বিভিন্ন জায়গায়। যার জেরে বাস চলাচল থেকে যাত্রী উঠানামায় চরম সমস্যার পড়তে হয় বাস চালকদের।
আরও পড়ুন: দীঘার জগন্নাথ মন্দির তৈরিতে বিলম্বে ক্ষোভ মুখ্যমন্ত্রীর
বাসস্ট্যান্ডের দুদিকে দুটি যাত্রী শেড। যেখানে যাত্রীদের জন্য বসার ও বাসের অপেক্ষার জন্য দাঁড়ানোর ব্যবস্থা রয়েছে। অভিযোগ, বহু বছর ধরে এই দুটি যাত্রী সেডের ভিতরে ভিতরে গজিয়ে উঠেছে একাধিক দোকান থেকে লটারির ব্যবসা। ফলে সেই যাত্রী সেডে যাত্রীদের দাঁড়ানো বা বসা তো দূর, সকাল-সন্ধ্যা দিনভর যাত্রী শেডে অপ্রয়োজনীয় আড্ডারস্থলে পরিণত হয়েছে। আর এতেই ক্ষুব্ধ যাত্রী থেকে বাসস্ট্যান্ড কর্তৃপক্ষ ও চন্দ্রকোনাবাসী।
বাসস্ট্যান্ডের মতো একটি সরকারি জায়গায় এহেন জবরদখল নিয়ে কেন নিশ্চুপ তৃণমুল পরিচালিত চন্দ্রকোনা পুরসভা? প্রশ্ন তুলেছে বাসস্ট্যান্ড কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, একাধিক বার পুরসভা থেকে পুলিশ প্রশাসন সবাইকে চিঠি দিয়ে বাসস্ট্যান্ডে যাত্রী শেডের ভিতর দোকানদারদের জবরদখল সরানোর জন্য আবেদন করা হলেও কোনও কাজ হয়নি।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে যাত্রীদের সুবিধার্তে এবার দখল মুক্ত হোক বাসস্ট্যান্ড চাইছে বাসস্ট্যান্ড কর্তৃপক্ষ থেকে সাধারণ যাত্রীরা। তবে দোকানদাররা চাইছে তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করুক পুরসভা। পুরসভার চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, “আমি বোর্ড অফ কাউন্সিলর মিটিং ডেকেছি। সেখানে জবরদখল, উচ্ছেদ নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এর মধ্যে সরকারি জায়গা নিজেরা না ছেড়ে দিলে পুরসভা ব্যবস্থা নেবে।” এখন দেখার, পুরসভার তৎপরতায় মুখ্যমন্ত্রীর বেঁধে দেওয়া একমাসের সময়সীমার মধ্যে বাসস্ট্যান্ড দখলমুক্ত হয় কিনা!
আরও খবর দেখুন