কলকাতা: ২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে (Lok Sabha Election 2024) তৃণমূলের দুরন্ত সাফল্যের পরেও শহর এলাকার ভোটব্য়াঙ্কে বড়সড় ধাক্কা লেগেছে তৃণমূলের। সারা রাজ্য়ের একাধিক পুর এলাকায় ভোটপ্রাপ্তির নিরিখে রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপির থেকে বেশ কিছুটা পিছিয়ে তৃণমূল (TMC)। লোকসভা ভোটে ১২১ পুরসভার মধ্যে বিজেপি এগিয়ে ৬৭টিতে। ৫০টিতে এগিয়ে আছে শাসকদল তৃণমূল। কলকাতা পুরসভার ১৪৪ ওয়ার্ডে ৪৫টিতে এগিয়ে বিজেপি। এই আবহে পুর পরিষেবা নিয়ে সোমবার নবান্নে বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বৈঠকের শুরু থেকেই তীব্র ক্ষোভ উগরে দিতে শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। পুর পরিষেবার বেহাল দশা নিয়ে আক্রমণাত্মক মুখ্য়মন্ত্রীর মুখে শোনা গেল পুর পরিষেবায় দুর্নীতির কথা।
এদিন বৈঠক থেকে মুখ্য়মন্ত্রী একাধিক পুরসভার চেয়ারম্যানকে নিশানা করলেন। বাদ গেলেন না মন্ত্রীরাও। বিধাননগর পুরনিগমে ইচ্ছমতো লোক বসানো হচ্ছে, সরাসরি এই অভিযোগ তুললেন সুজিত বসুর (Sujit Bose) বিরুদ্ধে। মুখ্যমন্ত্রী বললেন, “যেখান সেখান থেকে লোক এনে পুরসভায় কাজ দিচ্ছে। যেখানে সেখানে দোকান বসে যাচ্ছে অনুমতি ছাড়া।” বৈঠক থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানিয়ে দিলেন, আজ থেকে স্থানীয়দের হাত থেকে টেন্ডার তুলে নেওয়া হচ্ছে। কোনও টেন্ডার লোকালি হবে না বলে জানিয়ে দিলেন তিনি।
বিধাননগর (Bidhannagar) পুরনিগমে নিয়োগ নিয়ে সুজিত বসুর বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি তাঁর তিরস্কারের মুখে পড়তে হল শিলিগুড়ি পুরনিগমের মেয়র গৌতম দেবকেও। শিলিগুড়িতে (Siliguri) সম্প্রতি জল সমস্যা নিয়ে তাঁর নাম না করে যথেষ্ট ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কাজ না হলেই এবার থেকে শাস্তির কোপে পড়তে হবে, চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: পুর পরিষেবা নিয়ে রাগে অগ্নিশর্মা মুখ্যমন্ত্রীর চরম হুঁশিয়ারি
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ সল্টলেকে সুজিত বসু লোক বসাচ্ছেন কম্পিটিশন করে। “সল্টলেকের অবস্খা খুবই খারাপ। সল্টলেক আর রাজারহাটের দিকে তাকানো যাচ্ছে না। যা পারছে টাকা নিয়ে বসিয়ে দিচ্ছে। সুজিত বোস তো এদের মধ্যে অন্যতম। কেন সল্টলেকের কাউন্সিলররা কাজ করেন না। দীঘা উন্নয়ন পর্ষদের কি আর দরকার আছে? ওখানে পুরসভা আর পঞ্চায়েত তো আছে। হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদও তাই। বড় বড় বাড়ি বানিয়ে রেখেছে। আর চারশ পাঁচশ লোক রেখে গা টেপাচ্ছে আর পা টেপাচ্ছে”, মন্তব্য মমতার।
এদিন নবান্ন সভাগৃহের বৈঠক থেকে পুর-পরিষেবা নিয়ে, জমি জবরদখল নিয়ে নানান অভিযোগ শোনা গেল মমতার মুখে। তাঁর মন্তব্য, “কেউ টাকা খেয়ে, কেউ খাইয়ে এসব করছে। এভাবে টাকার বিনিময়ে এসব কাজের জন্য রাজ্যের ভাবমূর্তি খারাপ হচ্ছে। একটা গ্রুপ তৈরি হয়েছে, খালি জায়গা দেখলেই লোক বসাচ্ছে। একেই কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না, টাকা খাওয়ার জন্য রাজ্যের বদনাম হচ্ছে। এসবে রাজ্যের ভাবমূর্তি খারাপ হচ্ছে।” পাশাপাশি ‘জমি বণ্টন এবার কেন্দ্রীয় ভাবে, ডিএম থেকে জনপ্রতিনিধি-সবার এক অবস্থা। ট্যাক্স বাড়ানো, লোক বসানো ছাড়া পুরসভা কোনও দায়িত্ব পালন করছে না’, গড়িয়াহাট, হাতিবাগানে হকার নিয়ে পুরসভাকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
দেখুন বিস্তারিত