কলকাতা: তীব্র রোদে পুড়ছে বাংলা। বৃষ্টির দেখা নেই। তাপমাত্রা ৪০ এর নিচে নামছে না। আবহাওয়ার উত্তাপের কারণে জলের স্তর তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। জলের জন্য চারিদিকে হাহাকার করছে সাধারণ মানুষ। এই পরিস্থিতিতেই এবার পানীয় জলের জন্য ক্ষোভ বিক্ষোভ দেখা গেল রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে।
বৃহস্পতিবার পানীয় জলের দাবীতে রামপুরহাট পুরসভার মূল গেটের সামনে বসে অবস্থান বিক্ষোভ করল বিজেপির কর্মী ও সমর্থকেরা। তাদের অভিযোগ, ১৮ টি ওয়ার্ডেই পানীয় জলের তীব্র সংকট। পাইপলাইনের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি জল সরবরাহের ব্যবস্থা থাকলেও বেশিরভাগ ওয়ার্ডে পানীয় জল পৌঁছায় না। ফলে তীব্র জলকষ্টে ভুগছেন এলাকার বাসিন্দারা। এরপর এদিন বিক্ষোভের পরে পুরসভার প্রধানের কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দেয় বিজেপি।
আরও পড়ুন: Summer Wedding Outfit | এই কাঠফাটা গরমে বিয়ের অনুষ্ঠান? রইল ফ্যাশন টিপস
এদিকে, পানীয় জলের দাবীতে অন্ডালের খান্দরা সিঁদুলি রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ বাউরি সমাজের মানুষেরা। সেই এলাকার তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রিতে পৌঁছেছে। জল সংকটের কারণে চরম সমস্যায় পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বাউরী সমাজের শিক্ষাসেলের লোকেরা ও সিঁদুলির বাউরী পাড়ার পুরুষ ও মহিলারা একত্রিত হয়ে বিক্ষোভে সামিল হয়। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, জলের সমস্যার কথা প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি। এই সমস্যা দীর্ঘদিনের। তাই বাধ্য হয়েই আজ পথে নেমেছেন তাঁরা। পশ্চিমবঙ্গ বাউরী সমাজের রাজ্য সভাপতি সুমন্ত বাবু এও জানান, গণতান্ত্রিক দেশে আন্দোলন করার অধিকার সবার আছে। তাঁর দাবি, অবিলম্বে এলাকাগুলিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ জলের ব্যবস্থা করতে হবে ব্লক প্রশাসনকে। দিনে দুবার ১০ ট্যাঙ্কার থেকে প্রয়োজনে ২০ ট্যাঙ্কার জল দিতে হবে এলাকাগুলিতে। নইলে তাদের এই আন্দোলন জারি থাকবে।
পানীয় জলের দাবিতে বিক্ষোভ দেখায় অন্ডালের কাজোড়া এরিয়ার সেন্ট্রাল কাজোড়া কোলিয়ারিতে বিক্ষোভ দেখান কাজোড়া গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ। গ্রামবাসীদের পক্ষে সুবীর মন্ডল জানান গরমের সময় ইসিএল এর টাঙ্কারে করে এলাকায় জল সরবরাহ করা হয় । মাধবপুর কোলিয়ারি থেকে ট্যাঙ্কারে করে সেই জল সরবরাহ করা হয়। আসা যাওয়ার পথে রয়েছে কাজোড়া রেলগেট। প্রায় সময় রেলগেট বন্ধ থাকায় জল সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে। পরিবর্তে কাজোড়া ভালুকতলা বালি ব্যাংকার ও সেন্ট্রাল কাজোড়া বালি ব্যাংকার থেকে ট্যাঙ্কারে করে জল সরবরাহের দাবিতে এদের বিক্ষোভ বলে সুবীর বাবু-রা জানান। ঘন্টা খানেক পর সেন্ট্রাল কাজোড়া কোলিয়ারি-র আধিকারিক দ্রুত এই ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ উঠে যায়।
এসবেরই মাঝে আবার একেবারে আলাদা দৃশ্য নজরে পড়ল দক্ষিণের বীরভূমে। অন্যান্য জেলা গুলির পাশাপাশি বীরভূমের জেলাতেও চাঁদিফাটা রোদ্দুর। তাপমাত্রা পারদ ছুঁয়েছে ৪৩ ডিগ্রিতে। গ্রীষ্মের তীব্র প্রবাহ থেকে পথচলতি মানুষদের একটু স্বস্তি দিতে বীরভূমের শান্তিনিকেতনে খোলা হয়েছে জলসত্র। বোলপুর পুরসভার ২ নং ওয়ার্ডের পক্ষ থেকে শান্তিনিকেতন পোষ্ট অফিস মোড়ে বসেছে জলসত্রর আসর। পুরসভার পক্ষ থেকে পথচলতি মানুষকে একটু স্বস্তি দিতে দেওয়া হচ্ছে গ্লুকোজ জল, সঙ্গে আঁখের গুড়, ভিজে কাঁচাছোলা। পুরসভার এহেন উদ্যোগে খুশি পথচলা মানুষজন।