কলকাতা: বাংলাজুড়ে সবুজ ঝড়। বঙ্গে বিজেপি (BJP) বিপর্যস্ত। এখনও পর্যন্ত ফলাফল যা তাতে ৪২ টা আসনের মধ্যে ২৯ আসনে এগিয়ে তৃণমূল। বিজেপি ১২টি আসনে এগিয়ে। চাকরি থেকে রেশন দুর্নীতি, কয়লা থেকে গরু পাচার কোনও অভিযোগই থামাতে পারেনি তৃণমূলের বিজয়রথকে। মমতা-অভিষেকের জুটি বাজিমাত করল বঙ্গে। এ রাজ্যে সবচেয়ে বেশি ভোটে জয়ের পথে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ( Abhishek Banerjee)। ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্র থেকে অভিষেক এখনও পর্যন্ত ৭ লাখ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন। গণনার মাঝেই দুপুরে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) কালীঘাটের বাড়িতে গিয়ে সাক্ষাৎ করেন অভিষেক। ইতিমধ্যেই সবুজ আবিরে ঢেকেছে বাংলার রাস্তাঘাট। বেশিরভাগ জায়গাতেই বেরিয়ে পড়েছেন সমর্থকরা বিজয় মিছিল নিয়ে।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে (LokSabha Election 2024) পশ্চিমবঙ্গে দুর্দান্ত ফল করেছিল বিজেপি। সেবার ১৮টি আসন পেয়েছিল গেরুয়া শিবির। রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল গত লোকসভা নির্বাচনে পেয়েছিল ২২টি আসন। এবারে নির্বাচনে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ডেলি প্যাসেঞ্জারি করেও ব্যর্থ। বিজেপি একেবারে মুখ থুবড়ে পড়েছে। কাজে এল না ইডি-সিবিআই, সন্দেশখালি। মোদি-শাহ, শুভেন্দু-সুকান্তদের নির্বাচনী প্রচারে হাতিয়ার ছিল দুর্নীতি থেকে সন্দেশখালি (Sandeshkhali)। নিয়োগ দুর্নীতি-সন্দেশখালি দাগ কাটতে পারল না। সবই মাঠে মারা গেল মমতার লক্ষ্মীর ভান্ডার (Lakshmi Bhandar), স্বাস্থ্যসাথী, কন্যাশ্রী (Kanyashree)-যুবশ্রী, শিক্ষাশ্রী, বার্ধক্যভাতার কাছে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার ভরে দিয়েছে তৃণমূলের ভোটের ভাণ্ডার। শুধু বাংলা নয়, সারা দেশে দাগ কাটেনি রামমন্দির ফ্যাক্টর। রাজ্যে বারবার প্রচারে এসে মোদি-শাহ বলেছেন এইবার ৪০০ পার। বিকেল ৫ টার ট্রেন্ড দেখাল, ৩০০-র আশেপাশেই রইল বিজেপি। বাংলায় মোদি ম্যাজিক কাজ করল না। বেশির ভাগ এক্সিট পোলের হিসেব উল্টে পাল্টে গেল।
আরও পড়ুন: পাঠান ‘অনুপ্রবেশ’, ধ্বংস অধীর-দুর্গ
তৃণমূলের মাস্টারস্ট্রোক কাজে লেগে গেল। বাংলায় তৃণমূলের জয়ের মূল কারণ, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা দ্বিগুণ করে দেওয়া। ভোটের মুখে রাজ্য বাজেটে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের অনুদান ৫০০ থেকে বাড়িয়ে ১০০০ টাকা করা হয়। তফসিলি জাতি ও জনজাতিদের ক্ষেত্রে ১০০০ টাকা থেকে বেড়ে হয় ১২০০ টাকা। এর প্রভাবও ভোট বাক্স সরাসরি পড়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি প্রচারে নেমে তৃণমূলের নেতামন্ত্রীরা বারবার কেন্দ্রীয় বঞ্চনার কথা তুলে ধরেছেন। মানুষকে বুঝিয়েছেন, কেন্দ্র ১০০ দিনের টাকা আটকে রেখেছে। অভিষেকের দিল্লি থেকে ধর্মতলায় ধরনা, সবকিছরই প্রভাব পড়েছে ভোট বাক্সে। ঘাটাল মাস্টাক প্ল্যান বাস্তবায়িত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তৃণমূল। সব শেষে সন্দেশখালির স্টিং অপারেশনের ভাইরাল হওয়া ভিডিও কয়েকগুণ ভরিয়ে দিয়েছে তৃণমূলের ভোটবাক্স।
অন্য খবর দেখুন