তুফানগঞ্জ: অভিষেকের (Abhishek Banerjee) নবজোয়ারের মাঝেই কোচবিহারে (Cooch Behar) ভাঙন তৃণমূলে (TMC)। তুফানগঞ্জে (Tufanganj) দলত্যাগ ৩২ তৃণমূল নেতার। মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে জনসংযোগ যাত্রা (Jano Sangjog Yatra), যার পোশাকি নাম ‘তৃণমূলের নবজোয়ার’। এই কর্মসূচি চলবে আগামী দুমাস। এই যাত্রার মাঝেই তুফানগঞ্জে দলবেঁধে ৩২ জন তৃণমূল নেতা বিভিন্ন পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। পদত্যাগীদের মধ্যে বুথ সভাপতি থেকে শুরু করে অঞ্চল সম্পাদক, এমনকী ব্লক কমিটির সদস্যরাও রয়েছেন। অভিষেক জেলায় থাকাকালীনই তুফানগঞ্জে এই গণইস্তফা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেই নানা জল্পনা শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার তুফানগঞ্জের (Tufanganj) ধলপল ১ অঞ্চলের তৃণমূল (TMC) কংগ্রেসের ৩২ জন পদাধিকারী সাংবাদিক বৈঠক ডেকে ইস্তফার কথা ঘোষণা করেন। তাঁদের অভিযোগ, দলের পুরনো কর্মীদের এখন আর কোনও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে প্রবীণদের যোগাযোগও ক্ষীণ হয়ে গিয়েছে। অন্য দল থেকে আসা নব্য তৃণমূলীরা মাতব্বরি করছে, তাই তাঁরা দল ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। তবে অন্য কোনও দলে যাবেন কি না সেব্যাপারে ওই নেতারা স্পষ্ট করে কিছু জানাননি।
আরও পড়ুন:Recruitment Scam | CBI | টেটে চাকরি, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কাছে পুর্ণাঙ্গ তালিকা চাইল সিবিআই
বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। তৃণমূল কংগ্রেস জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ বিজেপির স্থানীয় মণ্ডল সভাপতি যুগল কিশোর দাসের। তিনি বলেন, তৃণমূলের শেষের শুরু হয়ে গিয়েছে। সেই কারণে কোচবিহারে দল ছাড়ার হিড়িক পড়ে গিয়েছে। ধলপল ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি পরিমল দাস বলেন, এই বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার কোচবিহার (Cooch Behar) থেকে শুরু হয়েছে অভিষেকের জনসংযোগ যাত্রা। বুধবার তুফানগঞ্জেই অভিষেক একাধিক সভা করেন। তবে কোনও সভাতেই ওই নেতাদের ইস্তফার প্রসঙ্গ তোলেননি তৃণমূলের এই শীর্ষ নেতা। মঙ্গলবার সিতাই, গোসাইমারি, মাথাভাঙার একাধিক জায়গায় পঞ্চায়েতের প্রার্থী নির্বাচনের জন্য গোপন ব্যালটে ভোটাভুটির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। অভিষেকের সভা শেষ হবার পরই ওইসব এলাকায় ভোটাভুটিকে কেন্দ্র করে তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে মারামারি, ব্যালট পেপার ছেঁড়া, ব্যালট বাক্স ভাঙার মতো ঘটনা ঘটেছে। সেখবর কানে যাওয়ার পর অভিষেক তাঁর ক্ষোভ গোপন রাখেননি। তিনি পরিষ্কার বলেছেন, গায়ের জোরে এভাবে প্রার্থী নির্বাচন করা যাবেন না, গোপন ব্যালটেই ভোট হবে। যাঁরা ভোট দিতে পারবেন না তাঁরা একটি নির্দিষ্ট নম্বরে ফোন করে প্রার্থী সম্পর্কে মতামত দিতে পারবেন। মঙ্গলবারই অভিষেক জানিয়ে দেন, যেসব জায়গায় গোলমাল হয়েছে, সেসব জায়গায় বুশবার ফের ভোটাভুটির ব্যবস্থা করা হবে। কোনও বিশৃখনলা বরদাস্ত করা হবে না। এবার আমিই হব পাহারাদার।