হাওড়া: হাওড়া ও শিবপুর (Howrah-Shibpur) থানার দায়িত্বে নতুন আইসি। সরানো হল হাওড়া থানার (Police Station) আইসি (IC) দীপঙ্কর দাসকে। অপসারিত শিবপুর থানার আইসি অরূপ কুমার রায়ও। সোমবার রাতেই ওই দুই আইসিকে সরিয়ে দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রাজ্য সরকার।
হাওড়া থানার আইসি দীপঙ্কর দাসকে পাঠানো হয়েছে ঝাড়গ্রামের কোর্ট ইনস্পেক্টর করে। তাঁর জায়গায় নতুন আইসি হিসেবে দায়িত্ব পেলেন সন্দীপ পাখিরা। তিনি চন্দননগর কমিশনারেটের আইবি পদে ছিলেন। অন্যদিকে, শিবপুর থানার আইসি অরূপ কুমার রায়কে রাজ্য পুলিশের আইবিতে পাঠানো হয়েছে। তাঁর জায়গায় শিবপুর থানার দায়িত্বে আনা হয়েছে অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে। পাশাপাশি বদল হয়েছে ইসলামপুর পুলিশ জেলার এসপিও। বিশপ সরকারকে সরিয়ে তাঁর স্থানে আনা হল যশপ্রীত সিংকে।
আরও পড়ুন:Shaktigarh Incident | রাজু খুনে অধরা দুষ্কৃতীরা, ফের শক্তিগড়ে যুবকের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার
রামনবমীর মিছিল ঘিরে সম্প্রতি রাজ্যের তিন জেলায় ব্যাপক অশান্তি হয়। হাওড়ার শিবপুর, হুগলির রিষড়া এবং উত্তর দিনাজপুরের ডালখোলায় হিংসা ছড়ায়। বিরোধীদের অভিযোগ, রাজ্য সরকারের উস্কানি এবং পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার কারণেই ওই তিন জেলায় রামনবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে হিংসা ছড়িয়েছে। শাসকদলের পাল্টা অভিযোগ, তিন জায়গাতেই বিজেপির ইন্ধনে দুষ্কৃতীরা গোলমাল পাকিয়েছে। ওই ঘটনায় এনআইএ তদন্ত দাবি করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার সেই মামলার শুনানি শেষ হয়েছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। তবে আদালত রায়দান স্থগিত রেখেছে। শুনানি পর্বে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, রামনবমীর মিছিল ঘিরে ব্যাপক হিংসার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের রিপোর্টেই তা স্পষ্ট। রাজ্য পুলিশের পক্ষে এই ঘটনার তদন্ত করা সম্ভব নয়। কেন্দ্রীয় সংস্থাই পারে এই ঘটনার তদন্ত করতে।
সোমবারই নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, পুলিশ ওই সময় খুব ট্যাক্টফুলি খেলেছে। যদিও ঘটনার দিনই রেড রোডের ধরনা মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকেও তোপ দেগেছিলেন। তিনি বলেন, পুলিশের ভূমিকায় আমি খুশি নই। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই ঘটনা সম্পর্কে খোঁজ-খবর করতে রাজ্যে আসে একটি তথ্যানুসন্ধানী কমিটি। তাতে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, আইনজীবী, সাংবাদিক সহ বিভিন্ন পেশার লোকজন ছিলেন। তবে ১৪৪ ধারার অজুহাতে রাজ্য পুলিশ ওই কমিটিকে শিবপুর বা রিষড়ায় ঢুকতে দেয়নি। কমিটির অভিযোগ, ওই ঘটনার পিছনে রাজ্য সরকারের হাত রয়েছে। কিছু আড়াল করতে চায় বলেই সরকার তাদের ঢুকতে বাধা দিয়েছে। এই কমিটিও তাদের রিপোর্টে এনআইএ তদন্তের সুপারিশ করে। মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য বলেন, এই ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি খায় না মাথায় দেয়, তাই জানি না। কিছু হলেই দিল্লি থেকে এখানে একটা কমিশন পাঠিয়ে দেয়। বিরোধীদের দাবি, কিছু হয়েছে বলেই তো আইসি-এসপিদের বদলি বাধ্য হয়েছে রাজ্য সরকার।